বৃহস্পতিবার , ২৮ জুন ২০১৮ | ১৩ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরীর খবর
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

গাজীপুর সিটি নির্বাচন

Paris
জুন ২৮, ২০১৮ ১১:২৪ পূর্বাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

কয়েকটি কেন্দ্রের কথা বাদ দিলে গাজীপুর সিটি নির্বাচন দৃশ্যত শান্তিপূর্ণ হয়েছে। এই শান্তিপূর্ণ অবস্থার পেছনে যে বড় ধরনের অশান্তির আলামত ছিল, সেসব তথ্যও ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসছে। নির্বাচনের সার্বিক পরিবেশ হয়তো উত্তপ্ত ছিল না। একটি নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ বলতে যা বোঝায়, গাজীপুরে তার অনেক কিছুরই ঘাটতি ছিল। কোনো নির্বাচনে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ভয়ে পালিয়ে থাকা কিংবা কেন্দ্রে প্রার্থীর এজেন্টকে অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে না দেওয়া শুধু সুষ্ঠু নির্বাচনের অন্তরায় নয়, নির্বাচনী পদ্ধতিকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে। প্রার্থীদের নির্বাচনী এজেন্ট রাখা নির্বাচনী বিধির পূর্বশর্ত। এটি রাখা হয় প্রতিদ্বন্দ্বী কোনো প্রার্থীর হয়ে যাতে কেউ ভুয়া ভোট দিতে না পারেন।

কিন্তু গাজীপুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ কেন্দ্রে মেয়র পদে নৌকা ছাড়া কোনো প্রার্থীর এজেন্ট ছিলেন না। বিভিন্ন গণমাধ্যম ও পর্যবেক্ষকদের ভাষ্যমতে, বেশির ভাগ কেন্দ্রে বিএনপি প্রার্থীর এজেন্টই ছিলেন না। অনেক কেন্দ্রের এজেন্টদের আগের রাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ধরে নিয়ে গিয়ে সিটি করপোরেশন এলাকার বাইরে ছেড়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছেন। আবার অনেক কেন্দ্রে এজেন্ট গেলেও তাঁদের বের করে দেওয়া হয়েছে। এ অবস্থায় যদি কেউ দাবি করেন নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও সুন্দর হয়েছে, সেটি হাস্যকর বলেই মনে হয়।

সত্যিকারভাবে উৎসবমুখর পরিবেশে একটি নির্বাচন করতে যেসব পূর্বশর্ত পূরণ করা প্রয়োজন, তার অনেক কিছুরই ঘাটতি ছিল গাজীপুরে। নির্বাচন-প্রক্রিয়ার শুরু থেকে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা মাঠ সমতল করা তথা সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। কমিশনের পাঁচ পদাধিকারী গাজীপুরে মতবিনিময় করতে গেলে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের পক্ষপাতমূলক আচরণের ব্যাপারে অবহিত করেছিলেন। কিন্তু নির্বাচন কমিশন দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি বলেই নির্বাচন নিয়ে এত অঘটন ঘটেছে।

 আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে সব প্রার্থী নিজের অনুকূলে সবকিছু নিতে চাইবেন, সেটাই হয়তো স্বাভাবিক। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হলো কারও পক্ষে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করতে গিয়ে যাতে অন্যদের জন্য প্রতিকূলতা সৃষ্টি না হয় তা নিশ্চিত করা। খুলনা ও গাজীপুরে সেই নিশ্চয়তা দিতে তারা ব্যর্থ হয়েছে। এখন ইসির উচিত হবে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে উত্থাপিত অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা এবং প্রতিকারের ব্যবস্থা নেওয়া। মনে রাখতে হবে, নির্বাচনের সময় জনপ্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ইসির নিয়ন্ত্রণাধীন থাকেন। অতএব, তাঁদের অনিয়ম–অনাচারের দায় কোনোভাবেই ইসি এড়াতে পারে না।

গাজীপুর সিটি নির্বাচনের আগে যেমন বিতর্ক ছিল, নির্বাচনের পরও তার অবসান হয়নি। আওয়ামী লীগ নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু বলে দাবি করলেও বিএনপি অনিয়ম-কারচুপির অভিযোগ এনে নির্বাচন বাতিলের দাবি জানিয়েছে। সামনে আরও তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচন। এরপর বছরের শেষে জাতীয় সংসদের নির্বাচন হওয়ার কথা। এ অবস্থায় কে এম নুরুল হুদার কমিশন নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে, কোনো সমস্যা নেই বলে আত্মপ্রসাদ লাভের চেষ্টা করলে তার পরিণাম ভয়াবহ হতে পারে। আশা করি, দেরিতে হলেও কমিশনের বোধোদয় হবে।

সর্বশেষ - মতামত