করোনা পরবর্তী সময়ে শারীরিক দুর্বলতা কাটাবেন যেভাবে

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্কঃ

কোভিড ১৯ এ আক্রান্ত হওয়ার পর সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ ও আইসোলেশনের পর বেশিরভাগ রোগীই সুস্থ হয়ে ওঠেন। তবে করোনামুক্ত হওয়ার পরও শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। যাকে বলা হয় পোস্ট কোভিড সিম্পটম।

আপনি কি সম্প্রতি কোভিড সংক্রমণ থেকে সেরে উঠেছেন ও এখনো পুরোপুরি সুস্থ বোধ করছেন না?
উত্তর যদি হ্যাঁসূচক হয়, তাহলে হয়তো আপনি পোস্ট কোভিডে ভুগছেন।

এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি যে লক্ষণটি দেখা যায় সেটি হলো ক্লান্তি ও দুর্বলতা। ভাইরাল সংক্রমণের সঙ্গে লড়াই করার কারণে ক্লান্তি অনুভব করা শরীরের একটি স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া।

বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনা থেকে সেরে ওঠার পর কেউ কেউ দীর্ঘ সময় অর্থাৎ- সপ্তাহ, মাস এমনকি বছর পর্যন্তও ক্লান্তিতে ভুগতে পারেন। আপনিও যদি করোনা পরবর্তী সময়ে ক্লান্তিতে ভোগেন তাহলে শরীরের প্রতি আরও বেশি যত্নবান হতে হবে।

এ বিষয়ে ভারতের সেলিব্রিটি পুষ্টিবিদ রুজুতা দিওয়েকার একটি সাম্প্রতিক ইউটিউব শর্ট ভিডিওতে ৫টি টিপস শেয়ার করেছেন। যা অনুসরণ করে আপনি খুব দ্রুত পোস্ট কোভিডের ক্লান্তি ও দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে পারবেন। জেনে নিন করণীয়-

>> নিয়মিত এক গ্লাস লেবু পানি পান করুন। সকালে খালি পেটে পান করলে বেশি উপকৃত হবে। এতে সামান্য কালো মরিচ গুঁড়া মিশিয়ে নিন। হজমশক্তি বাড়াবে এই পানীয়। কোভিড বা অন্য কোনো ভাইরাল সংক্রমণ আপনাকে ডিহাইড্রেটেড ও অলস করে তুলতে পারে। এ কারণে প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে তরল গ্রহণ করতে হবে।

প্রচুর পানি পান করার পাশাপাশি প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় এক গ্লাস লেবু পানিতে এক চিমটি কালো লবণ যোগ করুন। এটি আপনাকে সতেজ করবে ও শক্তির মাত্রাও উন্নত করবে। তবে এতে ঠান্ডা পানি বা বরফ ব্যবহার করবেন না।

>> দুপুরের খাবারের জন্য ঘি দিয়ে এক বাটি গরম ডাল ও ভাত খান। এই খাবারে মিলবে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, স্বাস্থ্যকর চর্বিসহ নানা পুষ্টি উপাদান। একটি প্রোটিন-সমৃদ্ধ খাদ্য শরীরের ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে।

দিনে অন্তত একবার ভাত খাওয়ার চেষ্টা করুন। কারণ ভাতের মতো কার্বোহাইড্রেট শরীরের জ্বালানির জন্য অপরিহার্য।

স্বাস্থ্যকর চর্বি যেমন- ঘি শরীরের হরমোনের সঠিক কার্যকারিতায় অবদান রাখে। ঘি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ও আপনাকে কোভিড পরবর্তী ক্লান্তি থেকে পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করবে।

>> সকালের নাস্তায় একটি কলা রাখুন। এটি আপনার শরীরের ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখবে। ফলে দুর্বলতা ও ক্লান্তি কাটবে ও বাড়বে শক্তির মাত্রা। কলা হজমশক্তিকেও উন্নত করে।

পটাসিয়াম, কার্বোহাইড্রেট ও ফাইবার সমৃদ্ধ দুর্দান্ত শক্তি বৃদ্ধিকারী ফল হলো কলা। সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করে এই ফল। শারীরিক ক্লান্তি কাটাতে সারাদিন চা-কফি পান করার পরিবর্তে কলার মতো পুষ্টিকর ফল খাওয়া ভালো।

>> শরীরের ক্লান্তি কাটাতে শরীরচর্চার বিকল্প নেই। এই পুষ্টিবিদের মতে, আগের চেয়ে ৫০ শতাংশ কম তীব্রতায় ব্যায়াম করুন। শরীরের ক্লান্তি নিয়ে অযথা বেশি পরিশ্রম করবেন না। সক্রিয় রুটিনে ফিরে আসার জন্য তাড়াহুড়ো করবেন না।

আপনি যদি মনে করেন যে ওয়ার্কআউট করতে সক্ষম তাহলে ধীরে ধীরে শুরু করুন। হাঁটা তারপর জোরে হাঁটা এরপর জগিং ও পরবর্তীতে দৌঁড়ানো অনুশীলন করুন নিয়মিত।

>> সুস্থ থাকলেও অনেকেই উচ্চ রক্তচাপে ভোগেন। কোভিড পরবর্তী সময়ে এ সমস্যাও দেখা দিতে পারে। তবে ফিট ও সুস্থ মানুষ কেন উচ্চ রক্তচাপে ভোগেন তার উত্তর দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

ঘুম আপনার শরীর পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া বাড়াতে সাহায্য করে। অথচ অনেকেই ঘুমের পরিবর্তে ফোন বা টেলিভিশনে চোখ রাখতেই বেশি পছন্দ করেন। আর ঘুম না হলে মন ও চোখেও আরাম মেলে না।

শরীর সুস্থ রাখতে আপনার ঘুমের চক্র ঠিক রাখতে হবে। প্রতি রাতে পর্যাপ্ত বিশ্রাম পান। ঘুমানোর আগে ক্যাফেইন, দেরি করে খাওয়া ও গ্যাজেট এড়িয়ে চলুন।

এছাড়া আপনার উপর শান্ত প্রভাব ফেলে এমন ক্রিয়াকলাপগুলোর জন্য সময় বের করুন যেমন- ধ্যান, শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম বা মাথা ম্যাসেজ করা ইত্যাদি।

 

সূত্রঃ জাগো নিউজ