১৩ ডিসেম্বর লালপুর হানাদারমুক্ত দিবস পালিত

লালপুর প্রতিনিধি:

১৩ ডিসেম্বর নাটোরের লালপুর হানাদারমুক্ত দিবস । ১৯৭১ সালের এই দিনে পরাজিত পাক হানাদার বাহিনী লালপুর থেকে বিতাড়িত হয় । এ উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধা আকিয়াব হোসেনের সভাপতিত্বে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে নাটোরের লালপুর শ্রীসুন্দরী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

এতে বক্তব্য দেন বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা এনামুল হক। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মুল বানীন দ্যুতি । বিশেষ অতিথি ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা মাজদার হোসেন, আব্দুর রাজ্জাক মালিথা, আজবার হোসেন।

এর আগে লালপুরে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে র‌্যালী ও কবিতাবৃত্তি আয়োজন করা হয় ।

জানা যায়, ১৯৭১ সালে ১৭ এপ্রিল দুয়ারিয়া ইউনিয়নের রামকান্তপুর গ্রামে পাকবাহিনী হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে ১৮ জনকে গুলি করে হত্যা করে । ৩০ মার্চ ময়না সম্মুখ যুদ্ধে মুক্তি বাহিনী পাক হানাদারদের ২৫ নং রেজিমেন্ট ধ্বংস করে দেয় । সেদিন প্রায় ৮০ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ও ৩২ জন আহত হয় । ১২ এপ্রিল ধানাইদহ ব্রিজের নিকট প্রতিরোধ যুদ্ধে ১০/১২ জন শহীদ হন । ৫ মে পাকবাহিনী ও রাজাকাররা নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলস্ লিঃ এলাকা ঘেরাও করে মিলের প্রশাসকসহ দু’শ শ্রমিক. কর্মচারী ও কর্মকর্তাকে চিনিকল এলাকার পুকুর পাড়ে দাঁড় করিয়ে ব্রাশ ফায়ার করে হত্যা করে । ২৯ মে খান সেনাদের একটি দল চংধুপইলের পয়তারপাড়া গ্রামে নদীর পাড়ে ধরে এনে ৫০ জনেরও অধিক নিরীহ লোককে গুলি করে হত্যা করে হত্যা করে । ২৫ জুলাই ২২ জনকে লালপুর নীলকুঠির নিকটে হত্যা করে এবং ২৬ জুলাই একই স্থানে চারজনকে হত্যা করে । ২০ জুলাই রামকৃষ্ণপুর গ্রামে অগ্নিসংযোগ ও পাঁচজনকে হত্যা করে, ৩০ জুলাই বিলমাড়ীয়া হাট ঘেরাও করে বেপরোয়া গুলি বর্ষণ করে ৫০ জনেরও অধিক লোককে হত্যা করে । ৩১ জুলাই বাথানবাড়ীতে ৬-৮ জনকে হত্যা করে পাকিস্তানি সেনারা ।

১৯৭১ সালে ২৫ মার্চ থেকে ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাক বাহিনী ও রাজাকারদের সহায়তায় লালপুরের বিভিন্ন এলাকায় হত্যা, নির্যাতন, অগ্নিকাণ্ড ও লুটতরাজ চালায় । ১৩ ডিসেম্বর খান সেনারা ঝটিকা আক্রমন করে মহেশপুর গ্রামে ৩৬ জনকে গুলি করে পালিয়ে যায় । এর মাধ্যমে পাক হানাদার মুক্ত হয় লালপুর ।

স/শা