‘ট্রাম্প এমন জঘন্য পরিস্থিতি তৈরি করবেন কল্পনাও করিনি’

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে ক্যাপিটল ভবনে ট্রাম্প সমর্থকদের নজিরবিহীন হামলার পর এ পর্যন্ত এক পুলিশ কর্মকর্তা ও এক নারীসহ ৫ জন নিহত হয়েছেন। রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে কারফিউ জারি করা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে ৫২ জনকে। বর্তমানে ডিসিতে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ফেসবুক ও টুইটার ডোনাল্ড ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গণজাগরণ মঞ্চের প্রতিষ্ঠাতা সংগঠক সৈয়দ জাকির আহমেদ রনি বলেন, প্রগতিশীলদের সিদ্ধান্তহীনতা এবং সময়ের সঙ্গে তাল মিলাতে পারার অযোগ্যতার কারণে রক্ষণশীল ডানপন্থীরা বাধাহীন নীরব বিপ্লবের মাধ্যমে সমগ্র পৃথিবীতেই রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছে। ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য চরিত্রগতভাবে যে উগ্রপন্থা অবলম্বন করছে তার সবচাইতে জঘন্য উদাহরণ আমরা দেখলাম ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে উগ্র জাতীয়তাবাদীদের মার্কিন আইনসভায় হামলার মাধ্যমে।

ট্রাম্পের একজন কট্টর সমর্থক লিটু আনাম বলেন, একজন রিপাবলিকান সমর্থক হয়েও আমি এ ঘটনার নিন্দা জানাই। এতে দীর্ঘদিন ধরে লালন করে আসা আমেরিকান গণতন্ত্রের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। আর ট্রাম্পের ক্রমাগত মিথ্যাচার এবং উসকানিমূলক কথাই এ ঘটনার কারণ বলে আমি মনে করি।

সরকারি কর্মকর্তা ও লেখক মনজুর কাদের বলেন, ট্রাম্প ও তার সমর্থকদের ধারাবাহিক আচরণে তাজ্জব ও হতবাক হয়ে গেছি। রিপাবলিকান দলের চিরস্থায়ী ক্ষতি হয়ে গেল। একজন নাগরিক হিসেবে আমার গ্লানিবোধ হচ্ছে। ট্রাম্প অভিশংসন ও ফৌজদারি বিচার হওয়ার মতো অপরাধ করেছেন।

আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল হক বলেন, কাছ থেকে দেখা জঘন্য একজন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্প এমন জঘন্য পরিস্থিতি তৈরি করবেন কল্পনাও করিনি। আমেরিকার ইতিহাসে একজন লোভী, নির্লজ্জ, মিথ্যাবাদী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

তিনি বলেন, তার মতো মানুষ আমেরিকার মতো একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হয়েছেন- ভাবতেই অবাক লাগে। নির্বাচনে হেরে গেছেন; অথচ তিনি ক্ষমতা ছাড়তে চান না। যে কোনো কায়দায় ক্ষমতায় থাকার অপচেষ্টা করছেন। গত চার বছরে তার বিভিন্ন ধরনের নির্লজ্জ মিথ্যাচার এবং আজকে ক্যাপিটল ভবনের সামনের ঘটনায় বলা যায় ট্রাম্প একজন চরম লোভী মানুষ।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আসলাম আহমাদ খান বলেন, রাষ্ট্রপতি একটা দেশের অভিভাবক। তার কাজ হলো অনুরাগ বা বিরাগের ঊর্ধ্বে ওঠে শ্রেণি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে দেশের সব জনগণের অধিকার নিশ্চিত করা। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শুরু থেকেই অভিভাবক সুলভ আচরণের পরিবর্তে বিভেদ তৈরি করে দেশকে সংঘাতের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন। মনগড়া অভিযোগের ভিত্তিতে জনরায়কে পাল্টে দেয়ার চেষ্টা করেছেন। তার আচরণ গণতন্ত্রের জন্য বিপজ্জনক। দেশের সংবিধান ও গণতন্ত্রের স্বার্থে তাকে বিচারের মুখোমুখি করা প্রয়োজন। তা নাহলে ভবিষ্যতে আমেরিকার গণতন্ত্র হুমকির মুখে পড়বে।

 

সুত্রঃ যুগান্তর