হাড় কাঁপানো শীত উপেক্ষা করে চলছে বোরো রোপণ

নিজস্ব প্রতিবেদক :

হাড়কাঁপানো কঁনকঁনে শীতের ভিতর বোরো চাষের জন্যে ঝুঁকে পড়তে শুরু করেছেন বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষকরা। নাওয়া খাওয়া বাদ দিয়ে ভোর থেকে বিকেল পর্যন্ত কনকনে শীতল ঠান্ডা পানিতে নেমে বোরো ধানের বীজ তুলে সেই বীজ জমিতে রোপণ করছেন শ্রমিকরা। পাশাপাশি বোরো চাষের জন্যে প্রস্তুত করা হচ্ছে বোরো ধানের জমি। ভোর রাত থেকে শুরু করে দুপুর গড়িয়ে বিকেল পর্যন্ত গরুর লাঙ্গল ও ট্রাক্টর দিয়ে বোরো জমি চাষের জন্য হাল চাষ করে প্রস্তুত করছেন কৃষকরা।

জানা গেছে,তানোরে আমন ধান কাটার পরপরই আলু রোপনের জন্য পড়ে হিড়িক। এবার অন্য বছরের তুলনায় তানোর উপজেলা জুড়ে তিনগুণ বেশি জমিতে আলু চাষ হয়েছে। আলু উত্তোলনের পরে সেইসব জমিতেও চাষ করা হবে বোরো ধান। তবে যারা আলু চাষ করেননি তাঁরা আগাম সেইসব জমিতে বোরো চাষের জন্য এখন থেকে নেমে পড়েছেন। ভোর থেকে কনকনে ঠান্ডার মধ্যে শ্রমিকরা চারা রোপণ করছেন বোরো জমিতে। তানোর উপজেলার বিভিন্ন বোরো জমির মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, বোরো চাষের জন্য এখন থেকেই আগাম বোরো চাষের জন্য জমি হালচাষ করা সহ বোরো ধানের বীজ রোপণ করছেন কৃষকেরা।

তানোর পৌর এলাকার গুবির পাড়া গ্রামের কৃষক আবু রহমান জানান,তিনি এবার ২৫বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করবেন। ইতিমধ্যে সবার আগে বিলকুমারী বিলে পানি নিষ্কাসনের সাথে সাথে তিনি ৯বিঘা জমিতে বোরো ধান রোপণ করতে শুরু করেছেন। তিনি আমন ধানের ফলন ভালো পেয়েছেন। তাই এবার বোরো চাষের জন্যে একটু আগেই জমি চাষের জন্যে প্রস্তুত করা সহ বোরো রোপণ করছেন। তবে তিনি বলেন, এবার প্রচন্ড ঠান্ডা তাই কৃষি শ্রমিকরা তাদের মজুরি একটু বেশি নিচ্ছেন। তবুও কৃষক কিছুই মনে করছেন না। কারন যে পরিমাণ ঠান্ডা তাতে করে বোরো চাষের জন্য শ্রমিক পাওয়ায় কষ্টকর বলে জানান।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার আমন ধানের ফলন ভালো হয়েছে। ধানের দামও ভালো পেয়েছেন কৃষকরা। হেক্টর প্রতি ৭মেঃ টন করে ফলন হয়েছে। সব হিসেব করে ২৫ হাজার ১৫৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের ফলন হবে ১ লক্ষ ৯০ হাজার ৯০০ মেঃ টন। যা উপজেলার জনসাধারণের চাহিদার তুলনায় কয়েকগুণ বেশি। তবে এবার বোরো আবাদ হবে সবচেয়ে বেশি। কিন্তু কি পরিমাণে বোরো চাষ হবে তা জানাতে পারেনি কৃষি অফিস।

তানোর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহম্মেদ জানান, এবার আমনের ফলন ভালো পেয়েছে কৃষকরা। সেই জন্য বোরো চাষের জন্য বেশি ঝুঁকছে কৃষকরা। আশা করা যাচ্ছে আকাশের আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবছরও বোরো চাষের ফলন ভালো হবে বলে মনে করছেন তিনি।