বৃহস্পতিবার , ২৭ জুন ২০১৯ | ১২ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরীর খবর
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

বরগুনার দুই হত্যাকারীর যত অপকর্ম

Paris
জুন ২৭, ২০১৯ ৭:০৩ অপরাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

বরগুনার রিফাতের হত্যাকারীরা কি হঠাৎ করেই দুর্ধষ হয়ে ওঠেছে, নাকি পূর্বেও অপরাধের সঙ্গে সখ্য ছিলো তাদের। অনুসন্ধানে ওঠে এসেছে তাদের অপকর্মের নানা খতিয়ান। ছিনতাই, মাদক, হামলাসহ নানা অপকর্মের হোতা এই দুই খুনি।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্র বলছে, হত্যাকারী দুজনের একজন রিফাত ফরাজী, আরেকজন নয়ন বন্ড। দুজনই অনেক আগে থেকেই অপরাধ জগতের পরিচিত মুখ। তাদের কারণে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ।

এলাকাবাসী জানান, খুনি নয়ন বন্ডের (২৫) বাসা বরগুনা সরকারি কলেজের দক্ষিণ-পশ্চিমে বরগুনা পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডে। নয়নের বাবা মৃত মো. ছিদ্দিকুর রহমান। দুই ভাইয়ের মধ্যে নয়ন ছোট। নয়নের বড় ভাই মিরাজ দীর্ঘদিন ধরে সিঙ্গাপুর প্রবাসী হওয়ায় মাকে নিয়েই ওই বাসায় বসবাস করে নয়ন। ২০১৭ সালের ৫ মার্চ রাত ১১টার দিকে নয়ন বন্ডের বাসায় অভিযান চালায় বরগুনা জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। এ সময় বিপুল পরিমাণ মাদক, দুটি দেশীয় অস্ত্র ও এক সহযোগীসহ নয়ন বন্ডকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এসব মাদকের মধ্যে ছিল ৩০০ পিস ইয়াবা, ১২ বোতল ফেনসিডিল ও ১০০ গ্রাম হেরোইন।

এ ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে বরগুনা সদর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ও অস্ত্র আইনে দুটি মামলা করে নয়ন বন্ড ও তার সহযোগী ইমামের বিরুদ্ধে। পরে তাদের জেলহাজতে পাঠায় পুলিশ। দীর্ঘদিন জেলে থাকার পর সম্প্রতি জামিনে বেরিয়ে আসেন নয়ন বন্ড। জেল থেকেই বেরিয়ে মূলত এ হত্যাকাণ্ড ঘটায় সে।

অপর খুনি রিফাত ফরাজী মাদক ব্যবসা, মাদক সেবন ও ছিনতাইসহ নানা অপকর্মে যুক্ত ছিলেন। এ কারণে স্থানীয়দের কাছে আতঙ্ক সে। রিফাতের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন, এমন মানুষের সংখ্যা কম নয়। প্রতিবেশী ও স্থানীয়দের ওপর হামলা, মারধর খুনি রিফাতের নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। এসব অপকর্মে কয়েকবার গ্রেপ্তার হলেও অজ্ঞাত এক কারণে খুব স্বল্প সময়েই মুক্তি পেয়ে সে। ২০১৭ সালের ১৫ জুলাই সন্ধ্যায় তরিকুল ইসলাম (২১) নামে এক প্রতিবেশীকে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে রিফাত ফরাজী। একই বছর রিফাত বরগুনার হোমিও চিকিৎসক ডা. আলাউদ্দিন আহমেদের ডিকেপি রোডের বাসার ছাত্র মেসে গিয়ে ধারালো অস্ত্রের মুখে সব ছাত্রদের জিম্মি করে ১৪টি মোবাইল ছিনতাই করে পালিয়ে যান। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করা হলে পুলিশ রিফাতের বাবা দুলাল ফরাজীকে আটক করে মোবাইলগুলো উদ্ধার করেন।

এদিকে রিফাত শরীফকে (২৫) কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় ১২ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে বরগুনা সদর থানায় এই হত্যা মামলা দায়ের করেন তিনি।

মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে খুনের মূল হোতা হিসেবে অভিযুক্ত সাব্বির হোসেন নয়নকে যিনি এলাকায় ‘নয়ন বন্ড’ নামেও পরিচিত। দুই নম্বর আসামি রিফাত ফরাজি, তিন নম্বর আসামি রিশান ফরাজি, চার নম্বর আসামি চন্দন। এর মধ্যে চন্দনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।

বরগুনার পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।

হত্যাকাণ্ডের শিকার রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বলেন, নয়ন প্রতিনিয়ত আমার পুত্রবধূকে উত্ত্যক্ত করত এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপত্তিকর পোস্ট দিত। এর প্রতিবাদ করায় আমার ছেলেকে নয়ন তার দলবল নিয়ে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে।

তিনি বলেন, আমার একমাত্র ছেলেকে যারা দিনে-দুপুরে কুপিয়ে হত্যা করেছে, তাদের বিচার চাই।

বুধবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে শত শত লোকের উপস্থিতিতে স্ত্রীর সামনে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। তার স্ত্রী আয়শা আক্তার মিন্নি হামলাকারীদের সঙ্গে লড়াই করেও তাদের দমাতে পারেননি। একাধারে রিফাতকে কুপিয়ে বীরদর্পে অস্ত্র উঁচিয়ে এলাকা ত্যাগ করে হামলাকারীরা। তারা চেহারা লুকানোরও কোনও চেষ্টা করেনি। গুরুতর আহত রিফাতকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

সর্বশেষ - জাতীয়