মিসর ও সৌদি আরবের সঙ্গে ‘গভীর সম্পর্ক’ চায় তুরস্ক

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগান বলেছেন, আমরা মধ্যপ্রাচ্যের দেশ মিসর ও সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের চেষ্টা করব। আঞ্চলিক দেশগুলোর সঙ্গে দূরত্ব দূর করতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

তুরস্কের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন টার্কিশ পাবলিক ব্রডকাস্টারে (টিআরটি) এক ভাষণে এরদোগান এসব কথা বলেন। খবর ডেইলি সাবাহর।

এরদোগান বলেন, উপসাগরীয় দেশ ও আমাদের মধ্যে সহযোগিতার উল্লেখযোগ্য সম্ভাবনা রয়েছে।আমাদের অর্থনীতি একে অন্যের সঙ্গে পরিপূরক। পারস্পরিক সুবিধার ওপর ভিত্তি করে নতুন সহযোগিতা প্রকল্পে আমাদের যৌথ বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে।

গত সপ্তাহে সংযুক্ত আরব আমিরাতের যুবরাজ মুহাম্মদ বিন জায়েদ (এমবিজেড) তুরস্ক সফর করেছেন। ২০১২ সালের পর আমিরাতের ডি ফ্যাক্টো নেতা ও দেশটির পররাষ্ট্রনীতির নির্ধারক এমবিজেডের এটি ছিল প্রথম আঙ্কারা সফর। দুই দেশই যে তাদের সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়াতে আগ্রহী, সেটি এ সফরের মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছে।

তুরস্ক এ সফরকে ‘নতুন যুগের শুরু’ হিসেবে দেখছে। অন্যদিকে এ সফর শুধু আরব আমিরাত নয়, আরব দেশগুলোর সঙ্গে তুরস্কের সম্পর্ককে গতি দেবে বলে ধারণা আবুধাবির সংবাদমাধ্যমগুলোর।

এমবিজেডের আঙ্কারা সফরে বাণিজ্য, জ্বালানি ও পরিবেশ সম্পর্কিত বেশ কিছু চুক্তি সই হয়। একই সঙ্গে আরব আমিরাত তুরস্কে বিনিয়োগের জন্য ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দ করে।

আমিরাতের যুবরাজের আঙ্কারা সফরের পরিপ্রেক্ষিতে এরদোগানও আবুধাবি সফরের পরিকল্পনা করছেন। তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, আমি আগামী ফেব্রুয়ারিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পরিকল্পনা করছি। আমি যাওয়ার আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার (এমটিটি) প্রধান আমিরাত সফর করবেন। এ সফরের জন্য প্রস্তুতি থাকবে। এর পর ফেব্রুয়ারিতে আমি আশা করছি একটি বিশাল প্রতিনিধি দল নিয়ে আমিরাতে যাব এবং আমরা কিছু শক্তিশালী পদক্ষেপ নেব।

এরদোগান বলেন, এসব সফরের মাধ্যমে আমাদের সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে।

তুর্কি প্রেসিডেন্ট জানান, বাহরাইনের কর্মকর্তারাও তুরস্ক সফরের আগ্রহ দেখিয়েছেন।

তুরস্ক ও আরব আমিরাত মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক সংঘাতে একে অপরের প্রতিপক্ষ হিসেবে এতদিন মুখোমুখি অবস্থানে ছিল। লিবিয়ায় প্রক্সি যুদ্ধ এবং উপসাগর ও পূর্ব ভূমধ্যসাগর নিয়ে তাদের মতবিরোধ ছিল প্রকাশ্যে। এ ছাড়া মিসরে মুসলিম ব্রাদারহুডকে তুরস্ক প্রকাশ্যে সমর্থন দিলে এ অঞ্চলের অধিকাংশ দেশ নাখোশ হয়। কারণ সংযুক্ত আরব আমিরাত ও আরব দেশগুলো মুসলিম ব্রাদারহুডকে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি মনে করে।

এদিকে ২০১৬ সালে ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানে অর্থায়নের জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতকে দায়ী করে তুরস্ক। এর পর থেকে দুই দেশের সম্পর্কে চিড় ধরে।

 

সুত্রঃ যুগান্তর