হঠাৎ রাজশাহী নিউ মার্কেটে নিরাপত্তা কর্মী প্রত্যাহার রাসিকের, ভোগান্তিতে ব্যবসায়ীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক:
হঠাৎ করেই রাজশাহী নিউ মার্কেট ও হকার্স মার্কেটের নিরাপত্তাকর্মী প্রত্যাহার করেছে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন (রাসিক)। আর নিরাপত্তা কর্মী না থাকায় দোকানের নিরাপত্তা নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ব্যবসায়ীরা।

বুধবার রাতে দোকান বন্ধ করার সময় এ খবর জানতে পেরে তাদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। তবে আনেক দোকান মালিকই আবার এই বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন। প্রতি দিনের মতোই তারা দোকান বন্ধ করে বাড়ি চলে গেছেন।

জানা গেছে, গত মঙ্গলবার রাতে নিউ মার্কেটের পাশে হাত ধোয়া নিয়ে কিছু মার্কেটের দোকান মালিকের সাথে সুজন নামে এক নিউ মার্কেটের বাইরের নিরাপত্তাকর্মীর সাথে কথা কাটাকাটি ও ধাক্ক-ধাক্কি হয়। এক পর্যায়ে এ বিষয়টি তাদের সুপার ভাইজার আলমকে জানানো হলে তিনি রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেট সমর কুমার পালসহ সেই রাতেই নিউ মার্কেটে উপস্থিত হন। বিষয়টি নিয়ে রাসিকের ম্যাজিস্ট্রেট রাতেই সমাধান করে দেন। তবে হঠাৎ করেই বুধবার সাকালের পর থেকেই নিউ মার্কেটে কোন নিরাপত্তা কর্মী থাকবে না বলে রাসিক থেকে জানানো হয়েছে বলে নিরাপত্তাকর্মীরা জানাই। আর এমন সিদ্ধান্তে কোন আগাম নোটিশ না দিয়েই রাসিক থেকে নিরাপত্তা কর্মী উঠিয়ে নেওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ব্যবসায়ীরা।

এ বিষয়ে মাল্টি ভিউ কম্পিউটারস এর প্রোপাইটর ওয়ালিউল ইসলাম শুভ্র সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, গত কালকের ঘটনায় রাসিকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আসার পর সবার সামনে বিষয়টি সমাধান হয়ে যায়। তবে হঠাৎ করে আজ কোন গার্ড নেই। এত বড় মার্কেটে কোন গার্ড থাকবে না, তাহলে দোকান গুলোর নিরাপত্তা কে নিবে?

নিউ মার্কেটে কোন কিছু হলেই কমিটির পক্ষ থেকে মাইকিং করে তা জানানো হয়। আর এতবড় ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর নিউ মার্কেট কমিটি থেকে এখন পর্যন্ত কোন দোকান মালিককে এ বিষয়ে কিছু জানানো হয় নি। কোন ক্ষতি হয়ে গেলে এর দায় ভার কে নিবে?


আরেক ব্যবসায়ী আলপনা টেইলার্স এর প্রোপাইটর মোশারফ হোসেন বলেন, নিউ মার্কেটে কোন গার্ড নেই এই বিষয়টা তার জানাই নেই। বিষয়টা জানার পর তিনি ক্ষোভে প্রকাশ করে বলেন, আজ যদি দোকানে চুরি হয়ে যায় তাহলে কি হবে? নিরাপত্তা কোথায় আমাদের। আর কমিটিও তো আমাদের এ বিষয়ে কিছু জানাই নি।

এদিকে অন্যান্য ব্যবসায়ীরা ক্ষোভ প্রাকাশ করে বলেন, এত বড় মার্কেট যেখানে ৮টি গেট ও প্রায় ৪০০টি দোকান রয়েছে। যেহুতু এটি সরকারি প্রতিষ্ঠান তাই রাসিকের ২টি নিরাপত্তা কর্মী দিয়ে দেখাশুনা করা হয়ে থাকে। তবে কোন আগাম নোটিশ বা কোন কিছু না জানিয়েই এভাবে গার্ড সরিয়ে ফেলায় এখন আমাদের কোটি টাকার মালামালের নিরাপত্তা কে দিবে? কোন ক্ষতি হয়ে গেলে এর দায়ভার কে নিবে?

আর নিউ মার্কেট কমিটি মার্কেটের কোন ব্যবসায়ীর সাথে এ বিষয়ে কথা না বলায় তারা ক্ষোভ প্রকাশ তারা করে বলেন, আমাদের বিষয়টা এখন পর্যন্ত কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয় নি। আনেক ব্যবসায়ী প্রতিদিনের মত দোকান বন্ধ করেই বাড়ি চলে গেছেন। কমিটি যেহুতু বিষয় আগেই জেনেছে, সেক্ষেত্রে আমাদের আগে জানানো হলেই আমারা নিরাপত্তার কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতাম।

বর্তমানে মন কে সন্তনা দিয়ে রাজশাহী নিউ মার্কেটের কয়েকজন ব্যবসায়ী বিভিন্ন গেটে দড়ি দিয়ে আটকে রেখে গেছেন।

এবিষয়ে নিউ মার্কেট কমিটির সাধারন সম্পাদক মঙ্জুর হোসেন চুমকো সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, সকালে গার্ড এসে আমাকে বলে, আমাদের প্রত্যাহার করে নিয়েছে সিটি কর্পোরেশন থেকে। তারা নিউ মার্কেটে গার্ড দিবে না। তারপর বিষয়টি নিয়ে আমি বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করার চেষ্টা করি, ১৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরকেউ বিষয়টি জানাই। তারা আশ্বাস দেই, কিন্তু সারাদিন পার হলেই এর কোন সুরাহ হয় নি।

তিনি আরো বলেন, ৬২ সালের পর থেকে কোন দিন গার্ড বিহীন, নিরাপত্তাহীন অবস্থায় রাজশাহী নিউ মার্কেট থাকে নি। কিন্তু আজ নিউ মার্কেটের প্রত্যাকটি গেটের তালা বিহীন, নিরাপত্তাহীনতায় এই মার্কেট। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কি করনে এই কাজ করলো বলতে পারবো না। তারা কিভাবে বিনা নোটিশে কোন আলোচনা ছাড়া গর্ড প্রত্যাহার করলো জানি না।

আগামী কাল আমরা সকল ব্যবসায়ীরা আলোচনা করে সিটি কর্পোরেশনে মেয়রের কাছে বিষয়টি জানাবো বলেও তিনি বলেন।

স/অ