মেধাবিদের মুখে হাসি ফোটালেন পুলিশ কর্মকর্তা শ্যামল

নাটোর প্রতিনিধি
নাটোরের দুই মেধাবি তুষার আলী এবং আল আমনি হোসেন এর মুখে মুখে হাসি ফোটালেন ঢাকা মেট্রো পলিটন পুলিশের ডেপুটি কমিশনার প্রশাসন (অর্থ) ও নাটোরের সাবেক পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার মুর্খাজি।

সোমবার সকালে স্থানীয় একটি পত্রিকা অফিসে শ্যামল কুমার মুর্খাজির প্রেরিত বইগুলো তুলে দেন সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি, নাটোর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও দৈনিক উত্তর কণ্ঠ পত্রিকার সম্পাদক রেজাউল করিম রেজা।

এসময় নাটোর প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক দুলাল সরকার, নাটোর টিভি রিপোর্টাস ইউনিটির সভাপতি বাপ্পি লাহীড়ি, মাছরাঙা টেলিভিশনের নাটোর প্রতিনিধি মাহবুব হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

নাটোর সদর উপজেলার ছাত্রনী দিয়ারগ্রামের মৃত আব্দুস সামাদের ছেলে আল আমিন হোসেন। পিতা মারা গেছেন অনেক আগেই। মা ও ভাইয়ের সংসার তার। আল আমিন হোসেনে লেখাপড়ার খরচ যোগাড় দেন তার মা মোরজিনা বেগম। এবার সে ছাতনী উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ন হয়। এরপর নাটোর সরকারী এনএস কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হলেও বইয়ের অভাবে একমাস ধরে ক্লাশ করতে পারছিল না আল আমিন হোসেন।

অপর একজন তুষার আলী। নাটোর সদর উপজেলার ছাতনী ভাটডাড়া গ্রামের দিনমুজুর রাজু আহমেদ এর ছেলে। এবার সে ছাতনী উচ্চ বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ন হয়। পরে নাটোরের সরকারী এনএস কলেজে একাদশ শ্রেণীতে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয় সে।

কিন্তু দিনমুজুর পিতার অভাবের সংসারে ছেলেকে বই কিনে দেয়ার সমর্থ না থাকায় বই ছাড়াই তুষারকেও একমাস ধরে ক্লাশ করতে হচ্ছিল। অবশেষে স্থানীয় সাংবাদিকরা নাটোরের সাবেক পুলিশ সুপার এবং বর্তমানে ডিএমপির প্রশাসন অর্থ শ্যামল কুমার মুর্খাজির সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ওই দুই শিক্ষার্থীদের জন্য বইয়ের ব্যবস্থা করে দেন।

সোমবার সকালে স্থানীয় একটি পত্রিকা অফিসে শ্যামল কুমার মুর্খাজির প্রেরিত বইগুলো দুই শিক্ষার্থী তুষার আলী এবং আল আমিন হোসেনের হাতে তুলে দেয়া হয়। দীর্ঘ একমাস পর বই পেয়ে খুশি তারা দুইজন।

শিক্ষার্থী আল আমিন হোসেন বলেন, অভাবের সংসারে একমাত্র উপার্জনশীল ব্যাক্তি মা মোরজিনা বেগম তার পড়াশুনার খরচ চালান। কিন্তু টাকার অভাবে বই কিনতে পারছিলাম না। অবশেষে নতুন বই হাতে পেয়ে খুব খুশি লাগছে। আগামী দিনে পড়াশুনা করে আরো ভালফলাফল করতে পারি।

আরেক শিক্ষার্থী তুষার আলী আবেগ আপ্লুত হয়ে বলেন, যিনি আমাদের জন্য বইগুলো দিয়ে সহযোগিতা করলেন তার কাছে চিরজীবন কৃতজ্ঞ থাকবো। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।

এক প্রতিক্রয়ায় পুলিশ কর্মকর্তা শ্যামল কুমার মুর্খাজি বলেন, আমাদের চারপাশে অনেক গরীব অসহায় মানুষ রয়েছে। মেধাবি হওয়ার পরও অনেকে অর্থিক অনটনে উচ্চ শিক্ষার দ্বারপ্রান্তে পৌছাতে পারে না। আগামী দিনে যে কোন ধরনের সহযোগিতা থাকবে অন্য শিক্ষার্থী এবং অসহায় মানুষদের জন্য।

 

স/আ