চাঁপাইনবাবগঞ্জে হিন্দু সনাতন ধর্মাবলম্বীদের আগমনী বার্তা।। করোনা’ কারনে বাড়তি সতর্কতা

নিজস্ব প্রতিবেদক,চাঁপাইনবাবগঞ্জ:

হিন্দু সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। আর কদিন বাদেই দেবী দুর্গা আসছেন। দেবীর আগমনকে ঘিরে দেবীর প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর উপজেলার শিল্পীরা। দিন রাত পরিশ্রম করে তাদের নিপুন হাতের ছোঁয়ায় তৈরি করছেন একেকটি অসাধারণ সুন্দর প্রতিমা।

উপজেলার বারোঘরিয়া ইউনিয়নে পালপাড়া ২২ পুতুল এলাকার প্রতিমা তৈরির শিল্পী রঘুনাথ পাল বলেন, এবার করোনা ভাইরাস ও সময় কম থাকার কারনে বেশি প্রতিমা সেট তৈরির অডার নেইনি। গত বছর ১০টি প্রতিমা তৈরি করে ছিলাম। এ বছর শুধু ৫টি প্রতিমা তৈরির অডার নিয়েছি। এগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যর সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুরহাটের প্রতিমা ও আশেপাশের এলাকার আরও ৪ টি প্রতিমা সেটের অডার পেয়েছি। যার একেকটি মজুরি মূল্য ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা। তিনি আরও বলেন, আমি ৪০ বছর থেকে প্রতিমা তৈরির কাজ করি। আমার সাথে আমার ছেলে সোহাগ পাল সহযোগিতা করে। পরবর্তী প্রজন্মে আমার ছেলেই আমার হাল ধরবে। প্রতিমা শিল্পীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, একটি প্রতিমা তৈরি করতে শিল্পীদের সর্বনিন্ম ৯ থেকে ১২ হাজার টাকা খরচ হয়। প্রতিমা তৈরির জন্য তাদের ২ থেকে ৩ ভ্যান মাটি লাগে। খড়ের আউর লাগে ৪ থেকে ৫ পৌন। এছাড়াও কাঠ, বাঁশ, দড়ি, পেরেক, সুতা ও ধানের গুড়াসহ বিভিন্ন জিনিসের প্রয়োজন হয়। আর বাকি জিনিসগুলোর জন্য খরচ হয় তাদের ২-৩ হাজার টাকার মত।

এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখা যায় শিল্পীরা কেউ কেউ বাড়িতে আবার কেউ পূজা মন্ডপেই শুরু করেছে প্রতিমা তৈরির কাজ। জানা গেছে, শারদীয় দুর্গাপূজা আগামী ২২ অক্টোবর ষষ্ঠী তিথিতে শুরু হবে এ পূজা এবং ২৬ অক্টোবর দশমী তিথিতে প্রতিমা বির্সজনের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে। তাই শিল্পীরা দেবী দুর্গাসহ প্রতিমাগুলোকে মনোমুগ্ধকর অনিন্দ্য সুন্দর রূপ দিতে ও নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তুলতে সর্বোচ্চ মনোযোগ দিয়ে কাজ করছেন। সদর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বাবু স্বপন কুমার ঘোষ বলেন, এবার সদর উপজেলায় মোট ৫৭ টি পূজা মন্ডপে দেবী দূর্গার পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া এবছর দু’টি পূজা মন্ডপ কমেছে, আর উপজেলা এলাকায় একটি পূজা মন্ডপ বেড়েছে।

তিনি আরো বলেন, এবার পূজোয় অবশ্যই সকল ভক্তদের মুখে মাস্ক থাকতে হবে। সামজিক দূরত্ব বজায় রেখে প্রতিমা দর্শন করতে হবে। এছাড়াও সকল সরকারি নিয়ম মেনে পূজা অনুষ্ঠিত করতে হবে। তবে এখন পর্যন্ত সদর উপজেলা প্রশাসনের সাথে পূজা উদযাপন পরিষদের কোন মিটিং হয়নি বলে জানান তিনি। জেলার অন্যতম পুরোহিত সমির চক্রবতি বলেন, এ বছর করোনার কারনে আনন্দ উল্লাস ছাড়ায়, স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে উদযাপন হবে, হিন্দু সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা।

স/রি