মঙ্গলবার , ২০ নভেম্বর ২০১৮ | ১৩ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরীর খবর
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

রাজশাহীতে মনোনয়ন নিয়ে আ.লীগে উৎকণ্ঠা, চলছে পাল্টাপাল্টি মিষ্টি বিতরণও

Paris
নভেম্বর ২০, ২০১৮ ১১:৩৮ পূর্বাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে এবার তোড়জোড় শুরু করেছে বড়–দুই দলই। বিশেষ করে প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে এখন আলোচনা চলছে বেশ তুঙ্গে। বিশেষ করে বর্তমান এমপিদের মধ্যে এবার কারা মনোনয়ন পাচ্ছেন-তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনার পাশাপাশি উৎসাহ-উৎকণ্ঠাও দেখা দিয়েছে নেতাকর্মীদের মাঝে। আবার মনোনয়ন নিয়ে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক গুজবো রটাচ্ছে কখনো কখনো।

এ নিয়ে নিজ দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি অবস্থানও সৃষ্টি হচ্ছে। চলছে এলাকায় পাল্টাপাল্টি মিষ্টি বিতরণও। আবার কোথাও কোথাও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরই হুমকি দেওয়া হচ্ছে বর্তমান এমপিদের সমর্থকদের পক্ষ থেকে-এমন অভিযোগও আসছে।
প্রসঙ্গত, রাজশাহীতে আওযামী লীগের দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন ৩৯ জন।

দলীয় সূত্র মতে, এক সময়ের বিএনপির ঘাটি হিসেবে পরিচিত ছিল রাজশাহী। ২০০১ এবং ৯৬ সালের নির্বাচনেও এখানে বিএনপি প্রার্থীদের ছিল জয়জয়কার। সেখানে ২০০৮ সালের নির্বাচনে সবকটি আসন ছিনিয়ে নেন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের প্রার্থীরা। এর মধ্যে রাজশাহী সদর আসনে ওয়াকার্স পার্টি থেকে জয়ী হোন ফজলে হোসেন বাদশা। আর বাকি ৫টি আসনেই বিজয় লাভ করে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। সেই থেকে গত ১০ বছর ধরেই একইভাবে ছয়টি আসনই দখলে আছে মহাজোটের।

আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনে এবার কয়টি আসন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট ধরে রাখতে পারে বা কয়টি আসন ছিনিয়ে নিতে পারে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফোরাম এ নিয়ে যতটা না আলোচনা চলছে, তার চেয়ে আলোচনা বেশি হচ্ছে এবার ছয়টি আসনে কারা দলীয় মনোনয়ন পাচ্ছে-তা নিয়ে।

এসব নিয়ে নতুন প্রার্থী ও বর্তমান এমপিদের সমর্থকদের মাঝে কখনো কখনো উত্তেজনার পারদও উঠেছে রাজনীতির মাঠে।
গত কয়েকদিন ধরে ফেসবুকসহ স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে ফোন করেও আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের নিয়ে নিজ দলের নেতাকর্মীরাই নানাভাবে নানা মন্তব্য তুলে ধরছেন। কেউ দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন-এমন খবর ছড়িয়ে এলাকায় মিষ্টি বিতরণ হয়েছে।

রাজশাহী-১ (গোদাগাগাড়ী-তানোর) আসনের বর্তমান এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী এবারো মনোনয়ন পাচ্ছেন-এমন খবর ছড়িয়ে গত রবিবার দুপুরে এলাকায় মিষ্টি বিতরণ করেছেন তাঁর সমর্থকরা। পাশাপাশি অভিযোগ উঠেছে, এমপি বিরোর্ধী অবস্থান নেওয়ায় আওয়ামী লীগেরই নেতাকর্মীদের দেখে নেওয়ারও হুমকি দেওয়া হয়েছে। গতকাল কয়েকজন ফোন করে এবং ফেসবুকেও এমন তথ্য দিয়েছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা।

মিস্টি বিতরণ করা হয়েছে রাজশাহী-৩, ৪ ও ৬ আসনের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঝেও। সবচেয়ে আগে মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছে রাজশাহী-৬ আসনে বর্তমান এমপি ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের এলাকায়। গত ১৫ নভেমম্বর শাহরিয়ার মনোনয়ন পেয়েছেন খবর রটিয়ে এলাকায় মিষ্টি বিতরণ করা হয়।

রাজশাহী-৩ আসনে এবার বর্তমান এমপিকে বাদ দিয়ে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদকে-এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার পর গত ১৬ নভেম্বর এলাকায়। এরপর গত ১৮ নভেম্বর এলাকায় মিষ্টি বিতরণ করেন এমপি আয়েন সমর্থকরা। এমপি আয়েনই শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন পাচ্ছেন-এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার পর এলাকায় মিষ্টি বিতরণ করা হয়।

এদিকে রাজশাহী-৩ আসনে এমপি বিরোধী অবস্থান নেওয়ায় সম্ভাব্য প্রার্থী ও আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কালাম আজাদ এবং জাকিরুল ইসলাম সান্টুর কর্মী-সমর্থকদের নানাভাবে হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এমপি এনামুলের কর্মী-সমর্থকরা এ কাজ করছেন। পাশাপাশি গত ১৬ নভেম্বর এলাকায় এমপির পক্ষে মিস্টি বিতরণ করা হয়েছে বলেও জানা গেছে।

উপজেলা চেয়ারম্যান জাকিরুল ইসলাম সান্টুর সমর্থক ও বাগমারা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘এখনো মনোনয়ন চুড়ান্ত হয়নি। কিন্তু এমপির অনুসারীরা যেমন আচরণ শুরু করেছে-তাতে বাগমারায় আওয়ামী লীগের একটি বড় অংশকে মাইনাস করে তিনি মনে হয় এমপি নির্বাচিত হবেন। এটা ভাবলে এমপি এনামুল ভুল করবেন।’

স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, এমপি এনামুলের বিরুদ্ধে আগে থেকেই বাগমারায় একটি শক্ত অবস্থান আছে আওয়ামী লীগের। এমপির বিরুদ্ধে বিএনপি-জামায়াতকরণ, নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অভিযোগ তুলে আসছেন আওয়ামী লীড়ের নেতারা। এসব নিয়ে এমপির সঙ্গে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের বড় একটি অংশের দূরুত্বও আছে বেশ। এই অবস্থায় মনোনয়ন ঘিরে এলাকায় আরো বড় ধরনের উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।

রাজশাহীর পবা ভালামের আওয়ামী লীগ নেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কে খুব টেনশন হচ্ছে কে মনোনয়ন পাবেন-তা নিয়ে। এই শুনছি আয়েন পাবেন, এই শুনছি আসাদ পাবেন? জানি না কে পাবেন। তবে টেনশনে আছি।’
গোদাগাড়ীর আওয়ামী লীগকর্মী হযরত আলী বলেন, ‘মনোনয়ন যেই পাক। এ নিয়ে নিজ দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে এখনোই যে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে, সেটি নিরসন করতেই বেগ পেতে হবে আওয়ামী লীগকে। তারপর জয়ের চিন্তা করতে হবে।’

এদিকে এখনো আওয়ামী লীগের মনোনয়ন কে পাচ্ছেন-তা নিয়ে রাজশাহীর ৬টি আসনেই চলছে নানা গুঞ্জন। নেতাকর্মীরা ফোন করে বা যে যার মতো করে জানার চেষ্টা করছেন, তাঁদের সমর্থনকারী নেতা পাচ্ছেন কিনা এবার মনোনয়ন?

স/আর

সর্বশেষ - রাজশাহীর খবর