রাজশাহীতে করোনায় মৃত্যুর খবর পেলেই ছুটেযান তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক :

রাজশাহী বিভাগে ৮টি জেলার যেখানেই করোনায় মৃত্যু বা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর খবর পান সেখানেই ছুটে যান তারা। করোনা সংক্রমণ ঝুঁকি এড়াতে মৃতের স্বজনদের হয়ে লাশটি দাফন বা সৎকারের ব্যবস্থা করেন। তবে এ কাজেও মাঝে মধ্যেই প্রতিবন্ধকতার সম্মুখিন হতে হচ্ছে তাদের, এমন ভালো উদ্যোগেও দিতে হয় নানা প্রশ্নের উত্তর।

বলছিলাম কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন রাজশাহী সেন্টারের একদল স্বেচ্ছসেবীর কথা। রাজশাহীতে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির পর থেকে একদল স্বেচ্ছসেবী করোনায় আক্রান্ত বা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করা রোগীদের স্বাস্থবিধি মেনে দাফন বা সৎকারের ব্যবস্থা করছেন।

রাজশাহীর কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের ৩২ সদস্যের একদল মানুষ নিজেদের জীবনের ঝুঁকি উপেক্ষা করে দিন-রাত কাজ করছেন সমাজকে সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করতে। এই দলের সদস্যদের মধ্যে সকল ধর্মের মানুষই রয়েছেন। যাতে মৃতের ধর্ম অনুসারে তাকে দাফন বা সৎকার করা যায়।

তবে এই মহত কজটুকু করতে গিয়ে তাদের বিভিন্ন সময় নানা প্রতিবন্ধকতা ও বিপত্তিতেও পড়তে হচ্ছে। গভীর রাতে কখনও তাদের কাছে খবর আসে রোগী মারা গেছে এসে নিয়ে যান। আবার কখনো মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকেও ভৎসনা বা অসহযোগীতা আসে। লাশ দাফন করতে গিয়েও এলাকাবাসীর তোপের মুখে পড়তে হয়।

এইতো সেদিন ২৬ এপ্রিল রাজশাহীর বাঘা উপজেলার ৮০ বছর বয়স্ক করোনা আক্রান্ত রোগীটি রামেক হাসপাতালে মারা গেলেন। স্বাস্থ্য বিধি মেনে তার লাশের গোসল ও জানাযা শেষ করার পর সেদিনই ওই লাশটি নির্ধরিত গোরাস্থানে দাফন করতে গিয়ে নগরীর মেহেরচণ্ডী এলাকাবাসীর মারমুখি আচরণের শিকার হতে হয়। লাশ দাফন না দিয়েই তাদেরকে ফিরে আসতে হয়েছে। শেষ পর্যন্ত দাফন দিতে হয়েছে অন্যত্র।

একই ভাবে অনেক সময় হাসপাতালের দরজায় গভীর রাতে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকতে হয়, কখন কর্তৃপক্ষ আসবেন ও অনুমতি দেবেন। আবার অনেক সময় লাশের পরিবারও তাদেরকে পুরোপুরি বিশ্বাস করতে চায়না। একারণগুলো তাদেরকে হতাশ করলেও মানুষগুলো থেমে যায়নি। তারা তাদের কাজ অব্যাহত রেখেছেন।

শনিবারও রামেক হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে দুইজন মৃতকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দাফন করিয়েছেন।

দেশে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ার পর ২৬ এপ্রিল থেকে এপর্যন্ত (১৩ জুন) রাজশাহী, পাবনা, নওগাঁর ২২ জনের লাশ দাফন ও সৎকার করেছেন এই স্বেচ্ছসেবীর দল।

স/রা