রাণীনগরে জরাজীর্ণ কালীগ্রাম ইউপি ভবন; দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা

সুকুমল কুমার প্রামানিক:

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার কালীগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের জরাজীর্ণ ও ঝঁকিপূর্ন ভবনে চলছে দাপ্তরিক কাজ এবং সেবা কার্যক্রম। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিনই দাপ্তরিক কাজ ও সেবা দিয়ে আসছে পরিষদের চেয়ারম্যান, সচিব ও সদস্যরা। কখন যেন মাথার উপর ভেঙ্গে পড়বে ভবনের বিভিন্ন অংশ এমন আতঙ্কে থাকেন পরিষদে সেবা নিতে আসা জনগন। আর জনগুরুত্বপূর্ণ এই সেবা প্রতিষ্ঠানের এমন জরাজীর্ণ অবস্থা হলেও নজর নেই কর্তৃপক্ষের।

জানা গেছে, উপজেলার ৬নং কালীগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের জন্মলগ্ন থেকে ব্যক্তি মালিকানা বাড়ি ভাড়া নিয়ে পরিষদের কার্যক্রম চলতো। এরপর বিগত জোট সরকারের আমলে খাঁনপুকুর নামক স্থানে চৌধুরী পুকুরের পাশে ৬৬ শতাংশ জমি ক্রয় করে তৎকালীন সরকার একটি দু’তল ও পাশে একটি একতলা ভবন নির্মাণ করে। দীর্ঘদিন যাবত এই ভবনগুলোর কোন সংস্কার কিংবা মেরামত না করার কারণে বর্তমানে দুটি ভবনই অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ন হয়ে পড়েছে। প্রায় প্রতিনিয়তই ভবনের ছাদ থেকে পলেস্তার খুলে পড়ছে। খুলে পড়ছে পোকায় নষ্ট হওয়া দরজা-জানালাসহ অন্যান্য উপকরনগুলো। জানালার গ্রিলগুলো মরিচায় নষ্ট হয়ে গেছে। পরিষদের গ্রাম আদালত কক্ষ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ন হওয়ার কারণে বর্তমানে এজলাস কক্ষে পরিষদের সকল প্রকারের বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। অনেক সময় পরিষদে সেবা নিতে আসা বিভিন্ন মানুষের মাথায় ছাদের পলেস্তার খুলে পড়ে একাধিকবার ঘটেছে দুর্ঘটনা। তবুও জনগুরুত্বপূর্ন এই প্রতিষ্ঠানে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়তই সেবা দিয়ে আসছে সংশ্লিষ্টরা।

পরিষদে সেবা নিতে আসা রাসেল, মাসুদ, রাজ্জাকসহ আরো অনেকেই জানান, পরিষদে কোন সেবা নিতে আসলে ভয়ে ভয়ে থাকতে হয়। তাই সেবা নেওয়ার সময় পর্যন্ত পরিষদের বাহিরে অনেকেই দাঁড়িয়ে থাকেন। বর্তমান সরকারের সবকিছুতে আধুনিকতা ও ডিজিটাল উন্নয়নের ছোঁয়া লাগলেও এমন জনগুরুত্বপূর্ন এই প্রতিষ্ঠানে এখন পর্যন্ত উন্নয়নের কোন ছোঁয়াই স্পর্শ করেনি। এটি এই ইউনিয়ন বাসীদের জন্য অত্যন্ত দু:খজনক।

কালীগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বাবলু মন্ডল জানান, আমি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর নিজ উদ্যোগে ঝুঁকিপূর্ন পুরো ভবনের মধ্যে চেয়ারম্যানের বসার ঘরটি কোন মতে সংস্কার করেছি। পরিষদের পুরো ভবনগুলো সংস্কার করার মতো বিপুল পরিমাণ অর্থ জোগান দেওয়া পরিষদের পক্ষে সম্ভব নয়। কিন্তু সেবা দেওয়া জরুরী বলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমরা প্রতিদিনই চেষ্টা করছি পরিষদে আসা মানুষদের মানসম্মত সেবা দিতে। পরিষদের ভবন এমন জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার জানিয়েছি কিন্তু কর্তৃপক্ষরা শুধুমাত্র আশা দিয়েই রেখেছেন।

এ ব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন, আমি বিষয়টি জানার পর পরিষদ ভবন পরিদর্শন করে বিষয়টি জেলা প্রশাসক স্যারকে জানিয়েছি। এই প্রতিষ্ঠানটি সংস্কার কিংবা মেরামত কিংবা নতুন করে ভবন নির্মাণ এবিষয়ে দ্রুত উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে একটি সিদ্ধান্ত আসবে বলে আশা করছেন এই কর্মকর্তা।

জেএ/এফ