সন্তানের সঙ্গে ‘পিরিয়ড’ নিয়ে কেন কথা বলবেন অভিভাবক

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

সন্তান ছেলে হোক বা মেয়ে, তাকে পিরিয়ড-সংক্রান্ত সঠিক তথ্য জানানো খুবই জরুরি। তবে আমাদের দেশে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেয়া যায়, পিরিয়ড নিয়ে কথা বলতে নিষেধ করেন প্রাপ্তবয়স্করা। তাদের অনেকের কাছে এটা একটা নিষিদ্ধ বিষয়। এ বিষয় নিয়ে বাচ্চাদের সঙ্গে কথা বলতে হবে, এটা চিন্তাই করতে পারেন না তারা!

পিরিয়ড কী?

প্রতি চন্দ্রমাস পরপর হরমোনের প্রভাবে পরিণত মেয়েদের জরায়ু চক্রাকারে যে পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যায় এবং রক্ত ও জরায়ু নিঃসৃত অংশ যোনিপথে বের হয়ে আসে তাকেই ঋতুচক্র বলে। মাসিক চলাকালীন পেটব্যথা, পিঠব্যথা, বমি বমিভাব হতে পারে। আর যাদের এই মাসিক ঋতুচক্র প্রতি মাসে হওয়াকে নিয়মিত পিরিয়ড বলে।

তাই পিরিয়ড নিয়ে সন্তানের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করুন।সন্তান ছোট বলে কোনো তথ্য লুকাবেন না বা মিথ্যা বলবেন না।

আসুন জেনে নেই পিরিয়ড নিয়ে কেন সন্তানের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করবেন।

সন্তানের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করুন

সন্তান প্রশ্ন করার আগেই তার সঙ্গে কথা বলুন। সন্তান ছোট বলে কোনো তথ্য লুকাবেন না বা মিথ্যা বলবেন না। শুধু পিরিয়ড নয়, বয়ঃসন্ধির ব্যাপারেও এ সময়ে কথা বলুন। বয়ঃসন্ধির সময়ে সন্তানের শরীরে অনেক পরিবর্তন আসে, এসব বিষয়ে জানা না থাকলে সে বিভ্রান্ত ও ভীত হতে পারে।

টিভিতে বিজ্ঞাপন ও শপিংমল

আপনি শপিংমলে স্যানিটারি ন্যাপকিন আছে এমন একটি জায়গা দিয়ে যাচ্ছেন, তখন সন্তানের সঙ্গে হালকাভাবে এ বিষয়ে কথা শুরু করতে পারেন। বা টিভিতে বিজ্ঞাপন দেখাচ্ছে এমন সময়ে তাকে পিরিয়ড সম্পর্কিত তথ্য দিতে পারেন।

বয়স নিয়ে চিন্তা নয়

বেশির ভাগ কন্যাশিশুর পিরিয়ড শুরু হয় ১২ বছর বয়সে হওয়ার কথা থাকলেও অনেকের ৮ বছর বয়সেও শুরু হতে পারে। এ সময় বয়সের কারণে সন্তানকে ছোট ভাববেন না। তাকে নিজের শরীর ও এর পরিবর্তন সম্পর্কে জানা জরুরি।

একাধিকবার আলোচনা

পিরিয়ডের বিষয়ে একবারের বেশি এ ব্যাপারে কথা বলা যাবে এমন নয়। প্রয়োজনে একাধিকবার আলোচনা করা যেতে পারে। সন্তানকেও উৎসাহ দিন যেন তার কোনো প্রশ্ন থাকলে আপনাকে জিজ্ঞেস করে। এর ফলে সন্তান কোনো সমস্যায় পড়লেও আপনাকেই আগে জানাবে।

পিরিয়ড স্বাভাবিক দৃষ্টিতে দেখুন

মনে রাখবেন পিরিয়ড একটি স্বাভাবিক শারীরিক প্রক্রিয়া। পিরিয়ড নিয়ে এত লুকোচুরি না করাই ভালো। স্যানিটারি প্যাড বা ট্যাম্পন তাদের সামনে থেকে লুকানোর পরিবর্তে তাকে দেখতে দিন এবং প্রশ্ন করতে দিন। টিভিতে এ সংক্রান্ত বিজ্ঞাপন এলে তা চট করে সরিয়ে ফেলবেন না।

ব্যবহারিক শিক্ষা

শুধুমাত্র আলোচনা নয়, পিরিয়ডের জন্য ব্যবহৃত বিভিন্ন উপাদান যেমন প্যাড, লাইনার, ট্যাম্পন, মেনস্ট্রুয়াল কাপ এসব সন্তানকে দেখান এবং তা কী করে ব্যবহার করতে হয় শিখিয়ে দিন। এর জন্য পানি ও ফুড কালারিং ব্যবহার করতে পারেন।

মনে রাখবেন সন্তান আপনার। তাই তার দেখভালের দায়িত্ব আপনার। সন্তান আলোকিত মানুষ হোক সব বাবা-মা তা চান। তাই সন্তানের বন্ধু হোন।