খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই ৩ শিক্ষককে চাকরিতে বহালের নির্দেশ

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সহমত পোষণকারী তিন শিক্ষককে চাকুরিচ্যুত করেছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট কমিটি। তবে আজ মঙ্গলবার তাদের শিক্ষকতা চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে স্থিতাবস্থার আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

একইসঙ্গে শিক্ষকদের অপসারণ সিদ্ধান্তের আদেশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়েছেন উচ্চ আদালত। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে তা জানাতে রুল জারি করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার বিচারপতি মো. মুজিবর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কামরুল ইসলাম মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। পাশাপাশি মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভার আদেশ স্থগিত করে ওই তিন শিক্ষককে চাকরিতে বহাল রাখারও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

শিক্ষকদের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার ওই তিন শিক্ষক উচ্চ আদালতে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার চেয়ে রিট আবেদন করেন। চারদিন পর রিটের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। আদালতের দ্বৈত বেঞ্চ মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তাদের চাকরি চালিয়ে যাওয়ার আদেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি কেন ওই সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চেয়েছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু ওই তিন শিক্ষক এখনও তাদের দায়িত্ব হস্তান্তর করেননি, তাই তাদের খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে কাজ চালিয়ে যেতে কোনো আইনি বাঁধা নেই। তিন শিক্ষকের প্রতি যে অন্যায় আচরণ করা হয়েছে, তা কোনো বিচারেই গ্রহণযোগ্য নয় এবং সেটি তাদের একাডেমিক স্বাধীনতার ওপর আঘাত।’

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারিতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। পাঁচ দফা দাবির মধ্যে ছিল—বেতন কমানো, আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ, চিকিৎসা ব্যবস্থা উন্নত করা, অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে অবকাঠামো নির্মাণ ও ছাত্রবিষয়ক সিদ্ধান্ত গ্রহণে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।

আন্দোলনে সহমত পোষণকারী তিন শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করার জন্য গত ১৮ জানুয়ারি সিন্ডিকেট কমিটির মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় হয়েছিল। এর মধ্যে বাংলা ডিসিপ্লিনের সহকারী অধ্যাপক আবুল ফজলকে বহিষ্কার ও বাংলা ডিসিপ্লিনের প্রভাষক শাকিলা আলম এবং ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের শিক্ষক হৈমন্তী শুক্লা কাবেরী অপসারণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরবর্তীতে ২৮ জানুয়ারি রেজিস্টার স্বাক্ষরিত পত্রে তাদের চূড়ান্ত বহিষ্কার বা অপসারণের পত্র দেওয়া হয়েছিল। ৪ ফেব্রুয়ারি ওই তিন শিক্ষক উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করেছিলেন।

সূত্র:আমাদেরসময়