সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:
সিরিয়ার হোমস প্রদেশের সামরিক বিমানঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জন্য ইসরাইলকে বিপজ্জনক প্রতিক্রিয়ার মুখে পড়তে হবে বলে হুমকি দিয়েছে সিরিয়া।
যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন ছাড়া ইসরাইলের পক্ষে সাম্প্রতিক সময়ে হামলা চালানো সম্ভব হয়নি মন্তব্য করে জাতিসংঘ মহাসচিব ও নিরাপত্তা পরিষদকে লেখা এক চিঠিতে সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ হুশিয়ারি দিয়েছে। খবর রেডিও তেহরানের।
সিরিয়ার সরকারি বার্তা সংস্থা সানার বরাত দিয়ে রেডিও তেহরান জানিয়েছে, চিঠিতে সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ ও উগ্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে অব্যাহত সমর্থন দেয়ার পাশাপাশি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবনা লঙ্ঘনের নীতি অনুসরণ করে আসছে ইসরাইল।
এরা সিরিয়ার অভ্যন্তরে আগ্রাসন চালানোর জন্য লেবাননের আকাশসীমা ব্যবহার করে দুটি এফ-১৫ যুদ্ধবিমান থেকে হোমসের টি-ফোর বিমানঘাঁটিতে হামলা চালায়।
সিরিয়ার মন্ত্রণালয় বলেছে, ইসরাইল বারবার এ ধরনের হামলা চালিয়ে তার মিত্র সন্ত্রাসীদের রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। এছাড়া সিরিয়ার সেনাদের সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ে ব্যর্থ করতে পারেনি তেল আবিব।
চিঠিতে মন্ত্রণালয় বলেছে, আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘ সনদের ভেতরে থেকে সিরিয়ার সরকার নিজের ভূখণ্ড, জনগণ ও জাতীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য সব ধরনের প্রচেষ্টা চালাবে।
সোমবার দুটি ইসরাইলি এফ-১৫ যুদ্ধবিমান লেবাননের আকাশ থেকে সিরিয়ার টি-ফোর বিমানঘাঁটিতে হামলা চালায়। বিমানগুলো সিরিয়ার আকাশে প্রবেশ করেনি।
এদিকে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, আটটির মধ্যে পাঁচটি ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করেছে সিরিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।
এর আগে সিরিয়ার সরকারি বার্তা সংস্থা ‘সানা’ বলেছিল, বিমানঘাঁটিতে হামলার জন্য মার্কিন বাহিনীকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এ হামলায় বেশ কয়েকজন হতাহত হয়েছেন। পরে সিরিয়ার সরকারি গণমাধ্যম বলেছে, ইসরাইল এ হামলা চালিয়েছে।
এদিকে সিরিয়ায় রাসায়নিক হামলার বিষয়ে আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তিনি সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
শনিবার সিরিয়ার পূর্ব ঘৌটার দুমা শহরে কথিত রাসায়নিক হামলার অভিযোগ তোলার পর দামেস্ক সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া সম্পর্কে এই প্রথম ট্রাম্প ব্যক্তিগত মন্তব্য প্রকাশ করলেন।
সোমবার হোয়াইট হাউসে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সাংবাদিকদের কাছে বলেন, “এটা ছিল একটা নৃশংস হামলা। এটা ছিল ভয়াবহ। এটা মানবতার সঙ্গে জড়িত বিষয় এবং এ ঘটনা মেনে নেয়া যায় না।”
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, “রাসায়নিক হামলার ইস্যুতে আজ দিন শেষে কোনো একটা সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে পারি।” ট্রাম্প তার ভাষায় বলেন, “এটা যদি রাশিয়া হয় কিংবা সিরিয়া হয় কিংবা ইরান হয় অথবা এসব দেশ একসঙ্গে এই ঘটনা ঘটিয়ে থাকে তাহলেও আমরা তাদের চিহ্নিত করব।”
তিনি বলেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সম্ভবত এ ঘটনার জন্য দায়ী। ট্রাম্প জোর দিয়ে বলেন, “রাসায়নিক হামলার জন্য সবাই মূল্য দিতে যাচ্ছে।”
শনিবার দুমায় রাসায়নিক হামলার অভিযোগ ওঠার পরপরই রাশিয়া ও সিরিয়া সরাসরি তা নাকচ করে দিয়েছে। দুদেশই বলেছে, দুমায় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সিরীয় বাহিনীর সাফল্য ম্লান করতে পশ্চিমারা এই ভুয়া অভিযোগ তুলেছে।
এছাড়া রাশিয়া গতকাল পরিষ্কার বলেছে, এ ইস্যুতে আমেরিকা সিরিয়ায় সামরিক আগ্রাসন চালালে ভয়াবহ পরিণতি বরণ করতে হবে।