রাজশাহীতে ব্যবসায়ী শাহাবুল হত্যা: আসামি টাইগার গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহী মহানগরীর কাশিয়াডাঙা ফেরতাপাড়া এলাকার ব্যবসায়ী শাহাবুল ইসলাম (৩২) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আরিফুল ইসলাম ওরফে টাইগার (৩০) নামে এলাকার এক চিহ্নিত সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি এই হত্যা মামলার অন্যতম আসামি। গতকাল শনিবার রাত ১০টার দিকে রাজশাহীর আইডি হাসপাতালের স্টাফ কোয়ার্টার থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

টাইগার নগরীর বহরমপুর এলাকার শামসুল ইসলামের ছেলে। এই হত্যা মামলা ছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা আছে। জিজ্ঞাসাবাদে শাহাবুল হত্যার ব্যাপারে টাইগারের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে বলে ধারণা করছে পুলিশ।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পবা থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) হাসমত আলী বলেন, শাহাবুলকে হত্যার ঘটনার পর থেকেই আত্মগোপনে ছিলেন টাইগার। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। টাইগারকে রোববার সকালে আদালতে তোলা হবে। আদালতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার রিমান্ডের আবেদন করা হতে পারে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

এর আগে শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকালে পবা উপজেলার কৈকুড়ি এলাকার একটি রাস্তার পাশে শাহাবুলের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। শাহাবুল রাজশাহী মহানগরীর রাজপাড়া থানার কাশিয়াডাঙ্গা ফেরতাপাড়া এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে। তিনি পুকুরে মাছ চাষ করতেন। এছাড়া তিনি জমি কেনা-বেচার ব্যবসার ও বেটিং চক্রের সঙ্গেও জড়িত ছিলেন।

শাহাবুল হত্যার ঘটনায় তার মা মালেকা বেগম বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, জমি কেনার জন্য শাহাবুল জমির একজন বিক্রেতাকে ৬ লাখ টাকা বায়না দিয়েছিলেন। কিন্তু জমির মালিক রেজিস্ট্রি দিচ্ছিলেন না। জমির রেজিস্ট্রি না দিয়ে টাকা আত্মসাতের পরিকল্পনায় শাহাবুল খুন হন বলে মনে করেন তার মা।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, বায়না নিয়েও জমি লিখে না দেওয়ায় শাহাবুলের সঙ্গে জমির মালিকের চরম দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। এই দ্বন্দ্বের মীমাংসা নামে বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে বহরমপুর মোড় থেকে একটি সাদা প্রাইভেটকারে করে এক আত্মীয়র সামনে থেকেই শাহাবুলকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরদিন তার গলাকাটা মরদেহ পাওয়া যায়।

মামলার এজাহারে শাহাবুলের মা জমির বায়নার টাকার কথা উল্লেখ করলেও স্থানীয় একটি সূত্র বলছে, জমি কেনা-বেচার ব্যবসার পাশাপাশি নিহত শাহাবুল ক্রিকেট খেলায় বেটিং (বাজি) খেলতেন। মামলার ৬ আসামির একজনের কাছে তিনি ৬ লাখ টাকা জিতেছিলেন। তিনি টাকা পরিশোধ করতে না পেরে তার একটি জমি শাহাবুলকে লিখে দিতে চেয়েছিলেন। এরই মধ্যে শাহাবুলকে গলাকেটে হত্যা করা হয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হাসমত আলী বলেন, তিনি সবগুলো বিষয় মাথায় রেখে তদন্ত শুরু করেছেন। এই মামলার এজাহার নামীয় পলাতক অন্য পাঁচ আসামিকে গ্রেফতার করতে পারলে হত্যার রহস্য উন্মোচন হবে বলে মনে করেন তিনি। তাদের গ্রেফতার করতে এরই মধ্যে রাজশাহীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চলছে বলেও জানান পবা থানার এই পুলিশ কর্মকর্তা।

স/শ