রাজশাহীতে আন্তর্জাতিক বন দিবস পালন


নিজস্ব প্রতিবেদক:
‘উদ্ভাবনায় বন, সম্ভাবনায় বন’ এই স্লোগান নিয়ে আন্তর্জাতিক বন দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় রাজশাহী জেলা প্রশাসন সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সামাজিক বন বিভাগ রাজশাহী এবং রাজশাহী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক( উন্নয়ন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) টুকটুক তালুকদার। সভাপতিত্ব করেন সামাজিক বন বিভাগ রাজশাহী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রফিকুজ্জামান শাহ্।

সামাজিক বন বিভাগ রাজশাহী বিভাগীয় সহকারী বন সংরক্ষক মেহেদিজ্জামান এর সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সেভদি ন্যাচার এন্ড লাইফ এর সভাপতি মিজানুর রহমান ও দিনের আলো হিজড়া সঘের সভাপতি মোহনা। এছাড়াও বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ও সুধিজন উপস্থিত ছিলেন।

উপস্থিত অংশগ্রহনকারী ও অতিথিবৃন্দ বলেন, বন হচ্ছে একটি দেশের ফুসফুস। গাছ কার্বনডাই অক্সাইড গ্রহন করে এবং অক্সিজেন তৈরী করে তা ছেড়ে দিয়ে প্রানীকুলকে বাঁচিয়ে রাখে। তারা আরো বলেন, একটি গাছ শুধু কাঠ দেয়না। দেয় ফল, ছায়া ও নির্মল বাতাস। আর অক্সিজেনতো রয়েছেই। সব হিসাব করলে একটি গাছেল মূল্য কোটি টাকার উপরে। নগরায়নের ফলে অনেক গাছ কাটা পড়েছে এবং তা চলমান রয়েছে। একটি দেশের প্রাকৃতিক সাম্য রক্ষা করতে ২৫ভাগ বনায়ন প্রয়োজন। কিন্তু বাংলাদেশে রয়েছে মাত্র সাড়ে ১৫ ভাগ। গাছ বাঁচিয়ে নগরায়ন করার উপরে তাগিদ দেন বক্তারা।

তারা আরো বলেন, চীন, ইসরাইলসহ বিশে^র নানা দেশে এখন বন সংরক্ষণে সব থেকে বেশী গুরুত্ব দিচ্ছে। কারন বন না থাকলে পৃথিবী উপদপ্ত হয়ে পড়বে। ইতোমধ্যে প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা দেয়া শুরু করেছে বলে উল্লেখ করেন তারা। পৃথিবীর সব থেকে বড় জঙ্গল হচ্ছে আমাজান। সেই আমাজান জঙ্গলও কমতে শুরু করেছে। প্রায় বছরই আগুনে পুড়ছে ঐ বন। এখন সময় এসেছে পৃথিবীকে টিকিয়ে রাখতে এবং প্রানীকুলকে বাঁচাচে বেশী বেশী বৃক্ষ রোপনের কোন বিকল্প নাই বলে উল্লেখ করেন তারা।

প্রধান অতিথি বলেন, বাহিরে থেকে ঘন বন মনে হলেও ভিতরে ফাঁকা হয়ে পড়েছে। অসাধু ও চোরাই কারবারীরা বন কেটে উজার করছে। এর নেতিবাচক প্রভাব ইতিমধ্যে দেশে ও বিশে^ পড়তে শুরু করেছে। অসময়ে শীত, বৃষ্টি এবং খড়া দেখা যাচ্ছে। সেইসাথে ঘটছে ঝড়, জলোচ্ছাস ও টর্নেডোর মত মারাত্মক সব দূর্যোগ। এ অবস্থা থেকে দেশকে এবং দেশের মানুষকে বাঁচাতে সরকার বৃক্ষরোপনের জন্য অনেক প্রকল্প হাতে নিয়েছে। প্রতি বছরই লক্ষ লক্ষ গাছ দেশে রোপন করা হচ্ছে।

তি আরো বলেন, শুধু সরকারীভাবে গাছ রোপন করলে এর সমাধান হবেনা। তিনি ব্যক্তি পর্যায়ে গাছ লাগানোর পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, বিগত করোনাকালীন সময়ে হাজার হাজার টাকা দিয়ে এক সিলিন্ডার গ্যাস ক্রয় করে মানুষ জীবন বাঁচানোর চেষ্টা করেছে। সে সময়ে সবাই বলে ছিলেন আর নয় গাছ কর্তন। এখন থেকে সবাই বাড়ির আঙ্গিনায়, চারিপার্শে এবং পতিত জমিতে গাছ লাগাবো। কিন্তু সময়ের বিবর্তনে মানুষ সে কথা ভূলে আবারও প্রয়োজন ও অপ্রয়োজনে গাছ কেটে উজার করছে বলে জানান তিনি।

পরিবেশ রক্ষায় সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বন ও গাছের প্রয়োজন আছে, এ জাতীয় প্রচার প্রচারণা চালাতে হবে। সেইসাথে ব্যক্তিগত ভাবে এবং খুব প্রয়োজন না হলে গাছ নষ্ট করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান। সেইসাথে গছে কাটলে সেখানে সাথে সাথে আরেকটি গাছের চারা রোপনের কথা বলেন প্রধান অতিথি।