ঘরোয়া টুর্নামেন্ট খেলেও কোটিপতি হতে পারবেন ক্রিকেটাররা!

স্পোর্টস ডেস্ক:
কিছুদিন আগে ভারতীয় ক্রিকেটারদের টেস্ট ফরম্যাটে খেলায় উৎসাহিত করতে বড় অঙ্কের বোনাস ও ম্যাচ-ফি বাড়িয়েছিল ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই। ওই সময়ই দেশটির কিংবদন্তি সুনীল গাভাসকার ঘরোয়া ক্রিকেটেও এমন উদ্যোগ নেওয়ার দাবি তুলেছিলেন। অবশেষে তার সেই দাবি সফল হতে যাচ্ছে। ভারতের ঘরোয়া টুর্নামেন্ট খেলা ক্রিকেটারদেরও কোটিপতি হওয়ার সুযোগ দিতে যাচ্ছে বিসিসিআই!

এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ক্রীড়াভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজ। তারা বলছে, ঘরোয়া ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করছে বিসিসিআই, যা বাস্তবায়নে অজিত আগারকারের নেতৃত্বাধীন নির্বাচক কমিটি কাজও শুরু করে দিয়েছে। তারা প্রস্তাব দিয়েছে তাৎক্ষণিকভাবে ক্রিকেটারদের ম্যাচ ফি বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়ার। যদিও এখনও বিষয়টি আলোচনায় রয়েছে, কমিটির সুপারিশের পরই ম্যাচ ফি বাড়ানো নিয়ে পদক্ষেপ নেবে ক্রিকেট বোর্ড। নির্বাচক প্যানেলের লক্ষ্য– আইপিএলে সুযোগ না পাওয়া ক্রিকেটাররা যেন বঞ্চিত না হন।

তবে ঠিক কী পরিমাণে ক্রিকেটারদের ম্যাচ ফি বাড়বে সেটি এখনও নিশ্চিত হয়নি ভারতীয় ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থাটি। ক্রিকবাজের মতে, বর্তমানে ক্রিকেটাররা ম্যাচপ্রতি যে অর্থ পান, সেটি দ্বিগুণ করে দেওয়া হতে পারে। এমনকি এর মাধ্যমে ঘরোয়া ক্রিকেটাররা ৭৫ লাখ থেকে এক কোটি রুপি পর্যন্তও বছরে আয় করার সুযোগ পেতে পারেন। যদি কোনো ক্রিকেটার রঞ্জি ট্রফিতে এক মৌসুমে কমপক্ষে ১০ ম্যাচ খেলেন, তারই ওই সুযোগ আসতে পারে বলে জানিয়েছে ক্রিকবাজ।

বর্তমানে রঞ্জি ট্রফি খেলা ক্রিকেটাররা কেমন ম্যাচ ফি পান, সেই চিত্রটাও দেখে নেওয়া যাক। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের মতে, চল্লিশের বেশি ম্যাচ খেলা ক্রিকেটাররা ম্যাচপ্রতি ৬০ হাজার রুপি করে পান। যাদের ম্যাচ সংখ্যা ২১ থেকে ৪০-এর মধ্যে, তারা পান পঞ্চাশ হাজার রুপি করে। ৪০ হাজার রুপি করে পান তার চেয়ে কম (কমপক্ষে ২০ ম্যাচ) খেলা ক্রিকেটাররা। এটা অবশ্য প্রথম একাদশে থাকা ক্রিকেটারদের প্রাপ্ত অর্থের হিসাব। রিজার্ভ বেঞ্চে থাকলে এই তিন বিভাগে পাওয়া যায় যথাক্রমে ৩০, ২৫ এবং ২০ হাজার টাকা।

তার মানে কোনো দল ফাইনাল খেললে সিনিয়র ক্রিকেটাররা মোটামুটি ২৫ লাখ রুপি করে পাবেন। দলের অন্যদের আয়ও ১৭ লাখ থেকে ২২ লাখের মধ্যে ঘোরাফেরা করবে। এছাড়া সৈয়দ মুস্তাক আলি এবং বিজয় হাজারের মতো প্রতিযোগিতা থেকেও ম্যাচ ফি বাবদ অর্থ পান ক্রিকেটাররা। ফলে ফি দ্বিগুণ হলে কিছু ক্রিকেটারের আয় ৭৫ লাখ থেকে ১ কোটি রুপির গণ্ডিতে পৌঁছে যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

এই পদক্ষেপ মূলত আইপিএলে সুযোগ না পাওয়া ক্রিকেটারদের কথা মাথায় রেখে বিবেচনা করছে বিসিসিআই, বিশেষত রঞ্জির খেলোয়াড়দের জন্য। এর আগে ইনজুরির কথা মাথায় রেখে লাল বলের (টেস্ট) ক্রিকেট খেলতে অনীহা দেখিয়েছিলেন শ্রেয়াস আইয়ার ও ইষাণ কিষানরা। তাদের মূল লক্ষ্য ছিল আইপিএলের জন্য ফিট থাকা। পরে টেস্ট খেলুড়ে ক্রিকেটারদের উৎসাহ দিতে বিসিসিআই সচিব জয় শাহ শুধু টেস্ট খেলা জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের বাড়তি বেতনের ঘোষণা দেন। তাদের জন্য চালু করেন ‘টেস্ট ক্রিকেট প্রণোদনা স্কিম’। পরে সুনীল গাভাসকার সেটি দেখে রঞ্জিতে খেলা ক্রিকেটারদেরও বেতন বাড়িয়ে দেওয়ার আহবান জানান।