মঙ্গলবার , ৭ মে ২০২৪ | ১৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরীর খবর
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

তোর কোন পায়ে গুলি করব, ডান পায়ে না বাম পায়ে?’

Paris
মে ৭, ২০২৪ ৯:২৩ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক :

নিজ কক্ষে তিন ঘণ্টা ধরে আটকে রেখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রদলের এক নেতা ও তার বন্ধুকে মারধর-নির্যাতনের পাশাপাশি পিস্তল দেখিয়ে পায়ে গুলি করার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিবসহ কয়েক নেতার বিরুদ্ধে।

গতকাল সোমবার (৬ মে) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখ্শ হলের ২১৫ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগীরা হলেন রাবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নাফিউল ইসলাম জীবন ও তার বন্ধু ইউনুস খান। নাফিউল বর্তমানে শাখা ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন। তারা দুজনই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

অভিযোগ ওঠা ছাত্রলীগ নেতারা হলেন, শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব, সহ-সভাপতি মনু মোহন বাপ্পা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদিকুল ইসলাম সাদিক এবং সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদ হাসান সোহাগ।

জানতে চাইলে ভুক্তভোগী নাফিউল ইসলাম বলেন, সোমবার রাতে আমি ও আমার বন্ধু মিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের তাপসী রাবেয়া হলের সামনে বাইক নিয়ে দাঁড়িয়েছিলাম। এ সময় রাবি শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মনু মোহন বাপ্পা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদিকুল ইসলাম সাদিক এবং সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদ হাসান সোহাগ আমাদের পেছনে এসে দাঁড়ায়। তাদের দেখে আমরা ক্যাম্পাস থেকে বাইক নিয়ে চলে আসছিলাম। আসার পথে বিশ্ববিদ্যালয়ের পশ্চিম পাড়া আবাসিক এলাকায় তারা আমাদের পথ রোধ করে তাদের বাইকে আমাকে তুলে নেয়। এরপর তারা আমাকে মাদার বখ্শ হলের ২১৫ নম্বর কক্ষে নিয়ে যায়।

আমাকে নিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব ওই কক্ষে আসেন। এ সময় সে আমাকে দলীয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং এক পর্যায়ে সে আমাকে এলোপাতাড়ি চড়-থাপ্পড় ও মাথায় কিল-ঘুষি দেন। এরপর সে একটা পিস্তল বের করে। পিস্তলটিতে তিনটা গুলি লোড-আনলোড করতে করতে আমাকে বলে, তোর কোন পায়ে গুলি করব, ডান পায়ে না বাম পায়ে? এমন করতে করতে সে একবার শুট করে। তবে গুলি তখন আনলোড করা ছিল। এছাড়া তারা জোরপূর্বক আমার মোবাইল চেক করে। পরে রাত ১টার দিকে তারা আমাকে সহকারী প্রক্টরদের হাতে তুলে দেন।

শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, দেশ থেকে ধ্বংস হয়ে যাওয়া গণতন্ত্র আবার প্রতিষ্ঠিত করতে আমরা শত বাধা নির্যাতন সহ্য করে লড়াই চালিয়ে যাবো। একা পেয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ছাত্রদলের কর্মীকে নির্যাতন করে সন্ত্রাসীদের সংগঠন ছাত্রলীগ কাপুরুষের পরিচয় দিয়েছে। সেই সাথে ছাত্রলীগ প্রকাশ্য আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ক্যাম্পাসে ছাত্রদলসহ সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিনিয়ত আহত এবং নির্যাতন করছে। আর এতে রাবি প্রশাসন নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় আমি প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করছি।

অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে রাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব বলেন, ওই ছেলেকে কোনো ধরনের মারধর, হুমকি কিংবা মানসিক নির্যাতন করা হয়নি। ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা এর আগে ক্যাম্পাসের একাডেমিক ভবনগুলোয় তালা লাগিয়ে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করেছে। আমরা তাই সন্দেহজনকভাবে তাকে নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। পরে তাকে প্রক্টরিয়াল টিমের কাছে হস্তান্তর করেছি।

পিস্তল দেখিয়ে পায়ে গুলি করার হুমকি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা পুরোপুরি ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। কারণ অস্ত্রের রাজনীতি ছাত্রদল করে, এটা ছাত্রলীগ করে না। ছাত্রলীগের হাতে কলম থাকবে, অস্ত্র না।

সার্বিক বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, ফোন পেয়ে আমি ওই হলে দুজন সহকারী প্রক্টরকে পাঠাই। তারা সেখান থেকে তাদেরকে উদ্ধার করে বিনোদপুরে পৌঁছে দেয়। আর এখন পর্যন্ত এই ঘটনায় মারধর কিংবা নির্যাতনের আমি কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। মারধরের ঘটনার প্রমাণ সাপেক্ষে অভিযোগ করলে আমি বিষয়টি দেখব।

সর্বশেষ - রাজশাহীর খবর