খাবারে কি আপনার অ্যালার্জি আছে

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্কঃ

অনেক সময় একেকজনের একেক খাবারের কারণে শরীরে অ্যালার্জি হয়ে থাকে। গরুর দুধ, গরুর মাংস, ডিম, কলা, বেগুন, চিংড়ি, ইলিশ মাছ খেয়ে অনেকে চুলকানি, পেট ব্যথা, হাঁপানি বা সর্দিতে ভোগেন। আর এগুলোই হচ্ছে খাদ্যের অ্যালার্জিক রি-অ্যাকশন। ৬ থেকে ৮ শতাংশ শিশু এবং ১ থেকে ২ শতাংশ বৃদ্ধ সচরাচর খাদ্যজনিত অ্যালার্জিতে ভুগে থাকেন।

লক্ষণ

কিছু খাবার খাওয়ার পর অস্বাভাবিক ইমুনোলজিক্যাল ছাড়াও অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। যেমন—গরুর দুধ, ডিম, বাদাম, সয়াবিন, ইলিশ, চিংড়ি, পুঁটি, বোয়াল, শোল মাছ, বেগুন, কুমড়া, কচু ইত্যাদি। খাদ্যে অ্যালার্জিজনিত এসব লক্ষণ শরীরের বিভিন্ন স্থানে নানা প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। যেমন—

♦ ত্বকে বা চামড়ায় চুলকাতে থাকে এবং সঙ্গে সঙ্গে চাকা চাকা হয়ে লাল হয়ে ওঠে।

♦ চোখ চুলকানো, পানি পড়া, লাল হয়ে ওঠা, ফুলে ওঠা ইত্যাদি।

♦ ওপরের শ্বাসনালিতে, নাকে ও গলায় চুলকাতে থাকে। গলা ফুলে গেছে বলে মনে হয়, এমনকি কথা বলার সময় অসুবিধা হয়, নাক দিয়ে পানি পড়া, নাক বন্ধ ভাব থাকে।

♦ নিচের শ্বাসনালিতে শ্বাসকষ্ট, কাশি, দম খাটো খাটো ভাব, বাঁশির মতো আওয়াজ, বমি বমি ভাব, পেট মোচড়ানো বা ব্যথা, ডায়রিয়া ইত্যাদি দেখা যায়।

রোগ নির্ণয়

কোন কোন খাদ্যে অ্যালার্জি রয়েছে এবং কাদের অ্যালার্জির সমস্যা হতে পারে, তা জানা যায় নানাভাবে। যেমন—

♦ কত সময় ধরে অ্যালার্জি শুরু হয়েছে, রোগের লক্ষণ, অ্যাটপিক ডার্মাটাইটিস, অ্যাজমা, অ্যালার্জিক রাইনাইটিস রোগে ভুগছে কি না ইত্যাদির ইতিহাস জানা।

♦ ল্যাবরেটরি পরীক্ষা—স্কিন প্রিক টেস্ট, স্পেসিফিক আইজিই।

♦ খাদ্যতালিকা থেকে অ্যালার্জিজনিত খাদ্যদ্রব্য বাদ দিয়ে পরীক্ষা। রোগীর ইতিহাস ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর অ্যালার্জিক খাবার শনাক্ত করার পর ওই খাবার দুই থেকে ছয় সপ্তাহ বাদ দেওয়ার পর যদি রোগের লক্ষণগুলো সেরে যায়, তবে বুঝতে হবে যে ওই খাদ্যই এই অ্যালার্জির জন্য দায়ী।

তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে খাবার না খেয়ে অ্যালার্জিক খাদ্যের সংস্পর্শে এলেও কিছু প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। যেমন—কড়াইয়ে চিংড়ি সিদ্ধ করার সময় বায়ুবাহিত কিছু প্রোটিন বের হয় এবং শ্বাসনালির ভেতর ঢুকেই এনাফাইলোটিক রি-অ্যাকশন দেখা দিতে পারে।

চিকিৎসা

বর্তমান বিশ্বে খাদ্য অ্যালার্জির কোনো প্রতিকার নেই। এটি পুরোপুরি নির্ভর করে খাদ্যাভ্যাসের নিয়ন্ত্রণের ওপরে। এটির অন্যতম শর্ত হলো সংবেদনশীল খাবারগুলো এড়িয়ে যাওয়া। আর যদি কেউ শেষ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েই যান তাহলে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা নিতে হবে। কেউ কোনো বিশেষ ধরনের খাদ্যে অ্যালার্জিক কি না, এটা বুঝতে হলে তাঁকে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে সেই খাবারটি ধীরে ধীরে বেশি পরিমাণে খেয়ে পরীক্ষা করতে হবে।