শ্রীকৃষ্ণের মধুচন্দ্রিমা, রাধা ছাড়াও গোপিনীদের নিয়ে কাম উৎসব ছিল রোমাঞ্চকর

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

বৈধ নথিভুক্ত এক অলৌকিক প্রেম বিহারের নাম রাস। স্বয়ং কৃষ্ণ রাধা-সহ গোপিনীদের সঙ্গে মিলনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিলেন এই দিন। ‘রমণ’ অর্থ গমন। আবার ‘রমণ’ শব্দটি যৌনাচারের সমার্থক শব্দ। রাস তাই কৃষ্ণের রাসযাত্রা নামে পরিচিত। রাস-রজনীতে কৃষ্ণের মধুচন্দ্রিমা পালনের দিন।

বৈদিক যুগের মদনোৎসবের সঙ্গে এই উৎসবের কিছুটা হলেও মিল রয়েছে। কামশাস্ত্রে এই উৎসবকে তাই কামোৎসব বলা হয়েছে। কামের দেবতা মদনদেব এই দিন কৃষ্ণের মধ্যে প্রকটিত হয়েছিলেন। তাই তো কৃষ্ণের আর এক নাম মদনমোহন।

রাস-রজনীর মধুচন্দ্রিমায় রাধা-সহ গোপিনীদের যৌনলীলার নানা আঙ্গিক ফুটে উঠেছে গর্গসংহিতা ও বৈষ্ণব গ্রন্থগুলিতে। সেখানে রয়েছে চুম্বনে চুম্বনে কারও অধর ফুলে উঠেছে, কারও স্তন নখের আঘাতে রক্তাক্ত। কোনও গোপিনী কৃষ্ণকে পাওয়ার জন্য দৈহিক উত্তেজনার মধ্যে অপেক্ষারত। কৃষ্ণ আবার তখন কোনও গোপিনী নয় তার প্রাণ প্রিয়া রাধাকে পেতে ব্যাকুল।

বৈষ্ণব কবি কৃষ্ণদাসের কথায়— ‘‘শতকোটি গোপী সঙ্গে রাসবিলাস। তার মধ্যে এক মূর্তি রহে রাধাপাশ।’’ শতকোটী গোপীও কৃষ্ণের কামনা নিবারণ করতে পারেন না, তার জন্য চাই রাধাকে। পল্লব সেনগুপ্ত তাঁর ‘পূজা পার্বণের উৎস কথা’ গ্রন্থে সুপ্রাচীন কালের আদিম সমাজের উৎসবগুলির মধ্যে এই উৎসবের মিল রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। আদিম সমাজের উৎসবগুলির মধ্যে যে যৌনাচারের ছোঁয়া ছিল সে পরম্পরা আজও রয়েছে রাসযাত্রায়।

নবদ্বীপের রাসযাত্রা তাই শাক্ত রাস। যেখানে মৎস্য, মদ্য, মাংস, মুদ্রা ও মৈথুন অঙ্গীভূত। পরকীয়া প্রেম ও যৌনাচারের এক মহামিলন উৎসব এই রাস। সূত্র: এবেলা