মঙ্গলবার , ২২ আগস্ট ২০১৭ | ১২ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরীর খবর
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

রাজশাহীতে লোডশেডিংয়ে নাকাল জনজীবন, গরমের তীব্রতার সঙ্গে বাড়ছে বিদ্যুৎ বিপর্যয়

Paris
আগস্ট ২২, ২০১৭ ৮:৩২ পূর্বাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীতে থামছেই না লোডশেডিং। যেন লোডশেডিংই এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে। আর বিদ্যুৎ, সেটি আসার দিকে যেন চাতক পাখির মতো চেয়ে থাকতে হচ্ছে। বলা যায়, ভয়াবহ বিদ্যুত বিপর্যয়ের কবলে রাত-দিন পার করছেন রাজশাহীবাসী। মহানগরীসহ গোটা জেলা এমনকি রাজশাহীর আশে-পাশের জেলাগুলোতেও চরম লোডশেডিংয়ে নাকাল হয়ে পড়েছেন মানুষ। দিন-রাত মিলে যেন ৯ ঘন্টাও বিদ্যুতের দেখা মিলছে না।

বিদ্যুতের এই চরম বিপর্যয়ে তীব্র গরমে যেন হাসফাঁস করতে হচ্ছে মানুষকে। গরম বাড়লে বাড়ছে লোডশেডিং-এর মাত্রা। অবস্থা এমন যেন গরমের সঙ্গে দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ ণিয়েছে রাজশাহী অঞ্চলের বিদ্যুত ব্যবস্থা। একবার বিদ্যুৎ গেলে দুই থেকে তিন ঘন্টার আগে তার আর দেখা মিলছে না। গত প্রায় এক মাস ধরে এই অবস্থা বিরাজ করছে রাজশাহীতে। দিন পার হয়ে রাতভর বিদ্যুতের লুকোচুরিতে যেন নির্ঘুম কাটাতে হয়েছে রাজশাহীবাসীকে।

বিদ্যুৎ না থাকায় অধিকাংশ সময় বন্ধ রাখতে হচ্ছে রাজশাহীর কল-কারখানাসহ দোকান-পাটও। বিশেষ করে ইলেক্ট্রোনিক্স নির্ভর দোকান-গুলো নিয়ে চরম বিপাকে পড়ছেন ব্যবসায়ীরা। যেন ঠিকমতো খুলতেই পারছেন না কেউ কেউ। এই অবস্থায় কেনাকাটায়ও নেমেছে ধস। বিদ্যুতের অভাবে থমকে যাচ্ছে অফিস আদালত, ব্যাংক বীমা কোম্পানীগুলোর কার্যক্রম। চার্জ দিতে না পারায় অনেক মানুষের অতি প্রয়োজনীয় মোবাইল ফোন বন্ধ হয়ে গেছে। বন্ধ হয়ে গেছে অফিসিয়াল কাজের ল্যাপটপটিও।

রাজশাহী নগরীর উপশহর এলাকার বাসিন্দা আলি হোসেন সিল্কসিটি নিউজকে জানান, গত কয়েক দিন ধরেই বিদ্যুতের বিপর্যয়ে চরম অস্থিরতার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন তিনি। এমনিতেই হার্ট এবং পেশারের রোগী। এর মধ্যে বার বার লোডশেডিং-এর কারণে বাড়িতে যেন দাঁড়াতেও পারছেন না। বাইরেও দিনের বেলা তীব্র গরমে ঘুর-ফেরা করতে পরেছেন না। আবার রাতে মশার যন্ত্রণা।

আলি হোসেন বলেন, দিনের বেলা তো বিদ্যুত থাকছেই না। আবার রাতে যে একটু শান্তিতে ঘুমাবো তারও উপায় নাই। এই ধারাবাহিকতায় সোমবার দিবাগত রাতজুড়ে দফায় দফায় বিদ্যুতের লোডশেডিং বিরাজ করেছে। সেই সঙ্গে তীব্র গরমে যেন নাকাল হতে হয়েছে। সোমবার রাতজুতে দফায় দফায় লোডশেডিং দেখা দেয়। শুরুটা হয় সন্ধ্যা থেকেই। চলে একেভারে ভোর পর্যন্ত।

শিক্ষানগরী খ্যাত রাজশাহীতে বিদ্যুতের এমন বিপর্যয়ে শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক জীবনেও প্রভাব পড়ছে বলে অনেকের অভিযোগ। নোট, বইসহ অন্যন্য জিনিসপত্র ফটোকপির করতে গিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা সময় নষ্ট করছেন অনেকেই। তথ্য প্রযুক্তির যুগে সামন্য সময় বিদ্যুৎ না থাকলেই পড়তে হয় বিভিন্ন রকম বিড়ম্বনার।

রাজশাহী কলেজের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মনিরুল ইসলাম সিল্কসিটি নিউজকে  বলছিলেন, গত কয়েক দিন থেকে দিনেই ৮-১০ বার করে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে। আবার রাতের অধিকাংশ সময় দেখা মিলছে না বিদ্যুত। ফলে দিনে যেমন গরমের দাপটে পড়তে বসা যাচ্ছে না, তেমনি রাতে পড়া তো দূরের কথা ঠিকমতো ঘুমো হচ্ছে না গরমের কারণে। এতে পড়ালেখায় ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। ঠিকমতো পড়তেই বসতে পারছি না বিদ্যুৎ না থাকায়। রাতে বাইরে বাইরে ঘুরেই সময় পার করতে হচ্ছে কখনো কখনো।’

নগরীর সাহেব বাজার এলাকার কাপড় ব্যবসায়ী ইমরান আলী ভূইয়া বলেন, বিদ্যুৎ তো দিনের অধিকাংশ সময় থাকছে না, ব্যবসা করবো কিভাবে। বিদ্যুৎ না থাকলে দোকানে ক্রেতারা এসে দাঁড়াতেই চাই না। তাহলে কেনাকাটা তারা করবে কিভাবে? তাই অধিকাংশ সময় দোকান বন্ধই রাখছি।’

বিদ্যুতের এমন লোডশেডিংয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-৪ এর নির্বাহী প্রকৌশলী নাসরিন ইয়াসমিন সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, জাতীয় গ্রীড থেকে বিদ্যুৎ চাহিদা মতো না পাওয়ায় লোডশেডিং হচ্ছে। জাতীয় গ্রীড থেকেই বিদ্যুৎ কম পাওয়া যাচ্ছে। চাহিদার প্রায় অর্ধেক বিদ্যুৎ মিলছে। আবার লাইনের মাঝে মাঝে সমস্যা হচ্ছে বৃষ্টির কারণে। ফলে নগরীতে লোডশেডিং দিতে বাধ্য হচ্ছি আমরা। আবার কখনো কখনো জাতীয় গ্রীড থেকেই লোডশেডিং দেওয়া হচ্ছে। এতে আমরা নিজেরাও বিপাকে আছি। তবে আশা করছি দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে।’

 

স/আর

সর্বশেষ - রাজশাহীর খবর