রাজশাহীতে অটোরিক্সা চালক হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন,গ্রেফতার ২

নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহীতে কাশিয়াডাঙ্গা থানা এলাকায় ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা চালক হত্যার মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে কাশিয়াডাঙ্গা থানা পুলিশ। বুধবার (২৮ এপ্রিল)রাত দেড়টায় এ ঘটনার সাথে জড়িত ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
ঘটনার সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ফ্রেবুয়ারি রাজশাহী মহানগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানার বড় পুকুরিয়া এলাকায় পরিত্যক্ত অবস্থায় ব্যাটারিবিহীন একটি অটোরিক্সা পাওয়া যায়। পরে জানা যায় উক্ত অটোরিক্সার মালিক গুড়িপাড়া গ্রামের মোসা: খদিজা বেগম এবং চালক কাশিয়াডাঙ্গা থানার বসরী গ্রামের মো. চাঁন মিয়ার ছেলে শমসের। 
 
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি মো. চাঁন মিয়া থানায় অভিযোগ করেন যে, ২৪ ফ্রেবুয়ারি ২০২১ রাত ৯.০০ টায় মো. সাগর (২৫), মো. সাগর (২২), মো. সোহেল (২৩), আব্দুর রাজ্জাক (৪২) মিলে তার ছেলের অটোরিক্সা ভাড়া করে গেলেও আর ফিরে আসেনি। উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে কাশিয়াডাঙ্গা থানায় একটি অপহরণ মামলা রুজু হয়। 
এসআই মো. সিরাজুল ইসলাম ও তার টিম অভিযান পরিচালনা করে উক্ত মামলার আসামী মো.সাগর (২৫), মো.সাগর (২২), মো. আব্দুর রাজ্জাক (৪২)দের গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণসহ রিমান্ডের আবেদন করে। আদালত ১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করলে আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদের নিকট হতে প্রাপ্ত তথ্যাদি তদন্তকারী অফিসার যাচাই-বাছাই করেন ও আসামীদের দেওয়া তথ্যাদির সত্যতা যাচাইয়ে শহরের বিভিন্ন মোড়ের ভিডিও ফুটেজ পরিদর্শন করেন। সেই সাথে তদন্তকারী কর্মকর্তা ভিকটিম উদ্ধার ও চুরি হওয়া অটোরিক্সার ব্যাটারী উদ্ধারেও চেষ্টা করেন।
 
গত ১ মার্চ প্রাপ্ত গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী থানার কাঁকনহাট রোড সংলগ্ন পল্লী বিদ্যুৎ পাওয়ার হাউজের ডোবার কোচুরী পানার ভিতর হতে অটো চালক শমসেরের লাশ উদ্ধর হয়ে অপহরণ মামলা হত্যা মামলায় রুপ নেয়। 
হত্যা মামলার বিষয়টি অবগত হওয়ার পরপরই রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের সম্মানিত পুলিশ কমিশনার জনাব মো. আবু কালাম সিদ্দিক হত্যার রহস্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিস্পত্তির জন্য কাশিয়াডাঙ্গা থানা পুলিশকে দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
 
জনাব মোঃ মনিরুল ইসলাম, উপ-পুলিশ কমিশনার (কাশিয়াডাঙ্গা বিভাগ) সার্বিক তত্বাবধানে সহকারি পুলিশ কমিশনার(কাশিয়াডাঙ্গা বিভাগ) জনাব মীর মুহসীন মাসুদ রানার নেতেৃত্বে অফিসার ইনচার্জ জনাব এসএম মাসুদ পারভেজের প্রত্যক্ষ তদারকিতে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. সিরাজুল ইসলাম ও তার টিম মামলা তদন্তকালে ও বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে পারিপার্শিক অনুসন্ধানে জানতে পারে মো. রাশেল এই হত্যার ঘটনার সাথে জড়িত আছে এবং তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা করেন।
কিন্তু রাশেল পলাতক থাকায় তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।  পরবর্তীতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ১০ এপ্রিল রাত ৩টায় মো. রাশেল (২১)কে তার পূর্ব রায়পাড়ার নিজ বাড়ী হতে গ্রেফতার করেন এবং সেই সাথে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত একটি চাকু ও অটোরিক্সা খোলার সরঞ্জামাদী উদ্ধার করেন।
 
আসামী রাশেল স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে এবং হত্যার সাথে জড়িত মো. তারেক (২১) নামের আরেকজনের নাম প্রকাশ করে। 
এসআই মো. সিরাজুল ইসলাম ও তার টিম আজ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রিমান্ডপ্রাপ্ত পুলিশ হেফাজতে থাকা আসামী মো. সাগর (২৫)কে সাথে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করে উত্তর বালিয়া গ্রামের মৃত আলমগীর হোসেনের ছেলে  মো. তারেক (২১)কে গ্রেফতার করে এবং আসামীদ্বয়ের দেওয়া তথ্যমতে আসামী তারেকের বসত বাড়ির খড়ি ঘড়ের  মাটিতে পুতে রাখা চুরি যাওয়া ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সার ০৮ টি ব্যাটারী উদ্ধার করে। 
 
গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এই মামলায় বিভিন্ন সময় মোট ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
স/জে