শুক্রবার , ২৬ এপ্রিল ২০১৯ | ১৯শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরীর খবর
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

বিদেশে অভিবাসী নারী গার্মেন্টস শ্রমিক বাড়ছে

Paris
এপ্রিল ২৬, ২০১৯ ৩:২৮ অপরাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

গার্মেন্টস শিল্প অধ্যুষিত বিভিন্ন দেশে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের দক্ষ ও আধাদক্ষ শ্রমিক যাওয়ার পরিমাণ বাড়ছে। অপেক্ষাকৃত বেশি বেতন পাওয়া ও স্বাধীন জীবনযাপনের সুযোগ থাকায় নারী শ্রমিকরা এতে আগ্রহী হচ্ছে। তবে বিদেশে অভিবাসী হতে চাওয়া নারী গার্মেন্টস শ্রমিকদের একটি অংশ সেখানেও বিভিন্নভাবে নির্যাতন কিংবা প্রতারণার শিকার হচ্ছেন।

বাংলাদেশ থেকে সেখানে যাওয়ার প্রক্রিয়ায়ও কেউ কেউ প্রতারিত হচ্ছেন। অন্যদিকে গ্রাম থেকে আসা এসব নারী শ্রমিকের বিদেশে যাওয়ার বিষয়টিকেও স্বাভাবিকভাবে দেখে না সমাজ। ফলে ফিরে এসে গ্রামে গিয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপনও তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে। বিদেশে অভিবাসী হওয়া কিংবা হতে যাওয়া নারী শ্রমিকদের নিয়ে ‘কর্মজীবী নারী’র এক গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে রিসার্স শেয়ারিং সেমিনারে এসব তথ্য জানানো হয়। ৬০ জন নারী শ্রমিকের সাক্ষাত্কারের ভিত্তিতে ওই গবেষণা প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়।

কর্মজীবী নারীর সভাপতি ড. প্রতিমা পাল মজুমদারের সভাপতিত্বে ওই সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন শিরিন আখতার এমপি। এসময় নারী নেত্রী, অভিবাসন বিশেষজ্ঞ ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় জানানো হয়, বাংলাদেশের জন্য বিদেশের গার্মেন্টসের শ্রম বাজার নতুন সম্ভাবনা তৈরি করছে। বিশেষ করে জর্ডান ও মোরিশাসে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী গার্মেন্টস শ্রমিক অভিবাসী হয়েছেন। ২০১০ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত আট বছরে বাংলাদেশের ৪৯ হাজার ৪০৪ জন নারী শ্রমিক জর্ডানে গিয়েছেন, যার মধ্যে ৪৮ হাজার ৮৯০ জনই গিয়েছেন সরকারি প্রক্রিয়ায়। এর মধ্যে প্রায় সবাই গার্মেন্টস কারখানায় কাজ করেন।

তবে যাওয়ার আগেই কোনো কোনো নারী শ্রমিক দালালদের মাধ্যমে প্রতারণা এবং বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। বাংলাদেশে ফেরত এসে আবার অভিবাসী হওয়া এক নারী শ্রমিক জানান, তার স্বামী এক লাখ ২০ হাজার টাকা ধার করে দালালের হাতে তুলে দেন। কিন্তু তিনি জানতে পারেন, যাওয়ার খরচ ছিল খুবই কম।

গবেষণায় বলা হয়, নারী শ্রমিকেরা সঠিক প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানে না বলেই দালালের মাধ্যমে বিদেশ গিয়ে হয়রানি, শোষণ-বঞ্চনার শিকার হন। আবার যারা সরকারিভাবে নিয়মের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, তারাও ওই দেশের গার্মেন্টসে কাজ করতে গিয়ে অতিরিক্ত কাজের চাপ, ওভারটাইম না পাওয়া, ডরমেটরিতে যৌন হয়রানির শিকার হওয়ার মতো পরিস্থিতি মোকাবিলা করছেন। অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে সেই নারী শ্রমিকদের পাসপোর্টে রেড মার্ক করে দেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে। ফলে তারা ফের যেতে পারছে না। আবার দেশে আসার পর নানাভাবে সামাজিক বঞ্চনার শিকার হচ্ছে।

গবেষণা উপস্থাপনকালে কর্মজীবী নারীর পরিচালক রাহেলা রব্বানী জানান, দেশের গার্মেন্টসে নারী শ্রমিকের কাজের সুযোগ কমে এসেছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির কারণে। তারা আরো বেশি আয়ের জন্য বিদেশের গার্মেন্টসে যেতে চায়। ড. প্রতিমা পাল মজুমদার বলেন, নিরাপদ অভিবাসন বিষয়ে তৃণমূল থেকে তথ্য পৌঁছে দিতে হবে। আমাদের দূতাবাসগুলোকে শ্রমিকের বিষয়ে সক্রিয় হতে হবে।

শিরীন আখতার বলেন, আমাদের মেয়েরা বিদেশ যাচ্ছে, রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছে। নারী শ্রমিকদেরও জানতে হবে তারা কোন আইনে, কোন নিয়মে বিদেশ যাচ্ছে। আর তাদের দক্ষতা ও সক্ষম করে গড়ে তোলার জন্য দরকার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা। নিরাপদ অভিবাসনের জন্য সরকারিভাবে এগিয়ে আসতে হবে। বিদেশে নারী শ্রমিকদের সংকটে পাশে দাঁড়াতে হবে।

সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, নারী শ্রমিকদের কাছ থেকেই সরকার প্রায় শতভাগ রেমিট্যান্স পায়। তাই সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নারী শ্রমিকের নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।

সর্বশেষ - অর্থ ও বাণিজ্য