সাধারণ মানুষের কথা ভাবেননি মোদি : অমর্ত্য সেন

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি করোনাভাইরাস (কভিড-১৯) সঙ্কটের গুরুত্ব অনেক রাষ্ট্রনেতার চেয়ে আগে বুঝেছেন, কিন্তু সেই সমস্যার মোকাবিলায় সাধারণ মানুষের জীবন ও জীবিকার দিকটা বেশি করে ভাবা উচিত ছিল বলে মনে করছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন।

বুধবার এক টিভি চ্যানেলে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলার সময় এ মন্তব্য করেন।

ভারতের বিরোধী দলগুলো অভিযোগ করে আসছে যে, মোদি করোনা সঙ্কটের ব্যাপারে সজাগ হতে দেরি করেছেন। তবে অমর্ত্য সে কথা বলছেন না। বরং তিনি নিজে এখন যেখানে রয়েছেন, সেই আমেরিকায় যে ভাবে মৃত্যুমিছিল চলছে, সেটা তাঁকে অত্যন্ত হতাশ করেছে।

তিনি জানান, ভারতের ক্ষেত্রে সমস্যাটা আম আদমির জীবন-জীবিকার কথা ভাবা এবং সার্বিক স্বাস্থ্য ও শিক্ষা পরিকাঠামোয় গুরুত্ব দেওয়ার ওপরেই নির্ভর করছে। বরং করোনা সঙ্কটকে উপলক্ষ করে যদি স্বাস্থ্য-শিক্ষার উন্নয়নে মনোনিবেশ করা যায়, সেটা আখেরে মঙ্গলজনক হবে বলেই তাঁর ধারণা।

মানুষের হাতে নগদ টাকা দেওয়ার যে সুপারিশ বিভিন্ন মহল থেকে এসেছে, আর এক নোবেলজয়ী অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় যার অন্যতম, অমর্ত্যের বক্তব্য তার চেয়ে কিছুটা ভিন্নধর্মী। তাঁর মতে, টাকা দেওয়াটা সহজ রাস্তা। সার্বিক পরিকাঠামো ঢেলে সাজানোটাই বৃহত্তর লক্ষ্য হওয়া উচিত।

পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে প্রশ্ন করা হলে অমর্ত্য বলেন, দারিদ্র ও দুর্দশার এই ছবি নতুন নয়। দেশের সচ্ছল নাগরিক সমাজ যে এতে নতুন করে চমকিত হচ্ছেন, এটাই আশ্চর্যের। এই বিপুল জনসাধারণ যে আলোচনার বাইরে থেকে যান, সেটাতেও মোদি সরকারকে আলাদা করে দুষছেন না তিনি। ভারতের ক্ষেত্রে এই সমস্যাটা বরাবরই ছিল বলে অমর্ত্য জানান।

ভারতের কেরালা রাজ্য যে সঙ্কট মোকাবিলায় ভাল ফল করেছে, তার পেছনেও সেখানকার স্বাস্থ্য-শিক্ষার পরিকাঠামো এবং গণতান্ত্রিকতার সদর্থক ভূমিকা রয়েছে বলে জানান অমর্ত্য সেন।

করোনা সঙ্কট-লকডাউন ইত্যাদির হাত ধরে রাষ্ট্র যদি ক্রমশ খবরদারি বাড়ায় এবং নেপোলিয়নীয় চরিত্র গ্রহণ করে, সেটাও ক্ষতিকর হবে বলে সতর্ক করেছেন তিনি। তাঁর মতে, সঙ্কট মুহূর্তে আরও বেশি করে গণতান্ত্রিকতা এবং আলাপ-আলোচনার পরিসর বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে।

 

সুত্রঃ কালের কণ্ঠ