হতদরিদ্রের চাল নিয়ে বাগমারা প্রশাসনের চালবাজি

নিজস্ব প্রতিবেদক:
তালিকা অনুমোদন হওয়ার পরেও রাজশাহীর বাগমারার গনিপুর ইউনিয়নের হতদরিদ্ররা ১০ টাকা কেজিতে চাল কিনতে পারছেন না। উপজেলার সবগুলো ইউনিয়নে এই কার্যক্রম শুরু হলেও উপজেলার এই ইউনিয়নটিতে শুরু করা হয়নি। বিভিন্ন অজুহাতে খাদ্যবিভাগ চাল বিক্রির জন্য ডিও দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করা হয়। এতে করে চাল বিক্রি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। অভিযোগ করা হয় চাল নিয়ে ডিলার ও প্রশাসন চালবাজি শুরু করেছে।

 

খাদ্যবান্ধব কার্যক্রমের গণিপুর ইউনিয়ন কমিটির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ইউনিয়নের ৯০০জন হতদরিদ্রের তালিকা প্রস্তুত করে উপজেলা খাদ্য অফিসে গত ৯ অক্টোবর জমা দেওয়া হয়েছে। এর আগে তালিকা তৈরি নিয়ে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের বিরোধ দেখা দেয়। পরে আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে তালিকা ভাগাভাগি করা হয় বলে কমিটির সদস্য ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান জানিয়েছেন। তালিকা প্রস্তুত কমিটির ১৭জন সদস্য গত ২৭ সেপ্টেম্বর তা অনুমোদন করেন। এর পর কমিটির সভাপতি উপজেলা শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার মুহাম্মদ আবদুল মুমীত গত ৯ অক্টোবর তা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কাছে জমা দেন। তিনি অনুমোদিত তালিকা জমা দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।

গত ৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কুড়িগ্রামে ১০ টাকা কেজিতে চাল বিক্রি কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। বাগমারার ১৬টি ইউনিয়নে তালিকা তৈরিতে জটিলতার কারণে গত ৭ অক্টোবর থেকে চাল বিক্রি শুরু হয়। তবে গণিপুর ইউনিয়নে এখনো শুরু করা যায়নি।
প্রশাসনের চাল নিয়ে এই ধরণের কর্মকাণ্ডে হতদরিদ্ররা বিপাকে পড়েছেন। তারা চাল ফেরত যাওয়ার আশংকা করছেন।

গনিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুল ইসলাম জানান, খাদ্যবিভাগ বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে চাল বিক্রি শুরু করছে না। এতে করে সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি ব্যাহত হওয়ার আশংকা রয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, চাল নিয়ে ডিলার ও প্রশাসন চালবাজি শুরু করেছে।

কমিটির উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মনোনীত সদস্য মোজাম্মেল হক ও বেলাল হোসেন বলেন, তালিকা অনুমোদনের পরেও কেন চাল দেওয়া হচ্ছে না। চাল কেনার জন্য তালিকাভূক্ত হতদরিদ্ররা বার বার খোঁজ খবর নিলেও চাল বিক্রি শুরু হয়নি। প্রশাসনের এমন উদ্দেশ্যমূলক কর্মকাণ্ডে তাঁরা বিস্মিত।

ইউনিয়নের ডিলার ইউসুফ আলী সরকার ও শিমুল জানান, তাঁরা গুদাম থেকে চাল উত্তোলনের জন্য এখনো ডিও  পাননি। এই কারণে তিনি বিক্রি করতে পারছেন না। পেলেই বিক্রি শুরু করা হবে। এই বিষয়ে প্রতিনিয়ত খাদ্য বিভাগে খোঁজ খবর নিয়েও কোনো ফলাফল পাননি।

বাগমারার উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত খাদ্যনিয়ন্ত্রক পারভীন অনুমোদিত তালিকা পাওয়ার কথা স্বীকার করে জানান, অভিযোগের তদন্ত করা হবে। এর পর প্রতিবেদন দেওয়া হবে।

বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাছরিন আক্তার সিল্কসিটি নিউজকে জানান, তালিকায় নাম থাকা কয়েক জনের বিরুদ্ধে গত বুধবার লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই সর্ম্পকে তদন্তের পর চাল দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।

স/শ