মান্দায় পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র পরিদর্শিকা অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে গড়িমসি

নওগাঁ প্রতিনিধি:
জেলার মান্দা উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন ‘স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র’ পরিদর্শিকা নাহিদ সুলতানার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তদন্তের প্রতিবেদন জেলা থেকে দুই সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিলো। তার পরেও কোন তদন্ত হয়নি। এজন্য বিলম্ব হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে আবারও নতুন করে তদন্ত কমিটি গঠন করে নিজ উদ্যোগে তদন্ত শুরু করা হবে। এমনটি বলছিলেন, মান্দা উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আ.ফ.ম আছফানুল আরেফিন।

এর আগে গত ১৪মার্চ সন্তানহারা এক নবজাতকের বাবা সাজ্জাদ হোসেন বাদশা পরিবার পরিকল্পনা উপ-পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে পরিদর্শিকা নাহিদ সুলতানাকে কারণ দর্শানোর জন্য বলা হয়। এবং জেলা থেকে দুই সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তের প্রতিবেদন গত ২৩ মার্চের মধ্যে জমা দিতে বলা হলেও তা দেয়া হয়নি।

জানা যায়, ১৯৯৫ সালে পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা হিসেবে যোগদান করেন নাহিদ সুলতানা। এরপর থেকে স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে আধিপত্য বিস্তার করতে থাকেন। কর্মস্থলে যোগদানের পর থেকে বেশ কয়েকবার তার ট্রান্সফার অর্ডার আসে। কিন্ত রাজনৈতিক আর্শিবাদপুষ্ঠ ও ক্ষমতার বলে ট্রান্সফার অর্ডারটি বাতিল করেন নাহিদ সুলতানা। এছাড়া স্বাস্থ্য কেন্দ্রের আশপাশের কিছু প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় এবং তাদের সহযোগীতায় বিক্ষোভ মিছিল করিয়ে নিয়ে ট্রান্সফার অর্ডারটি বাতিল করে নেন তিনি।

গর্ভবতীর চিকিৎসাসেবা বিনামূল্যে দেওয়ার কথা থাকলেও গর্ভবতী প্রসবের পর টাকা দাবী করেন এবং জোর পূর্বক সেটা আদায় করে থাকেন। এমনকি প্রসবের পর বাচ্চা মারা গেলেও কোন ছাড় নেই তার কাছ থেকে। গর্ভবতীদের কাছ থেকে সর্বনি¤œ ৫০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা আদায় করেন। এমনকি এর বেশিও টাকা নেওয়ার অভিযোগ আছে। তিনি মাসে প্রায় ১ থেকে দেড় লাখ টাকা গর্ভবতীদের কাছ থেকে আদায় করে থাকেন। দীর্ঘদিন থেকে ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে থাকায় এবং আশপাশে সরকারি কোন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স না থাকায় সেবা নিতে আসা এলাকাবাসী জিম্মি হয়ে পড়েছে।

নিজের সুনাম রক্ষার্থে গর্ভবতীদের মাত্রাতিরিক্ত নরমাল ডেলিভারী করানোর চেষ্টা করেন। গর্ভবতীদের নরমাল ডেলিভারী করানো নিয়ে অনেক সময়ক্ষেপন করেন। এতে অনেক নবজাতক মায়ের গর্ভে মারা যায়। আবার অনেক গর্ভবতীদের অসময়ে রেফার্ড করা হলে রাস্তার মাঝেই নবজাতক মারা যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এছাড়া আয়া আনোয়ারা খাতুনকে দিয়ে ডেলিভারীর কাজ করিয়ে নেওয়া হয়। পেটের ব্যাথায় গর্ভবতী চিৎকার করলে আয়া অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে চড় থাপ্পড় দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

অভিযোগকারী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, অভিযোগের বিষয়ে এখন গড়িমসি শুরু হয়েছে। আর অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন ভাবে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে।

 

স/আ