বৃহস্পতিবার , ২৩ নভেম্বর ২০১৭ | ১২ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরীর খবর
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

রাজশাহীতে এসএসসির ফরম পূরণে নানা অজুহাতে আদায় হচ্ছে বাড়তি টাকা

Paris
নভেম্বর ২৩, ২০১৭ ১২:২১ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীর পুঠিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এবার এসএসসি ও পরীক্ষায় ফরম পূরণের জন্য শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে আদায় করা হয়েছে এক হাজার ৬০০ থেকে এক হাজার ৭৫০ টাকা পর্যন্ত। শেসন ফি, কেন্দ্র ফি, বোর্ড ফিসহ নানা অজুহাতে শিক্ষা বোর্ড নির্ধারিত টাকার বাইরেও অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হয়েছে এ বিদ্যালয়টিতে।

এ নিয়ে পরীক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করে আসলেও কোনো লাভ হয়নি। স্কুল থেকে নির্ধারিত ফি দিয়েই ফরম পূরণ করতে হয়েছে শিক্ষার্থীদের। ফলে টাকার অভাবে অনেক গরিব শিক্ষার্থীর বাবা-মাকে ধার-দেনার মধ্যেও জড়িয়ে পড়তে হয়েছে। কিন্তু বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রত্যেক শিক্ষার্থী থেকে গড়ে অন্তত ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা হারে বেশি আদায় করা হয়েছে। একইভাবে উপজেলার এসআর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়েও একই হারে অর্থ আদায় করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণের ক্ষেত্রে রাজশাহী জেলার কোনো স্কুলেই শিক্ষা বোর্ড নির্ধারিত ফি আদায় করা হয়নি। প্রত্যেকটি স্কুলেই অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে আদায় করা হচ্ছে দুই হাজার ৫০০ টাকা থেকে তিন হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্তও। ফলে ফরম পূরণ করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন অনেক গরিব শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা।

তবে পুঠিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘শিক্ষা বোর্ডের বাইরে শুধু কেন্দ্র ফি ধরা হয়েছে। আর কিছু টাকা ধরা হয়েছে স্কুলের শেসন ফি বাবদ। এর বাইরে কোনো ফি আদায় করা হচ্ছে না। শিক্ষার্থীরা কেউ কোনো অভিযোগ করলে সেটি ঠিক নয়।’

একই দাবি করেছেন পুঠিয়া উপজেলার এসআর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিবলী খাতুন। তিনি বলেন, আমরা কোনো অতিরিক্ত টাকা আদায় করিনি। এটা কেউ বলতেও পারবে না।’

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড সূত্র মতে, ২০১৮ সালের এএসসি পরীক্ষার জন্য এবার অনলাইনে ফরম পূরণের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয় ৭ থেকে ১২ নভেম্বর পর্য। তবে বিলম্ব ফি দিয়ে ১৪ থেকে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত অনলাইনে ফরম পূরণ করার কথা বলা হলেও পরবর্তিতে বিলম্ব ফিসহ সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত। শিক্ষা বোর্ড থেকে এবার মানবিক বিভাগের জন্য ফি নির্ধারণ করা হয় ১ হাজার ১১০ টাকা এবং বিজ্ঞান বিভাগের জন্য নির্ধারণ করা হয় ১ হাজার ২১০।

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা যায়, এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফরম পূরণে প্রতি পত্রের জন্য ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৮০ টাকা। প্রতি পত্রের ব্যবহারিক ফি ৩০ টাকা, শিক্ষার্থীপ্রতি ট্রান্সক্রিপ্ট ফি ৩৫ টাকা, মূল সনদ ফি ১০০ টাকা, স্কাউট ও গার্লস গাইড ফি ১৫ টাকা, শিক্ষা সপ্তাহ ফি পাঁচ টাকা এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানপ্রতি বার্ষিক ক্রীড়া অ্যাফিলিয়েশন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০০ টাকা।

এ ছাড়া ব্যবহারিক নেই এমন শিক্ষার্থীদের কেন্দ্র ফি ২৫০ টাকা এবং যাদের ব্যবহারিক আছে তাদের ফি ৩০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত ১০০ টাকা ফি দিতে হবে। ফলে সব মিলিয়ে একজন নিয়মিত শিক্ষার্থীকে ফরম পূরণের জন্য মানবিক বিভাগের একজন শিক্ষার্থীতে দিতে হবে সর্বোচ্চ এক হাজার ৩৭০ টাকা এবং বিজ্ঞান বিভাগের জন্য সর্বোচ্চ ফি দিতে হবে এক হাজার ৫৫০ টাকা। কিন্তু রাজশাহীর সব স্কুলের বোর্ডের সেই নিয়ম তোয়াক্কা না করে দ্বিগুন-তিনগুন টাকা পর্যন্ত আদায় করেছে। এতে করে অনেকে গরিব শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা পড়েছেন বিপাকে।

জানতে চাইলে রাজশাহী নগরীর নজমুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, বোর্ডের বাইরেই টাকা আদায় করা হয়েছে। অতিরিক্ত টাকা দিতে গিয়ে বিপাকে পড়তে হয়েছে। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ তা শোনেনি। টাকা কমানোর জন্য অনুরোধ করেও লাভ হয়নি।’

আরেক অভিভাবক বলেন, রাজশাহী নগরী থেকে থেকে শুরু করে জেলার প্রত্যেকটি স্কুলে অতিরিক্ত হারে অর্থ আদায় করা হয়েছে বা এখনো হচ্ছে। অনেক অভিভাবকরা অতিরিক্ত টাকা সংগ্রহ করতে গিয়ে ধার-দেনার মধ্যেও জড়িয়েছেন।

এসএসি পরীক্ষার অতিরিক্ত ফি আদায় সম্পর্কে জানতে চাইলে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তরুণ কুমার সরকার  বলেন, ‘এসএসসি পরীক্ষার ফরম নির্ধারিত ফি সংক্রান্ত বিষয় শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে দেওয়া আছে। এর বাইরে কোনো প্রতিষ্ঠান টাকা আদায় করলে এবং সে বিষয়ে অভিযোগ উঠলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব।

স/আর

 

সর্বশেষ - রাজশাহীর খবর