স্বাধীনতা চায় না নিউ ক্যালিডোনিয়ার মানুষ

গত ১৭০ বছর ধরে ফ্রান্সের অধীনে আছে নিউ ক্যালিডোনিয়া। দক্ষিণ প্রশান্তমহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জের মানুষ স্বাধীনতা চান না। তাঁরা ফ্রান্সের অধীনেই থাকতে চান। ফ্রান্সের অধীনে থাকা এই দ্বীপপুঞ্জের মানুষ গণভোটে স্বাধীনতার বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন।

বিশ্বের সর্বত্র মানুষ যখন বরাবর বিদেশি শক্তির অধীনতা থেকে মুক্তি পেতে দীর্ঘ সংগ্রাম করেছে, কখনো সশস্ত্র লড়াই করেছে, স্বাধীনতা চেয়েছে সেখানে নিউ ক্যালিডোনিয়ার মানুষ উল্টো পথে হাঁটল। যদিও ফ্রান্সের অধীনতা থেকে মুক্তির জন্য এখানকার আদিবাসিন্দা কানাক সম্প্রদায়ের মানুষরাও রীতিমতো লড়াই করেছেন। কিন্তু গণভোটে ৫৩ শতাংশের বেশি মানুষ ফ্রান্সের অধীনে থাকাই পছন্দ করলেন।

এই দ্বীপপুঞ্জে আছেন এক লাখ ৮০ হাজার মানুষ। তার মধ্যে ৮৫ শতাংশ মানুষ গণভোটে অংশ নিতে চেয়ে নাম নথিভুক্ত করেছিলেন।

কানাক সম্প্রদায়ের মানুষদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ, তাঁদের প্রতি বৈষম্যমূলক ব্যবহার করা হয়। তাঁরাই মূলত স্বাধীনতাপন্থী। কিন্তু যে ইউরোপীয়রা এখানে এসে থেকে গেছেন, তাঁদের বংশধররা স্বাধীনতার বিপক্ষে।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়্যেল মাক্রোঁ গণভোটের ফলাফলকে স্বাগত জানিয়েছেন। ভোটের আগেই তিনি বলেছিলেন, নিউ ক্যালিডোনিয়া চলে গেলে ফ্রান্সের সৌন্দর্য কমবে। মাক্রোঁ বলেছেন, ‘ভোটদাতারা তাঁদের রায় দিয়ে দিয়েছেন। তাঁরা ফ্রান্সের সঙ্গে থাকতে চান। দেশের প্রধান হিসাবে আমি এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি। আমি তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞ।’

তবে এই গণভোটে স্বাধীনতার দাবি খারিজ হয়ে গেলেও একটা উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়েছে। স্বাধীনতাকামীদের সংখ্যা বেড়েছে। এটা অঞ্চলটিতে স্বাধীনতার দাবিতে দ্বিতীয় গণভোট। এর আগেও এই দাবি খারিজ হয়েছিল। তবে তার তুলনায় এ বার অনেক বেশি মানুষ স্বাধীনতার পক্ষে ভোট দিয়েছেন। অস্ট্রিয়া ও ফিজির মধ্যে থাকা এই দ্বীপপুঞ্জে ২০২২ সালে আবার গণভোট হবে।

১৮৫৩ সালে নেপোলিয়ান থ্রি এই দ্বীপপুঞ্জ অধিকার করেন। তারপর সেখানে বন্দিদেরই পাঠানো হতো। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর অবস্থার পরিবর্তন হয়। ১৯৫৭ সালে কানাকদের নাগরিকত্ব দেয়া হয়। বেশ কিছুটা স্বশাসন তাঁরা উপভোগ করেন। তবে আর্থিক দিক থেকে তাঁরা ফ্রান্সের দেয়া ১৩০ কোটি ইউরোর উপর নির্ভরশীল।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ