সন্তান সুখে মৃত্যুকে জয়

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক :

বিবাহিত দম্পতির সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত ব্যাপার হল বাচ্চা নেওয়া। প্রত্যেক নারী জীবনে একবার হলেও মাতৃত্বের স্বাদ গ্রহণ করতে চায়।

কিন্তু এমন কোনো নারীর কথা শুনেছেন কি যিনি মৃত্যুকে জয় করে তার সেই স্বপ্ন পূরণ করতে সক্ষম হয়েছেন। হ্যাঁ, আজকে আমরা তেমনই এক দম্পতি নিয়ে কথা বলব।

যুক্তরাষ্ট্রের আইওয়া রাজ্যের চ্যাড এবং স্ট্যাসি বেকার দম্পত্তি প্রায় ৮ বছর ধরে চেষ্টা করেছেন তাদের নিজেদের বাচ্চার জন্য। কিন্তু এই ৮ বছর তাদের জীবনের খুব একটা ভালো সময় ছিল না। দীর্ঘ প্রতিক্ষার পরে তাদের বাচ্চার মুখ দেখেছেন। যা প্রায় অসম্ভব ছিল তাদের জন্য।

চ্যাড ক্যানসারে আক্রান্ত একজন মহিলা এবং এই ক্যানসার প্রায় তাকে মৃত্যুর কাছাকাছি নিয়ে গিয়েছিল। দীর্ঘ ৮ বছরে তিনি ৬ বার মিসক্যারিজ হয়েছেন অর্থাৎ কোনো না কোনোভাবে বাচ্চা নষ্ট হয়ে গেছে। কিন্তু তিনি তার বিশ্বাস হারাননি।

এই দম্পতি ২০০৪ সালে বিয়ে করেন। ২০০৭ সালে প্রথম মিসক্যারিজ হয় এবং ২০১০ সালে এই দম্পতি তাদের তৃতীয় মিসক্যারিজের সম্মুখীন হন। সেই সময়ে ডাক্তার বলেন যে, চ্যাডের বাচ্চা ধারণে বেশ জটিলতা রয়েছে।

২০১৩ সালে প্রাকৃতিক নিয়মের বাইরে গিয়ে সারোগেট মাধ্যমে বাচ্চা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এই দম্পত্তি। তারা সামার মারনিন নামের একজন সিঙ্গেল মাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সামার এই দম্পতির কষ্ট দূর করতে রাজি হন। অর্থাৎ জিনগতভাবে বাচ্চা হবে এই দম্পতির তবে তা বেড়ে উঠবে সামারের গর্ভে।

সামার যখন বেকার পরিবারে আসেন গর্ভধারণের জন্য তখন স্ট্যাসি তিনটি ভ্রূণ ফ্রিজ করে রেখে দেন। সামার তিনটির পরিবর্তে দুইটি ভ্রূণ ব্যবহার করেন এবং সফলভাবে দুইটি বাচ্চা কন্সিভ করেন। তার মধ্যে একটি ছেলে এবং একটি মেয়ে। কিন্তু পরে মেয়ে বাচ্চাটি মিসক্যারিজ হয় এবং একটি সুস্থ ছেলে বাচ্চা জন্ম দেন ২০১৪ সালে।

‘ডাক্তার যখন আমাদেরকে আমাদের ছেলে হওয়ার সংবাদ দেন আমরা একে অন্যের দিকে প্রায় ৩০ সেকেন্ড তাকিয়ে ছিলাম’, বলেন স্ট্যাসি।

এরপর বেকার দম্পতি আবারো সন্তান নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তবে এবার তাদেরকে সাহায্য করেন কিয়েরনান নামক একজন মহিলা।

বেকার দম্পতি তাদের দ্বিতীয় সন্তানের শারীরিক অবস্থা নিয়ে শুরুতে বেশ কিছু জটিলতা পোহালেও পরবর্তীতে আর সমস্যা দেখা দেয়নি। বরং দুই ছেলেকে নিয়ে তারা বর্তমানে বেশ সুখে আছেন।

আর এই সুখের মুহূর্তগুলো চ্যাডকে শক্তিশালী করে তুলেছে তার ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করার জন্য। তিনিও এখন বেশ সুস্থ।

তথ্যসূত্র: ডেইলি মেইল