বিশ্বনেতাদের কাছে উইঘুর মুসলিমদের আহ্বান

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্কঃ

জিনজিয়াং (পূর্ব তুর্কিস্তান) প্রদেশের মুসলিম জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে চীনের মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে ইস্তাম্বুলের উইঘুর মুসলিম জনগোষ্ঠী। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের আহ্বানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানায় তারা।

পূর্ব তুর্কিস্তান নিউজ এজেন্সির পরিচালক আবদুল ওয়ারেস আলজাজিরা মুবাশিরকে জানান, এখানকার লাখ লাখ মানুষ বিশেষায়িত ক্যাম্পে রয়েছে। করোনার বিস্তারের অজুহাতে তাদের অনাহারে, ঘরবন্দি করে, যাতায়াতে বিধি-নিষেধ জারি এবং খাদ্য ও মানবিক সহায়তা বন্ধের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে হত্যার নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে।

এসময় পূর্ব তুর্কিস্তানবাসীর ভয়াবহ পরিস্থিতি হৃদয়বিদারক দৃশ্যের কথা তুলে ধরেন।

পূর্ব তুর্কিস্তান ইউনিয়ন অব স্কলার্স এর সদস্য আবদুস সালাম কারিম বলেন, ‘আমরা মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচারের মূল্যবোধ সম্পর্কে কথা বলতে পারি না। চীনের মানবাধিকার লঙ্ঘন বিষয়ক উচ্চপরিষদের প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে প্রমাণিত। মূলত তুর্কিস্তানের জনগণের অধিকাংশ মুসলিম। দীর্ঘদিন যাবত মানবিক পরিচয় প্রতিষ্ঠায় নানা ধরনের নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার তারা। সেখানকার যেকোনো ধরনের ইসলামী রূপ চীনের নিপীড়নের শিকার হয়। ’

বিশ্বনেতৃবৃন্দকে নিপীড়িত জনগণের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বনেতাদের পূর্ব তুর্কিস্তানবাসীর পাশে দাড়িয়ে এই ঘৃণ্য অপরাধ বন্ধের দাবি জানাই। আন্তর্জাতিক সংস্থা ও জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে পূর্বতুর্কিস্তানে গণহত্যা, সাংস্কৃতিক ও জাতিগত নির্মূল প্রতিরোধে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাই।

করোনা মহামারি প্রতিরোধের অজুহাতে খাদ্য ও ওষুধ ছাড়াই ঘুরবন্দি অনেক উইঘুর মুসলিমকে হত্যার অভিযোগ করেছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন। এ হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘#StarvationGenocide’ ‘#UyghurGenocide’ চীনের গণহত্যা বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়। জাতিগত নিপীড়ন বন্ধে আন্তর্জাতিক সংস্থাকে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানায় মানবাধিকার কর্মীরা।

এর আগে গত ১ সেপ্টেম্বর শিনজিয়ান প্রদেশের উইঘুর মুসলমানদের ওপর চীনের ‘গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন’ নিয়ে এক দীর্ঘ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। অবশ্য বেইজিং এটিকে পশ্চিমা শক্তির সাজানো ‘প্রহসন’ বলে অভিহিত করেছে। প্রতিবেদনে উইঘুর মুসলিম এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু জাতির বিরুদ্ধে মারাত্মক নিপীড়নের অভিযোগ তুলে ধরা হয়। সম্প্রতি এক বিবৃতিতে উইঘুরদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধের আহ্বান জাতিসংঘের ৪০ বিশেষজ্ঞ। তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে লঙ্ঘনের বিষয়টি উপেক্ষা বা অন্ধ দৃষ্টি না দেওয়া আহ্বান জানান।

চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় জিনজিয়াংয়ের শিবিরগুলোতে ১০ লাখের বেশি মানুষকে আটক রাখা হয়েছে বলে মনে করা হয়। সেখানে ১ কোটি ২০ লাখের বেশি উইঘুরের বসবাস, যাদের অধিকাংশই মুসলিম। ১৯৪৯ সাল থেকে বেইজিং পূর্ব তুর্কিস্তানের অঞ্চলটি নিয়ন্ত্রণ করেছে। তা মূলত উইঘুর তুর্কি মুসলিমদের আবাসভূমি। পরবর্তীতে তা জিনজিয়াং এলাকা হিসেবে পরিচিত।

 

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ