শীতে শস্য ফসলের রোগ বালাই ও প্রতিকার শীর্ষক মতবিনিময় অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীর তানোরে শীত, কুয়াশা ও শৈত্যপ্রবাহ কালীন শস্য ফসলের রোগবালাই ও প্রতিকার শীর্ষক মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার তানোর উপজেলার আড়াদিঘি গ্রামে বিভিন্ন গ্রামের জনসংগঠনের কৃষক কৃষাণীদের অংশগ্রহণে মতবিনিময়টি অনুষ্ঠিত হয়।

বেসরকারি উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক (বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইন্ডিজিনাস নলেজ) এবং তানোর জনসংগঠনগুলোর যৌথ আয়েজনে উক্ত মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় কৃষকগণ বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারের শীতের তীব্রতা অনেক বেশী । এবং ঘনঘন শত্যপ্রবাহ হওয়ার ফলে আলু, সরিষা, গম, মশুর, মটর এবং বোরো ধানের বীজতলার ক্ষতি হচ্ছে।

কৃষকরা বলেন, অনেক সময় বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানীর পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ প্রয়োগ করেও কাজে আসছে না। অভিজ্ঞকৃষক শীত থেকে শস্য ফসল রক্ষায় তাদের নিজেদের কৌশল গুলোও তুলে ধরেন।

তানোরের প্রবীণ কৃষক আমির উদ্দিন(৭০) বলেন- “ অনেক কুয়াশা এবং শীত বা শৈত্য প্রবাহ হলে ফসলের জমিতে ছাই টিটালে উপকার পাওয়া যায়।”  বিশেষ করে ধানের বীজতলা রক্ষায় ছাই অনেক ভালো ভূমিকা পালন করেন।

প্রবীণ কৃষক মেছের আলী বলেন, শীত ও কুয়াশা থেকে ফসল রক্ষায় রবিশস্যের মধ্যে সকালে দড়ি টেনে দিলেও উপকার পাওয়া যায়।

দুবইল গ্রামের তরুণ কৃষক মোস্তফা কামল বলেন, চলতি শীত মৌসুমে আমার পাঁচকাঠা জমির বীজ তলা নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি বলেন আমরা অনেক সময় নবীণ কৃষকদের অনেক বেশী অভিজ্ঞতা না থাকায় লোকজ কৌশল গুলো ব্যবহার করতে পারি না বা সেই ধরনের কৌশল গুলোও জানিনা। তাই প্রবীণ এবং অভিজ্ঞকৃষকের সাথে নবীণ কৃষকের জ্ঞান অভিজ্ঞতাগুলো বিনিময় হওয়া দরকার।

অভিজ্ঞকৃষকগণ বলেন, স্থানীয় জাতের দেশীয় শস্য ফসলগুলো অনেক বেশী দূর্যোগ সহনশীল আবার জৈব উপায়ে ফসল চাষ করলেও এরকম দূর্য়োগে ফসলের ক্ষতি কম হয়। বিদেশী এবং রাসায়নিক কীটনাশক যুক্ত ফসলের অনেক বেশী ক্ষীত হয়। কারন এই জাতগুলো আমাদের আবহাওয়ার সাথে খাপ খেয়ে নিতে পারেনা।

তানোর উপজেলার উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা শাহজাহান বলেন, এই শীতের মধ্যে আমরা কৃষকের সমস্যা অনুযায়ী নানা ধরনের পরামর্শগুলো দিয়ে যাচ্ছি । একই সাথে কোম্পানীর ডিলার সাথেও পরামর্শগুলো দিয়ে যাচ্ছি যাতে কৃষকরা সেই সেবাগুলো পায়।

উক্ত মতবিনিময় সভাটি সঞ্চালনা কওে বারসিক রাজশাহী রিসোর্স সেন্টারের কর্মসূচী কর্মকর্তা জাহিদ আলী, কৃষি পরিচর্চা এবং সেবা বিষয়ে তথ্য তুলে ধরেন বারসিক এর সহযোগী কৃষি কর্মকর্তা অমৃত কুমার সরকার। উক্ত মতবিনিময়ে তানোর উপজেলার ৪৫ জন কৃষক কৃষাণী অংশগ্রহণ করেন। মতবিনিময়ে কৃষকগণ দূর্যোগকালিন সময়ে শস্য ফসলের ক্ষতিপূরণ হিসেবে সরকারি সুযোগ সুবিধাগুলো আরো বাড়ানোর দাবি করেন।

স/অ