সাড়ে ৩ বছরেও অগ্রগতি নেই চার বছরের প্রকল্পের

রাজউক জানায়, ১৩ হাজার ৭২০টি ফ্ল্যাট নির্মাণে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পের পুরো টাকাই বিনিয়োগ করবে বিএনজি। প্রতিষ্ঠানটি বিনিয়োগের এই টাকা জোগাড় করতে বিদেশি ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার চেষ্টা করছে। বিনিয়োগের টাকা রাজউক পরে কিস্তিতে পরিশোধ করবে।

নির্মাণকাজ শেষ হলে এটি হবে দেশের অন্যতম প্রধান বহুতল ভবনবিশিষ্ট আবাসন। রাজউকের কর্মকর্তারা বলছেন, করোনার কারণে কাজ শুরু করতে বিলম্ব হচ্ছে। আগামী বছরের জানুয়ারি মাসে বিএনজির প্রতিনিধিরা দেশে আসতে পারেন। তখন তাঁদের সঙ্গে বৈঠকে সময়সীমা ঠিক করা হবে।

প্রকল্পের ভবনগুলো ইন্ডাস্ট্রিয়াল বিল্ডিং সিস্টেমে তথা আইবিএস পদ্ধতিতে নির্মিত হবে। এর মানে ভবনগুলোতে খুঁটি বা কলাম থাকবে না। ভবনের প্রতিটি দেয়ালই খুঁটির কাজ করবে। এ জন্য প্রকল্পের উল্লেখযোগ্য সামগ্রী আমদানি করতে হবে। যার আমদানি শুল্ক অত্যন্ত বেশি। প্রকল্পের দায়িত্ব পাওয়ার পর আমদানি শুল্ক মওকুফ করতে রাজস্ব বোর্ডে আবেদন করা হয়েছে। রাজস্ব বোর্ড এখনো শুল্ক মওকুফের বিষয়টির অনুমোদন দেয়নি। যথাসময়ে কাজ না হওয়ার এটা অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন রাজউকের পদস্থ কর্মকর্তারা।

প্রকল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন, ১৬০ একর জমিতে নেওয়া এই প্রকল্পের মাত্র ৩৩ শতাংশ ভূমিতে বহুতল ভবন নির্মাণ করা হবে। বাকি ৭৭ শতাংশ জায়গা উন্মুক্ত থাকবে। প্রকল্পের মাধ্যমে ১৪০০ বর্গফুটের ৯ হাজার ১২০টি, ১৬০০ বর্গফুটের ২ হাজার ৫৭৬টি, ২২০০ বর্গফুটের ২ হাজার ২৪টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে।

প্রতিটি ফ্ল্যাটের নির্মাণ ব্যয় কত হবে এবং কত টাকায় তা বিক্রি হবে—এ বিষয়টি এখনো ঠিক হয়নি বলে জানিয়েছেন পাঁচ মাস আগে প্রকল্পের পরিচালকের দায়িত্ব পাওয়া রাজউকের নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার মো. ওয়াহিদ সাদিক। বছর বছর নির্মাণসামগ্রীর দাম বাড়লেও প্রকল্পের ব্যয় বাড়বে না বলে জানিয়েছেন রাজউকের এই প্রকৌশলী।

কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ থানা-পুলিশ জানায়, গত বছর প্রকল্প এলাকায় একটি দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। সেখানে নানা অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে। এ জন্য সেখানে যেতে হলে সঙ্গে পুলিশ নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, আগে থেকেই সতর্ক থাকলে দুর্ঘটনা না–ও ঘটতে পারে।

এদিকে করোনার কারণে প্রকল্প বাস্তবায়নে বিলম্ব হচ্ছে জানিয়ে রাজউক চেয়ারম্যান এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী বলেন, দ্রুতই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। প্রকল্প এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তিনি থানাকে জানিয়েছেন।