করোনা থেকে সেরে উঠলেও থাকেন সাহসী

করোনা রোগ থেকে সেরে উঠে বাসায় ফিরেছেন। কিন্তু তবু থাকতে হবে হুশিয়ার ও সাহসী। অনেক ডাক্তারও রোগীর কাছ থেকে সংক্রমণ পান।

ঘরে ফিরেও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে, সতর্কতা হিসেবে। হাত ধোয়া কড়াকড়ি মেনে চলতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা খুব জরুরি। যৎসামান্য কফ কাশ থাকবে। সময়ে চলে যাবে।

১৪ দিন নিঃসঙ্গবাস, পরিবার থেকে দূরে থাকার জন্য মনের ওপর চাপ তো থাকবে। হয়তো মা-বাবা বাড়িতে ওদের অবস্থা জানার উপায় ছিল না।

গুরুতর জটিলতা ছাড়াই সেরে উঠলে সৌভাগ্য। বারবার জ্বর যদি হয় তাহলে হয়তো ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে কাটাতে পারেন হাসপাতালকাল। অবশ্য হাসপাতালে নিঃসঙ্গবাসে স্বাস্থ্যবিধি মানা হবে, হাত ধোয়া ও মাস্ক পরা।

প্রথম দু-তিন দিন থাকতে পারে খুব জ্বর, শুকনো কাশি, একটু শ্বাসকষ্ট, আবার পঞ্চম দিন থেকে একটু ভালো হতে থাকতে পারে শরীর। কিন্তু ঘটনা এমন চলতে নাও পারে।

সপ্তাহ পেরোতে না পেরোতে আবার শরীর খুব খারাপ লাগা হতে পারে, পেটে প্রচণ্ড ব্যথা, তরল মল, বুক আঁটোসাঁটো ভাব, আর জ্বর। স্বাদ ও গন্ধ চেতনা পুরোটাই লোপ পেল।

ঘরে ফিরে আসার পর মন অনেক হালকা, সতেজ, টাটকা বাতাস ছুঁয়ে যায় শরীর। এম্বুলেন্স দিয়ে গেল বাসায়।

নিজের মালপত্র একটি আলাদা ঘরে রেখে উষ্ণ জলে শাওয়ার। ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এখন হবে পরবর্তী জীবনাবাব।

অনেকের হাসপাতালবাস আরও দীর্ঘ। হয়তো ৫৪ দিনের নিঃসঙ্গবাস। পরিচ্ছন্ন গালে জমেছে দাড়ি। পাকা দাড়ি। হারানো গেছে ৩০ পাউন্ড ওজন শরীর থেকে। শ্বাসকষ্ট, কক কাশ, শয্যার পাশে অক্সিজেন বোতল সব অতীত স্মৃতি।

ভাইরাসটি ফুসফুসের ওপর আক্রমণ চালিয়ে ঘটিয়েছিল নিউমোনিয়া। হয়তো হৃদরোগ ছিল আগে থেকে, হাসপাতালে আইসিইউ ও কেবিনে দীর্ঘবাস- হয়তো থাকতে পারে এসব জটিলতার জন্য।

সে অঞ্চলে স্বাভাবিক কাজকর্ম শুরু করার আয়োজন, ভাইরাস বোধের বিধিনিষেধ শিথিল করা হচ্ছে তখন এমন বয়স্ক লোকের ভাইরাস সংক্রমধণ কি মনে করিয়ে দেয় যারা সংক্রমণপ্রবণ তাদের প্রতি ভাইরাসের নজর এতটুকু কমেনি।

অনেকে বলছেন, ভ্যাকসিন না আসা পর্যন্ত কেউ নিরাপদ নয়। হয়তো হাসপাতালবাস ছিল কঠিন সময়, দ্বিতীয়বার আবার হাসপাতাল। তাই আইসিইউতে।

এবার নার্স এসে বলল, ইনটুরেশন করতে হবে। একটি নল গলার মধ্য দিয়ে নিচে দিকে চলে যাবে, এরপর ভেন্টিলেটরে সংযোগ জীবন-মৃত্যু অবস্থা হতে পারে, কোনো রকমে ফোনে কথা বলতে হলে স্ত্রী ও সন্তানদের সেই আলাপ বেদনামিশ্রিত। গাল বেয়ে ঝরছে চোখের পানি। দুঃস্বপ্ন যেন।

এরপর রোলার কোস্টারে চলল জীবনকাল, এই ভালোই এই মন্দ, হৃদযন্ত্র, রক্তচাপ, কোস্টবদ্ধতা আর রক্তক্ষরণ চলল। পরিবারের লোকজনকে ধারেকাছে আসতে দেয়া হবে না।

এমনকি মেডিকেল স্টাফও সবাই আসে না। ইউটিউব ভিডিও ফেসটাইম চ্যাট না থাকলে একাকিত্ব কাটে না। এভাবে ৫৪ দিন বাস: এর পর ছুটি।

দীর্ঘদিন বাস, ৫৪ দিন যে ওষুধ গ্রহণ করা হয়েছিল সে তালিকা দেখা, আর অর্থ প্রদান। তবে ভালো হয়ে ঘরে ফিরে আসা হল।

দেশে সব খুলে যাচ্ছে, শুধু স্কুল খোলা বাকি, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা ভেবে কাজ করছেন, তবে ইতিহাসে মারীদের বৃত্তান্তে দেখা যায় দ্বিতীয় ঢেউ এসেছে, তাই সতর্ক হতে হবে সবাইকে, তৈরি থাকতে হবে।

হয়তো সার্স কোভিডের পরিবর্তিত রূপ, আক্রমণ করবে দ্বিতীয়বার। হতে হবে সাবধানী নজরদার।
নতুন করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছেই, থামছে না। সে জন্য বিজ্ঞানী, চিকিৎসক ও জনসাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেন, কোভিড-১৯ থেকে যারা সেরে উঠলেন তাদের সাবধানী হতে হবে।

কেউ নিশ্চিত নন ক’দিন থাকবে ইমুনিটি। বিজ্ঞানীরা সত্যি এ নিয়ে ভাবেছন আর বিজ্ঞানী টিকা আবিষ্কারের ব্যাপারে এ প্রশ্নটির উত্তর খোঁজার ব্যাপার তো রয়েছে। জনস্বাস্থ্য গাইডলাইন তৈরি করতে লাগে।

তাই ডাক্তাররা রোগীদের বলছেন শারীরিক বিচ্ছিন্নতা বজায় রাখতে ও মাস্ক পরতে।

 

সুত্রঃ যুগান্তর