খালেদা জিয়া ব্রিটিশ ভিসার আবেদন করলে গ্রহণ করা হবে

ব্রিটিশ হাই কমিশনার রবার্ট ডিকসন বলেছেন, অক্সফোর্ডের টিকার কোনো পরীক্ষা বাংলাদেশে হচ্ছে না। তবে কোভিড-১৯ লড়াইয়ে টিকার সুষম বন্টন গুরুত্বপূর্ণ। ফলে টিকা চূড়ান্ত বিচারে ব্যবহারের যোগ্য হলে বাংলাদেশে পাওয়ার বিষয় বিবেচ্য। যদিও বাংলাদেশের বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির কোভিড-১৯ টিকা উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে।

তিনি বুধবার কূটনৈতিক রিপোর্টারদের সংগঠন ডিকাবের আয়োজনে প্রথম ভার্চুয়াল ডিকাব টকে এই অভিমত ব্যক্ত করেন। ডিকাব সভাপতি আঙ্গুর নাহার মন্টি অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। এ সময় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান পরিচালনায় সহায়তা করেন ব্রিটিশ হাই কমিশনের মুখপাত্র মেহের নিগার জেরিন।

এদিকে, সরকার অনুমতি দিলে খালেদা জিয়াকে লন্ডনে চিকিৎসা নিতে যুক্তরাজ্য সুযোগ দেবে কিনা জানতে চাইলে ব্রিটিশ হাই কমিশনার বলেন, ‘ব্যাক্তিগত বিষয়ে আমরা কোনো মন্তব্য করি না। আগেও তিনি ব্রিটিশ ভিসা নিয়েছেন। ভবিষ্যওতে তিনি ভিসার আবেদন করতে পারেন। তার পরিবারের সদস্যরা সেখানে থাকেন। তাই তিনি ভিসা চাইতে পারেন’।

জাতিসংঘের ৭৫তম সাধারণ অধিবেশনের ভাষণে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, অক্সফোর্ডের টিকা এখন পরীক্ষার তৃতীয় পর্যায়ে রয়েছে এবং দ্রুত বিতরণের জন্য অ্যাস্ট্রাজেনেকা ইতোমধ্যে এ টিকার লাখ লাখ ডোজ প্রস্তুত করতে শুরু করেছে।

স্বল্প ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে ১০০ কোটি ডোজ সরবরাহের জন্য তারা ভারতের একটি সংস্থার সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছেছে। সব দেশে টিকার সমান প্রাপ্যতার দিকে গুরুত্ব দিচ্ছে যুক্তরাজ্য।

ব্রিটিশ হাই কমিশনার বলেন, যুক্তরাজ্য জলবায়ু সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা এবং বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সম্পর্ক আরও গভীর করার পাশাপাশি রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সহায়তা করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পাশে রয়েছে।

মিয়ানমারের রাখাইনের পরিস্থিতি খুব বেশি উৎসাহজনক নয় উল্লেখ করে ডিকসন বলেন, তারা রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের জবাবদিহি নিশ্চিত করার জন্য বিদ্যমান ব্যবস্থাকে সক্রিয়ভাবে সমর্থন করেছেন।
তিনি বলেন, মিয়ানমার আন্তর্জাতিক বিচার আদালত আইসিজে এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) চাপের মুখে থাকবে।

এটি বাংলাদেশের সঙ্গে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারিত্ব জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে খুব নিবিড়ভাবে কাজ করছি’। নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার ক্ষেত্রে রোহিঙ্গাদের আস্থা বাড়াতে সেখানে তাদের নাগরিকত্বের বিষয়টিও তুলে ধরেন এ কূটনীতিক।

তিনি বলেন, কফি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের মধ্যে রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান নিহিত। রোহিঙ্গাদের সম্মানজনকভাবে নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার মাধ্যমে সংকট সমাধান হতে পারে। এ জন্যে মিয়ানমারের ওপর চাপ অব্যাহত রেখেছে যুক্তরাজ্য। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ এ ব্যাপারে ভূমিকা রাখতে পারে।

তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যে প্রায় ছয় লাখ বাংলাদেশি সম্প্রদায় রয়েছেন। দু’ দেশের মধ্যে বাণিজ্য জোরদার রয়েছে। বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিনিয়োগকারী যুক্তরাজ্য। আগামী দিনে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদারে ব্রিটিশ হাই কমিশন আশাবাদী।

 

সূত্রঃ যুগান্তর