লাল-সবুজ পোশাকে বিজয়ের আনন্দ

বিজয়ের মাস ১৬ ডিসেম্বর। বাঙালির ইতিহাসের এক গৌরবময় দিবস। আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি রক্তের বিনিময়ে। শহীদদের স্মরণে এ দিনে থাকে নানা আয়োজন। ডিসেম্বর মাস যেন বাঙালির এক ভালোবাসা আর আবেগের মাস। এ মাস এলেই রাস্তা-ঘাট সেজে ওঠে লাল-সবুজে।

বিজয় দিবস উদযাপনে সব বাঙালিই বেছে নেন লাল-সবুজ পোশাক। এ মাসে দেশীয় ফ্যাশন হাউজে লাল-সবুজের বাহারি পোশাকের দেখা মেলে। প্রতি বছরের মতো এ বছরও ফ্যাশন হাউজগুলোতে দেখা মিলেছে শাড়ি, পাঞ্জাবি, শার্ট, কুর্তি, ফতুয়া, স্কার্টসহ শিশুদের বিজয় পোশাক। বিভিন্ন ডিজাইনে লাল-সবুজের মিশ্রণ প্রতিটি পোশাকেই এনেছে ভিন্ন সৌন্দর্য।

গত এক দশক আগেও বিজয় দিবস নিয়ে এতো আনুষ্ঠানিকতা ছিলো না। এখন মানুষের সৌখিনতা বেড়েছে। সে সঙ্গে তাল রেখে পছন্দের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ফ্যাশন হাউজগুলো বেশ রুচিশীল ও উৎসব নির্ভর পোশাক তৈরি করছে। আবার অনেকেই নিজের সৃজনশীলতায় রাঙিয়ে তৈরি করে নিচ্ছেন নিজের একদম আলাদা একটি বিজয় দিবস।

লাল-সবুজ পোশাকে বিজয়ের আনন্দ

ক্রেতাদের চাহিদাও থাকে অনেক। রাজধানীর শান্তিনগর এরিয়াতে ঘুরে ঘুরে দেখা যায়, ডিসেম্বর উপলক্ষে মার্কেটগুলোতে লাল-সবুজের ছোট-বড়দের পাঞ্জাবি, থ্রি-পিস, ফতুয়া, শাড়ি, মাস্ক বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। ছোটদেরও আছে বাহারি পোশাক। উৎসবের আমেজে তাদের জন্যও অভিভাবকরা কিনছেন লাল-সবুজ পোশাক।

সরেজমিনে দেখা যায়, এবারের পোশাকের নকশাকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে নানা ভ্যালু অ্যাডেড মিডিয়ার ব্যবহারে। এর মধ্যে রয়েছে স্ক্রিন প্রিন্ট, ব্লক প্রিন্ট, হাতের কাজ ইত্যাদি। পোশাক অলংকরণে সহযোগী রং হিসেবে আছে সবুজের নানা শেড, সাদা, টিয়া ও গোল্ডেন হলুদ।

লাল-সবুজ পোশাকে বিজয়ের আনন্দ

শাড়ি, ফতুয়া, পাঞ্জাবি, কুর্তা, টি-শার্ট ইত্যাদিতে তুলে ধরা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের নানা স্লোগান এবং লাল-সবুজ রং। পোশাকে ব্যবহার করা হয়েছে মোটা সুতি ও খাদি কাপড়। করা হয়েছে টাইডাই, ব্লক, বাটিক, অ্যাপলিক, ক্যাটওয়াক ও স্ক্রিন প্রিন্ট।

বড়দের পোশাকের পাশাপাশি ছোটদের পোশাকেও একই ধরনের ডিজাইন করা হয়েছে। ডিজাইনের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে পতাকার রং। ব্যবহার করা হয়েছে একটু ভারী কাপড়। ফড়িং নতুন ডিজাইনের পোশাক এনেছে বিজয় দিবসে। শাড়ি, পাঞ্জাবি, সালোয়ার-কামিজ, ফতুয়া, টি-শার্ট, শার্ট প্রভৃতি পোশাকে কাজ করা হয়েছে এমব্রয়ডারি, অ্যাপ্লিক, ব্লক, হাতের কাজ, হ্যান্ড পেইন্ট, টাইডাই প্রভৃতি।

লাল-সবুজ পোশাকে বিজয়ের আনন্দ

কেমন বিক্রি হচ্ছে ও কবে থেকে শুরু হয়েছে বেঁচা-কেনা, এসব জানতে চাইলে জাগো নিউজকে তারা জানায়, ডিসেম্বরের শুরু থেকেই লাল-সবুজের কালেকশন নিয়ে এসেছে প্রতিটি দোকান। বছরের এ সময়টাতেই লাল-সবুজ পোশাক কেনার আগ্রহ থাকে ক্রেতাদের।

ক্রেতাদের ভিড় দেখা যায় প্রতিটি দোকানেই। কোনো কোনো দোকানে দেখা যায়, কাপল বা ফ্যামিলি প্যাকেজ। এতে স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানদের একই ডিজাইনের পোশাক মেলে।

লাল-সবুজ পোশাকে বিজয়ের আনন্দ

আবার কোনো কোনো দোকানে লাল-সবুজ ছাড়াও অন্যান্য রঙের পোশাক কিনতেও শেষ সময়ে ভিড় করছেন ক্রেতারা। দোকানিরা জানান, বর্তমানে বিভিন্ন দিবসের সঙ্গে মিলিয়ে পোশাক কেনার চাহিদা বেড়েছে সবার মধ্যেই।

পোশাকের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রসাধনীর দোকানগুলোতেও আছে উপচে পড়া ভিড়। দেখা যায়, নারীরা লাল-সবুজ চুড়ি, মালা, কানের দুল, ক্লিপ, ফুল ইত্যাদি কিনতে ব্যস্ত। বিজয় দিবস উদযাপনে সবাই চায় লাল-সবুজে সাজতে।

শুধু মার্কেট থেকেই নয়, বরং অনলাইনেও চলছে বিক্রির ধুম। বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে বিভিন্ন ফেসবুক ছাড় দেওয়া হচ্ছে অনেক। ফলে আকৃষ্ট হচ্ছেন ক্রেতারাও। জামা, জুতা, ব্যাগ, শিশুদের পোশাক, শাড়ি, পাঞ্জাবি, প্রসাধনী থেকে শুরু করে বিজয় দিবসের কেকও অনলাইনের বিভিন্ন পেজে বিক্রি হচ্ছে দেদারছে।

 

সূত্রঃ জাগো নিউজ