হেফাজতের হরতালের প্রতিবাদে রাজশাহী মহানগর আ’লীগের অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশব্যাপী হেফাজত ইসলামের ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ড, সরকারী স্থাপনা ও গণপরিবহনে অগ্নিসংযোগ, জ্বালাও পোড়াও ও অযৌক্তিক হরতালের প্রতিবাদে রবিবার সকাল সাড়ে ৯টায় কুমারপাড়াস্থ দলীয় কার্যালয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের নেতৃবৃন্দ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।

এরপর সকাল সাড়ে ১১টায় দলীয় কার্যালয় থেকে এক বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে দলীয় কার্যালয়ে এসে শেষ হয়। মিছিল শেষে সেখানে সংক্ষিপ্ত পথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। পথসভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের সভাপতি ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের সাধারণ সম্পাদক মো. ডাবলু সরকার।

পথসভায় এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী পালন করার পরপরই ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করেছি। আমরা মাহেন্দ্রক্ষণের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশের মানুষ যখন স্বাধীনতার এই সুবর্ণ জয়ন্তীতে দেশের দৃশ্যমান উন্নয়নে আনন্দিত ও উল্লাসিত, ঠিক তখনই বিএনপি-জামায়াতের মদদপুষ্ট হেফাজতে ইসলাম দেশের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের নাশকতা করার চেষ্টা করছে। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে বিদেশের বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকার প্রধান এসেছেন আমাদের দেশে। অনেকে ভিডিও কনফারেন্সে বক্তব্য রেখেছেন। বাংলাদেশের বন্ধুরাষ্ট্র ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে আসায় দেশের উন্নয়নের বেশ কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। যা দেশের উন্নয়নকে তরান্বিত করবে।

তিনি আরও বলেন, জামায়াত-বিএনপি পাকিস্তানের অর্থায়নে হেফাজতকে লেলিয়ে দিয়ে সারাদেশে তান্ডবের রাজত্ব কায়েম করতে চায়। দেশের উন্নয়নের অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্থ করতে চায়। তাদের প্রভুদের খুশী করতে চলমান উন্নয়ন কার্যক্রমগুলোকে বাধাগ্রস্থ করাই তাদের লক্ষ্য। কিন্তু তাদের এই দুঃস্বপ্ন দেশের মাটিতে কখনও সফল হবে না। আমরা তাদের একাত্তরে পরাজিত করেছি। সেই পরজায়ের গ্লানি এখনও তারা ভুলতে পারে নি। সেই পরাজয়ের শোধ নিতে তারা দেশ ধ্বংসের খেলায় মেতে উঠেছে।

তিনি বলেন, হেফাজত ইসলাম ইসলামের কথা বলে কিন্তু তাদের কর্মকান্ড ইসলাম সমর্থন করে না। তারা ইসলামের নামে রাষ্ট্রের সম্পদ সরকারী-বেসরকারী গণপরিবহনে অগ্নিসংযোগ ও জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমকে ব্যবহার করে মসজিদের পবিত্রতা ধ্বংস করছে। রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতি সাধন করছে এবং জীবনযাত্রাকে হুমকির মুখে ঠেলে দিতে চাই। তাদের এহেন কর্মকান্ড রাজপথেই রাজনৈতিক ভাবে তাদের সমুচিত জবাব দেওয়া হবে।

এসময় মো. ডাবলু সরকার বলেন, বাংলাদেশের শান্তিময় পরিবেশকে যারা অশান্ত করার চেষ্টা করছে, তারা কখনও বঙ্গবন্ধুকে, কখনও রাষ্ট্রধর্ম ইসলামকে আবার কখনও আমাদেরকে হিন্দু বানানোর পাঁয়তারায় লিপ্ত থেকে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চাই। আমরা জানি না, কি কারণে তারা আজ সরকার পতনের আন্দোলন করছে। তারা দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে বিশ্বাস করে না, জনগণকে নিয়ে কথা বলে না, যেনতেন প্রকারে শেখ হাসিনা সরকারের পতন চায়। এটিই তাদের লক্ষ্য, যা কখনও পূরণ হবে না।

তিনি আরও বলেন, আমরা দেখেছি বঙ্গবন্ধুর কন্যা, দেশরতœ শেখ হাসিনাকে ২০বার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিলো। সর্বশেষ ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে শেখ হাসিনা সহ গোটা আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিলো। কিন্তু পরম করুণাময়ের অশেষ কৃপায় আমাদের প্রিয় নেত্রী প্রাণে বেঁচে যায়। এরা বঙ্গবন্ধুকে ভয় পায়, এরা মুক্তিযুদ্ধকে ভয় পায়, এরা বাঙ্গালীর সংস্কৃতিকে ভয় পায়। আর ভয় পায় বলেই এদের প্রদান টার্গেট বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যে আঘাত করে তারা দেশের সার্বভৌমত্বকে আঘাত করেছে। এরা দেশের সম্পদ ও জানমালের ক্ষতি সাধান করছে, এরা আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের শত্রু। এদের আর ছাড় দেওয়া যায় না, রাজপথে এদের দাঁত ভাঙ্গা জবাব দেওয়া হবে।

তিনি উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে বলেন, অবিলম্বে এই পাষান্ডদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা নওশের আলী, বদরুজ্জামান খায়ের, যুগ্ম সম্পাদক মোস্তাক হোসেন, আলহাজ্ব মোঃ আসাদুজ্জামান আজাদ, আহ্সানুল হক পিন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. আসলাম সরকার, মীর ইসতিয়াক আহম্মেদ লিমন,নগর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তৌরিদ আল মাসুদ রনি, কৃষি সম্পাদক মীর তৌফিক আলী ভাদু, মহিলা সম্পাদিকা ইয়াসমিন রেজা ফেন্সি, ত্রাণ ও সমাজকল্যান সম্পাদক ফিরোজ কবির সেন্টু, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মকিদুজ্জামান জুরাত তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক জিয়া হাসান আজাদ হিমেল, শিল্প ও বানিজ্য সম্পাদক ওমর শরীফ রাজিব, শ্রম সম্পাদক আব্দুস সোহেল, সাংস্কৃতিক সম্পাদক কামারউল্লাহ সরকার কামাল, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা সম্পাদক ডাঃ ফ ম আ জাহিদ, উপ-দপ্তর সম্পাদক পংকজ দে, উপ-প্রচার সম্পাদক সিদ্দিক আলম, সদস্য জাহির উদ্দিন তেতু, আশরাফ উদ্দিন খান, সৈয়দ হাফিজুর রহমান বাবু, বাদশা শেখ, ইসমাইল হোসেন, আলিমুল হাসান সজল, মোখলেশুর রহমান কচি, আশীষ তরু দে সরকার অর্পণ, বোয়ালিয়া (পূর্ব) থানা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শ্যামল কুমার ঘোষ, নগর কৃষক লীগ সভাপতি রহমতউল্লাহ সেলিম, সাধারণ সম্পাদক সাকির হোসেন বাবু, নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আব্দুল মোমিন, নগর ছাত্রলীগ সভাপতি নূর মোহাম্মদ সিয়াম, সাধারণ সম্পাদক ডাঃ সিরাজুম মুবিন সবুজ সহ নেতৃবৃন্দ।

স/রি