রাবি ছাত্রলীগ : এক নেতার বিরুদ্ধে আরেক নেতার জিনিসপত্র সরিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

রাবি প্রতিনিধি :

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের এক নেতার সার্টিফিকেট, পাসপোর্টসহ ও বইপত্রসহ গুরুত্বপূর্ণ কিছু কাগজ হলের কক্ষ থেকে সরিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে হল শাখার সাধারণ সম্পদকের বিরুদ্ধে। পাশাপশি বিশ^বিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া ভুক্তভোগীকে হল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।

এ ঘটনায় গত সোমবার (৬ মার্চ) রাতে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে এসব বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম মো. সামিউল আলম। তিনি ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও বঙ্গবন্ধু হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি। অপরদিকে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার নাম আলফাত সায়েম জেমস। তিনি হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।

অভিযোগপত্রে সামিউল আলম উল্লেখ করেন, ‘চলতি মাসে সিট ফাঁকা থাকা সাপেক্ষে বঙ্গবন্ধু হলের ২১০ নম্বর কক্ষে আসন বরাদ্দ পান তিনি। সেখানে ওঠার পর ৪ মার্চ হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আলফাত সায়েমের নির্দেশে তাঁর অনুসারীরা এসএসসি মূল সার্টিফিকেট, পাসপোর্ট, ভিসার জন্য ব্যাংক স্টেটমেন্টের কাগজ ও বিছানাপত্র সব নিয়ে যান। ওই সময় তিনি কক্ষে ছিলেন না।’

তিনি আরও উল্লেখ করেন, আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ৩২৯ নম্বর কক্ষে থাকতেন সামিউল আলম। তবে হলে তাঁর কোনো আবাসিকতা ছিল না। কয়েক মাস আগে ওই কক্ষের বঙ্গবন্ধু হল শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহানুর রহমানের নামে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করে। এ জন্য তিনি ওই কক্ষে থাকতে চাচ্ছিলেন না। চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়াকে তিনি বিষয়টি জানিয়ে ওই কক্ষে না থাকতে চাওয়ার কথা বলেন। তখন তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন গোলাম কিবরিয়া। একপর্যায়ে তাঁকে হল থেকে বের করে দেন তিনি। ওই সময় গোলাম কিবরিয়া তাঁকে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘ওই রুমে সোহান থাকবে, তা সে ওই গাঁজা ব্যবসা করুক আর মদ বিক্রি করুক। তোর বঙ্গবন্ধু হলে আর থাকার সুযোগ নেই।’ ওই ঘটনার পর থেকে তিনি হলের বাইরে ছিলেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা আলফাত সায়েম জেমস বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগত কাজে ঢাকায় অবস্থান করছি। তবে সামিউল হলের আবাসিক শিক্ষার্থী নয়, তাই তার জিনিসপত্র কীভাবে হলে থাকে সেটি জানা নেই। তবে এমন ঘটনা ঘটলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘এ ধরনের অভিযোগ পুরোটায় মিথ্যা। এছাড়া সে নেশার সঙ্গে জড়িত এবং হলের অনাবাসিক শিক্ষার্থী তাই তাকে সংগঠনের নেতা হিসেবে শাসন করেছি। যাতে তার মাধ্যমে দলের অন্য সদস্যরা নেশার সঙ্গে জড়িয়ে না পরে।’

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্র-উপদেষ্টা তারেক নূর বলেন, ‘অভিযোগপত্র পেয়েছি। এ ঘটনায় ওই হল প্রশাসন প্রথমে তদন্ত করবে। হল প্রশাসনের রিপোর্ট অনুসারে আমরা প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’