রাণীনগরে ভুলে ভরা প্রাথমিকের প্রশ্নপত্র, অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ

রাণীনগর প্রতিনিধি:

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির গণিত বিষয়ের পরীক্ষায় মানবন্টন ও সিলেবাস অনুসারে প্রশ্নপত্র না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়ে। এতে শিক্ষার্থীদের অবিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

এ ছাড়াও অবিভাবকরা অভিযোগ করেন, উপজেলা শিক্ষক সমিতি থেকে শিক্ষার্থীদের যোগ্যতাভিত্তিক প্রশ্নপত্র তৈরী করতে গিয়ে কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের জন্যে কঠিন প্রশ্ন তৈরি করা হচ্ছে। আগামীতে দ্রুত প্রশ্নপত্রের ভুল সংশোধন ও যোগ্যতাভিত্তিক প্রশ্নপত্র তৈরিতে সঠিক নজর দিতে উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন তারা।

শনিবার অনুষ্ঠিত প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর গণিত পরীক্ষাসহ আরো কয়েকটি অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় এসব ভুল দেখা যায়।

সূত্রে জানা গেছে, শনিবার অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় শ্রেণীর গণিত পরীক্ষায় সময় নির্ধারণ করা হয় ২ ঘন্টা। ১ থেকে ১২ নম্বর পর্যন্ত প্রশ্ন রাখা হয়। ১২টি প্রশ্নের মোট নম্বর ১৬০। প্রশ্নের ১ নম্বরের ক ও খ তে ৫ করে ১০ নাম্বার, ২ ও ৩ নম্বরে ১০ করে নম্বর। ৪ ও ৫ নম্বরে বিজোড় ও জোড় গোলে দেয়াতে ২০ নম্বর রাখা হয়েছে। আর ৬ নম্বরে শূন্যস্থাণ পূরণে ৫ গুণ ১ সমান ৫০নম্বর লিখা রয়েছে। পরবর্তীতে ৭ নম্বর থেকে ১২ নম্বর পর্যন্ত প্রশ্নে ১০ নম্বর করে দেয়া হয়েছে। মোট হিসেব করলে এটি দাঁড়ায় ১৬০ নম্বরে।

সকাল ১০টা থেকে পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর দ্বিতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা প্রশ্নপত্র দেখে বিপাকে পড়ে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক অবিভাবক ও শিক্ষকরা জানিয়েছেন, প্রশ্নপত্র না বুঝে সব প্রশ্নে উত্তর দিয়েছে তারা। এতে শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের বারবার বিভিন্ন প্রশ্ন করতে থাকে। তবে কোন সমাধান দিতে পারেননি শিক্ষকরা।

রাণীনগর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের অবিভাবকগণ জানিয়েছেন, সিলেবাস অনুসারে জ্যামিতি পড়ানো হয়েছে। অথচ পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে জ্যামিতির কোন প্রশ্ন রাখা হয়নি।

প্রথম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের অবিভাবকগণ জানিয়েছেন, প্রশ্নপত্রে ১০টি প্রশ্ন রাখা হয়েছে। অথচ প্রশ্নপত্রে লিখা রয়েছে ১২ নম্বরসহ ১০টি প্রশ্নের উত্তর দিতে। তবে প্রশ্নপত্রে ১১ এবং ১২ নম্বর ছিল না। ১০ নম্বর প্রশ্নে একটি অংকে ১০ নম্বর দিলেও অথবাতে তিনটি জ্যামিতির উত্তর দিতে বলা হয়েছে। এই তিনটি জ্যামিতিতে নম্বর বণ্টন করা হয়নি।

গত বৃহস্পতিবার ইসলাম ও হিন্দু ধর্ম বিষয়ে পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে প্রথম ও দ্বিতীয় কঠিন প্রশ্ন তৈরী করা হয়েছে। যোগ্যতাভিত্তিক প্রশ্ন তৈরী করতে গিয়ে বয়সের তুলনায় অনেক কঠিন প্রশ্নপত্র তৈরী করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন অনেকেই। আবার ইংরেজি প্রশ্নেও সকল শ্রেণীতে অনেক কঠিন প্রশ্ন করা হয় বলে অভিযোগ অভিভাবকদের।

এ ব্যাপারে রাণীনগর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাকারিয়া সুলতান বলেন, প্রশ্নপত্রগুলো আরো ভালোভাবে করা উচিৎ ছিল।

এ ব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এমএম মাহবুবুর রহমান বলেন, প্রশ্নপত্র না দেখে বলতে পারব না।

এ ব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মামুন বলেন, বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

স/শা