সিনেমা হলমালিকদের বাঁচিয়ে দিয়েছে ‘দঙ্গল’

সিল্কসিটিনিউজ বিনোদন ডেস্ক:

আমির খান অভিনীত ‘দঙ্গল’ বলিউড বক্স অফিসে কাঁপন ধরানোর পাশাপাশি ভেঙে দিয়েছে অনেক রেকর্ড। সবশ্রেণীর সব বয়সী দর্শক ছবিটি দেখে মুগ্ধ। এটি শুধু দর্শকদেরই খুশি করেনি, ভারতীয় চলচ্চিত্র শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের মুখেও হাসি ফুটিয়েছে।

 

‘দঙ্গল’-এর অভাবনীয় ব্যবসায়িক সাফল্যে লাভবান হয়েছেন ভারতজুড়ে একক পর্দাবিশিষ্ট প্রেক্ষাগৃহ মালিকরা। কিছুদিন আগেও মাল্টিপ্লেক্সের দৌরাত্ম্যে নানান চড়াই-উতরাইয়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে তাদেরকে। নিতেশ তিওয়ারি পরিচালিত ছবিটি দেখতে দর্শকরা হুমড়ি খেয়ে পড়েছে সিঙ্গেল স্ক্রিন থিয়েটারগুলোতে। ফলে দেদার টিকিট বিক্রি হওয়ায় খুশি প্রেক্ষাগৃহ মালিকরা।

 

এমন একটি ছবি তৈরির জন্য উদ্যোগ নেওয়ায় আমির খানের প্রতি যে এসব সিনেমা হলমালিকরা অনেক কৃতজ্ঞ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য ‘দঙ্গল’ নিয়ে নিজেদের ভাবনাগুলো হাতে লিখে চিঠি আকারে ৫১ বছর বয়সী এই অভিনেতার কাছে পাঠিয়েছেন তারা।

 

রায়গড়ের একক পর্দাবিশিষ্ট প্রেক্ষাগৃহের মালিক লিখেছেন, ‘দঙ্গল’-এর মাধ্যমে তিনি উপলব্ধি করেছেন ভারতে ছবির অভাব নেই। তবে দর্শককে সিনেমা হলে টেনে আনার মতো ভালো ছবির অনেক অভাব।

 

গাজিয়াবাদ জেলার দাসনার এক চলচ্চিত্র পরিবেশক চিঠিতে জানিয়েছেন, তার সিনেমা হলটি প্রায় বন্ধ হতে বসেছিলো। ‘দঙ্গল’ মুক্তি পেতেই ভাগ্য মুখ ফিরে তাকিয়েছে তাদের।

 

প্রেক্ষাগৃহ মালিকদের কাছ থেকে উৎসাহব্যঞ্জক চিঠি পেয়ে আমির খান জানান, এ ছবির কাজ করাটা ছিলো তার জন্য খুব উত্তেজনাপূর্ণ এবং পরিপূর্ণ অভিজ্ঞতা। যোগ করে তিনি বলেন, “ক্যারিয়ারের ফেলে আসা দিন ও পুরনো সিদ্ধান্তগুলোর দিকে তাকালে বুঝতে পারি সেগুলো বেশিরভাগই ছিলো অবাস্তব ও ঝুঁকিপূর্ণ। এর সর্বশেষ দৃষ্টান্ত হচ্ছে ‘দঙ্গল’। তবে আমি সেই কাজ করি যেটা বিশ্বাসযোগ্য মনে হয় এবং নিজের ভালো লাগে।”

 

ওয়াল্ট ডিজনি স্টুডিওস মোশন পিকচার্সের পরিবেশনায় ভারতের চার হাজার ৩০০টি ও বিভিন্ন দেশের এক হাজার মিলিয়ে পাঁচ হাজারেরও বেশি প্রেক্ষাগৃহে গত ২৩ ডিসেম্বর মুক্তি পায় ৯০ কোটি রুপি বাজেটে নির্মিত ‘দঙ্গল’। ভারত ও বহির্বিশ্ব মিলিয়ে ছবিটিআয় করেছে ৭১৫ কোটি ৮২ লাখ রুপি।

 

হরিয়ানার কুস্তিগীর মহাবীর সিং ফোগাটের জীবন অবলম্বনে তৈরি হয়েছে ‘দঙ্গল’। তার কন্যা গীতা ফোগাট ২০১২ সালে প্রথম ভারতীয় নারী হিসেবে অলিম্পিকের কুস্তি বিভাগে লড়ার যোগ্যতা অর্জন করেন। দিল্লি কমনওয়েলথ গেমসে তিনিই প্রথম ভারতীয় নারী হিসেবে ৫৫ কেজি বিভাগে সোনা জেতেন। তার বোন ববিতা কুমারীও বিশ্বমানের কুস্তিগীর।

 

গোঁড়ামি, সামাজিক চাপ ও প্রথাগত ধারণার বাইরে গিয়ে কুস্তির দুনিয়ায় দুই কন্যাকে এনে মহাবীর কীভাবে সফল হলেন সেটাই তুলে ধরা হয়েছে এ ছবিতে। এতে মহাবীর চরিত্রে ক্যারিয়ার সেরা অভিনয় করেছেন আমির খান। এর মাধ্যমে দুই বছর পর বড়পর্দায় ফিরেছেন তিনি।

 

কুস্তিগীর গীতা ও ববিতা চরিত্রে অভিনয় করেছেন নবাগতা ফাতিমা সানা শেখ ও সানিয়া মালহোত্রা। গীতা ও ববিতার শৈশবের চরিত্রে আছে জায়রা ওয়াসিম ও সুহানি ভাটনগর। মহাবীরের স্ত্রী দয়া কৌর চরিত্রে অভিনয় করেছেন সাক্ষী তানওয়ার। এর সংগীত পরিচালনা করেছেন প্রীতম চক্রবর্তী।

সূত্র: বাংলা নিউজ