বাগাতিপাড়া প্রতিনিধি:
চলতি মওসুমে নাটোরের বাগাতিপাড়ায় পাট বীজ বপন করে কৃষকরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। কৃষকদের দাবি, পাট অধিদপ্তর থেকে বিনামূল্যে সরবরাহ করা বিএডিসি’র বীজ বপন করে তারা এ ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছেন।
মাত্র দুই থেকে তিন ফুট লম্বা চারা গাছেই ফুল আসায় পাট গাছগুলো বড় না হওয়া এবং আঁশ না পাওয়ার আশংকা রয়েছে। এতে তারা আর্থিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়বেন বলে জানিয়েছেন।
তবে জেলা পাট উন্নয়ন কর্মকর্তার দাবি, পাঁচ শতাংশ গাছে ফুল দেখা যেতে পারে, এতে পাটের কোন ক্ষতি হবেনা।
জানা গেছে, পাট চাষে উৎসাহিত করতে সরকারি উদ্যোগে কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে এই পাট বীজ সরবরাহ করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে জামনগর ইউনিয়নে তালিকা করে পাট চাষে আগ্রহী ৬৩০ জন চাষীর মাঝে ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে এক কেজি হারে বিনামূল্যে বিএডিসির পাট বীজের প্যাকেট বিতরণ করা হয়েছে।
কৃষকরা জানান, বিনামূল্যে পাওয়া এসব পাট বীজ জমিতে বপনের পর চারা গাছ এক থেকে দুই ফুট লম্বা হওয়ার পর বেশির ভাগ গাছে ফুল ফুটে গেছে। কিছুদিনের মধ্যে এসব ফুল ফলে পরিনত হবে। গাছগুলোও আর বড় এবং মোটা হবে না। ফলে এবছর পাট ঘরে তুলতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। কয়েক বছরের পুরোনো বীজ হলে এমন ঘটনা হয়ে থাকে বলে তাদের ধারনা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাঁশবাড়িয়া গ্রামের রুবেল আলী, খালেক উদ্দিন, রান্টু আলী, রফিকুল ইসলাম, জনাব আলী, জামনগর গ্রামের নান্টু মিয়া, জিয়ারুল ইসলাম, লালন, আব্দুল মান্নান এবং রহিমানপুর গ্রামের ইয়ারব হোসেন, রফিকুল ইসলাম, মাজেদুল ইসলামসহ পাট অধিদপ্তর থেকে বিনামূল্যে বীজ পাওয়া প্রায় সকল চাষীর জমিতে এই অবস্থা দেখা দিয়েছে।
বাঁশবাড়িয়া গ্রামের বাবুল আক্তার বলেন, এই বছর জামনগর ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে বিনামূল্যে পাওয়া পাট বীজ এক বিঘা জমিতে বপন করেছেন। চারা ভালো গজিয়েছিল। নিয়মিত সার-ঔষধ ও দুইবার নিড়ানী দিয়েছেন। গাছগুলো প্রায় দুই থেকে আড়াই ফুট লম্বা হয়েছে। কিন্তু প্রায় ৭০ শতাংশ গাছে ফুল বের হয়ে গেছে। সেজন্য তিনি পরিচর্যা বন্ধ করে দিয়েছেন। ওই জমিতে এ পর্যন্ত তার প্রায় ছয় হাজার টাকা খরচ হয়েছে।
একদিকে তিনি চলতি মওসুমের আবাদ বঞ্চিত হচ্ছেন, অপর দিকে খরচের টাকা ফিরে না পাওয়ায় তিনি ক্ষতিগ্রস্থ হবেন বলে দাবি করেছেন।
এব্যপারে জামনগর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস বলেন, পাট অধিদপ্তরের বীজ শুধু তাদের পরিষদের মাধ্যমে কৃষকদের মাঝে বিতরণ করেছেন। ফলে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ হলে তার দায়ভার পাট অধিদপ্তরের।
এদিকে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোমরেজ আলী মাঠ পরিদর্শন করে কিছু গাছে ফুল আশার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ ব্যাপারে নাটোর জেলা পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা অজিৎ কুমার বলেন, বপনকৃত পাটের পাঁচ শতাংশ গাছে ফুল দেখা যেতে পারে, এতে পাটের কোন ক্ষতি হবে না। তাছাড়া কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হলে অবশ্যই বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে এবং এ ধরনের অভিযোগ পেলে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি জানান।
স/অ
আরো পড়ুন …
স্বেচ্ছায় নমুনা দিলেন জ্বর নিয়ে গাজীপুর থেকে ফেরা বাগাতিপাড়ার যুবক