যে নারী রাঁধতে জানে না তাকে বিয়ে করো না: ধর্মযাজক

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

নাইজেরিয়ার সবচেয়ে প্রভাবশালী ও সম্মানিত একজন ধর্মযাজক এনোক আদেবোয়ে, তিনি যখন কোন বক্তব্য দেন সেটি শোনে না এমন কোনও মানুষ সে দেশে নেই। খুব কমই আছে যারা তাঁকে মানে না।

কিন্তু সম্প্রতি তাঁর এক বক্তব্য নিয়ে চলছে ব্যাপক তোলপাড়।

তাঁর বক্তব্য ঘিরে যে নানা ধরনের প্রতিক্রিয়া চলছে তা বিবিসি ট্রেন্ডিং এর প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ।

গত কদিন ধরে ইউটিউবের এক ভিডিও যেটি কিনা প্রায় এক বছর আগে পোস্ট করা হয়েছিল, সেটি নিয়ে নাইজেরিয়ায় চলছে ব্যাপক আলোচনা।

অবিবাহিতদের বিয়ে সংক্রান্ত পরামর্শ দিচ্ছিলেন এই ধর্মযাজক- আর বিতর্কের শুরু এখান থেকেই। পরামর্শের কয়টি লাইন নিয়ে সামাজিক মাধ্যম উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।

“এমন নারীকে বিয়ে করো না যে রাঁধতে জানে না। যে নারী রাঁধতে জানে না সে ভালো স্ত্রী হবে না”-বলেছিলেন ধর্মযাজক আদেবোয়ে।

তবে তিনি নারীদের উদ্দেশ্যেও বলেছিলেন –“চাকরি নেই এমন কোন পুরুষকে বিয়ে করো না। নিজ ঘরের জন্যই পুরুষের কাজ করতে হবে, অন্য কিছুর জন্য নয়”।

nigeria_pastor_anoch_adeboye

এই বক্তব্যের ভিডিওটি কে প্রথম শেয়ার করেছিল এবং এটি কেন ভাইরাল হয়েছে সেই বিষয়টি স্পষ্ট নয়।

কিন্তু সপ্তাহজুড়ে এটাই বড় আলোচনার বিষয় এবং এ নিয়ে ত্রিশ হাজারেরও বেশি টুইট হয়েছে।

ধর্মযাজকের বক্তব্যের পক্ষে-বিপক্ষে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া উঠে এসেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

অনেক নাইজেরিয়ান মনে করছেন এটা নারীকে দমিয়ে রাখার যে পুরনো ধ্যান-ধারণার বিষয়কে উস্কে দেওয়ার মতো বক্তব্য।

নাইজেরিয়া এমন এক দেশ যেখানে ধর্মীয় আচার-আচরণ দৈনন্দিন জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এমনকি দেশটির আইনি বিধি-নিষেধেও ধর্মীয় প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।

টোকে মাকিনওয়া নামে একজন নারী টুইট করেছেন এই বলে যে “ধর্মযাজকের বক্তব্য ফেলে দেয়ার মতো নয়, নারীদের জন্য তিনি যেটি বলেছেন সেটি অবশ্যই মাথায় রাখা প্রয়োজন”।

অন্যদিকে কিটস নামে আরেকজন লিখেছেন “আমাদের মায়েরা যে সামাজিক আচার আচরণ মেনে চলতো, সেটি আমরা বদলানোর চেষ্টা করছি”।

আমারা নামে আরেকজনের মন্তব্য এমন “আমার মনে হয় এখানকার বেশিরভাগ নারীই স্বামীর জন্য রান্না করেন। কিন্তু তারা সেটা তাদের দায়িত্ব ভেবে করেন না এটাই তারা বলতে চাইছেন”।

যে নারী রাঁধতে জানে না তাকে বিয়ে করো না: ধর্মযাজক

নাইজেরিয়ায় প্রায় ৪৮ শতাংশ নারী এখন কর্মজীবী। যেটি কিনা যুক্তরাষ্ট্র বা যুক্তরাজ্যের(৫৬শতাংশ) তুলনায় খুব বেশি কম নয়।

ঐতিহ্যগত বিষয় আর আধুনিক জীবন যাপনের মধ্যে যে ব্যবধান সেটার মধ্যে বোধহয় পড়ে গেছেন নাইজেরিয়ার নারীরা।

তবে যারা এই ধর্মযাজককে চোখ বন্ধ করে অনুসরণ করেন তারা বলছেন ঈশ্বরের মতো এমন ব্যক্তিকে নিয়ে সমালোচনা করা ঠিক নয়।