রাবিতে উদ্ধার হওয়া মর্টারশেলের বিস্ফোরণ ঘটালো সেনাবাহিনী (ভিডিওসহ)

নিজস্ব প্রতিবেদক:

স্বাধীনতার যুদ্ধের অর্ধশত বছর পেরিয়ে গেছে। অথচ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) পুকুর খনন করতে গিয়ে সেই যুদ্ধের সময়ের পাওয়া মর্টাল শেলটি সক্রিয়ই ছিল। পরে বুধবার (২৮ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উদ্ধার হওয়া মর্টার শেলটি নিষ্ক্রিয় করেছে বগুড়া থেকে আসা সেনাবাহিনীর একটি বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট। বিশ্ববিদ্যালয়ের বদ্ধভূমি সংলগ্ন ফাঁকা জায়গায় এই বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।

বিস্ফোরণে বিষয়টি নিশ্চিত করে মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান বলেন, যেহেতু মর্টারশেল মিলিটারি অস্ত্র। এটি নিষ্ক্রিয়করণে আমাদের সক্ষমতা না থাকায় আমরা সেনাবাহিনীকে খবর দিই। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের উপস্থিতিতে সেনাবাহিনীর একটি টিম উদ্ধার হওয়ার মর্টারশেলটি বিস্ফোরণ ঘটায়।

মর্টারশেলটি পুরোনো উল্লেখ বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, উদ্ধার হওয়া মর্টারশেলটি বেশ পুরোনো। শেলটি যেখান থেকে উদ্ধার হয়েছে পাশেই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ক্যাম্প ছিল। ধারণা করা হচ্ছে এটি মুক্তিযুদ্ধের সময়ের মর্টারশেল। যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এটি ব্যবহারের জন্য এখানে রেখেছিলো।

এর আগে মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা হল সংলগ্ন একটি পুকুরে মাছের খাবার দেওয়ার সময় মর্টার শেলটি লক্ষ্য করেন মেহেরচণ্ডী এলাকার মাছচাষি শরীফ (এর আগে পুকুরটির খনন কাজ করা হয়েছে)। পরে পুলিশ ও র‌্যাব ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। কিন্তু মর্টারশেল নিষ্ক্রিয়করণে সক্ষমতা না থাকায় র‌্যাব ফিরে যায়। পরবর্তীতে বুধবার বগুড়া থেকে সেনাবাহিনীর বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট এসে এটির বিস্ফোরণ ঘটায়।

উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় রাবির শহীদ শামসুজ্জোহা হলটি পাকিস্তানি হায়েনারা ক্যাম্প বানিয়েছিলো। সেখানে রাজশাহী অঞ্চলের লোকজনকে ধরে নিয়ে নিয়ে এসে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করতো। পরে এসব লাশ জোহা হলের অদূরে বিশাল এক গর্ত করে সেখানেই পুতে রাখতো। বর্তমানে এটি রাবির বধ্যভূমি হিসেবে পরিচিত। যেহেতু জোহা হল হানাদার বাহিনীরা টর্চারশেল হিসেবে ব্যবহার করতো তাই এই হলের পাশের পুকুরে পাওয়া মর্টারশেলটি পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীরই হতে পারে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এএইচ/এস