রাবিতে শিবির সন্দেহে ৯ জনকে মারধর করে পুলিশে দিল ছাত্রলীগ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

শিবির সন্দেহে নয় শিক্ষার্থীকে ছুরি ও লোহার পাইপ দিয়ে বেধড়ক মারধর করে পুলিশে দিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে তাদেরকে আটক করা হয়। পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে নিয়ে তাদেরকে প্রায় দুইঘণ্টা মারধরের পর পুলিশে দেওয়া হয়। বর্তমানে তারা রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

আটককৃতরা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী রহমতুল্লাহ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রথম বর্ষের আরিফুর রহমান, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রথম বর্ষের শাহরিয়ার তানজিম, দ্বিতীয় বর্ষের আব্দুল কাদের, ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রথম বর্ষের মো. ইয়াকুব, সংস্কৃত ভাষা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের মিজানুর রহমান, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মাস্টার্সের মো. তুহিন, নগরীর লোকনাথ স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী গোলাম রাব্বি এবং রাজশাহী সিটি কলেজের শিক্ষার্থী তন্ময়। এদের মধ্যে তুহিন, কাদের এবং ইয়াকুবের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার বিকেলে কয়েকজন শিক্ষার্থী শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে বসে গল্প করছিল। পরে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী তাদেরকে শিবিরকর্মী সন্দেহে জোর করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে নিয়ে যায়। পরে তাদেরকে বেধড়ক মারধর করা হয়। মারধরে নয় শিক্ষার্থী আহত হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া জানান, ‘শহীদ মিনারে ষোলজন শিবিরকর্মী মিটিং করছে জানতে পেরে নেতাকর্মীরা সেখানে যাই। ওই শিক্ষার্থীদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাদের কথাবার্তা সন্দেহজনক হওয়ায় আমরা তাদেরকে হলে নিয়ে আসি। তাদের মধ্যে নয়জনের শিবিরের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় পুলিশে সোপর্দ করি। বাকি সাতজনের সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় তাদেরকে ছেড়ে দেই।’

পুলিশে দেওয়াকালে আটককৃত মো. নোমান এবং গোলাম রাব্বি সিল্কসিটি নিউজকে জানান, ‘আমরা একটি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিংয়ের সঙ্গে জড়িত। এ বছর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্সপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনার ব্যাপারে আমরা কথা বলছিলাম। এ সময় ছাত্রলীগের নেতারা আমাদেরকে হলে নিয়ে যায়। তারা আমাদের লোহার পাইপ এবং ছুরি দিয়ে আঘাত করে।’

ঘটনা চলাকালীন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক আশরাফ উজ জামানের সঙ্গে কথা বলতে গেলে ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পরও বাংলাদেশ প্রতিদিনের রাবি প্রতিনিধি মর্তুজা নুরের গায়ে হাত দেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান জানান, ‘শিবির সন্দেহে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কয়েকজনকে আটক করেছিলো। পরে হলের প্রাধ্যক্ষ ও পুলিশের সহযোগিতায় আমরা তাদেকে উদ্ধার করেছি। এখন পরিস্থিতি শান্ত।’

স/অ