বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক হোক চিরদিনের : ড. মশিউর রহমান

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক:

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেছেন, ‘বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু হিসেবে আমাদের স্বাধীনতাসংগ্রামে ভারতের অবদান চিরস্মরণীয়। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় নিরস্ত্র বাঙালির মুক্তি কামনার আন্দোলনে প্রতিটি মানুষকে দ্রোহী, সাহসী এবং প্রশিক্ষণসমেত এক বীর যোদ্ধা করে তুলতে ভারত যে সহায়তা করেছে তা উপমহাদেশের গণতন্ত্রের বাতায়নকে উজ্জীবিত করেছে। ’

আজ রবিবার রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরে কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে বাংলাদেশ স্বাধীনতা ফাউন্ডেশন মৈত্রী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনাসভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপকের বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপাচার্য ড. মশিউর রহমান।

তিনি বলেন, ‘মানব মুক্তির মহাসংগ্রাম ভারত-বাংলাদেশের অটুট বন্ধুত্ব ও আস্থা প্রতিষ্ঠা করেছে।

সেই ধারাবাহিকতায় আজও ভারত-বাংলাদেশ সম্মিলিত হয়ে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের জন্য অব্যাহত কাজ করে যাচ্ছে। এই সম্পর্ক চিরকালীন। আর সংগ্রাম ও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে জঙ্গিবাদ, ধর্মান্ধতা, সাম্প্রদায়িক আচরণ ও সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে। ’

“বাঙালির স্বাধীনতার স্বপ্ন হাজার বছরের’ উল্লেখ করে উপাচার্য বলেন, ‘এ অঞ্চলে নানাবিধ কৃষক আন্দোলন বঞ্চনাবোধ থেকে গড়ে উঠেছে ঠিকই, কিন্তু ন্যায্য দাবি থাকা সত্ত্বেও সেসব আন্দোলনের সম্পূর্ণ সুফল কৃষক সমাজ কখনোই পরিপূর্ণভাবে আদায় করতে পারেনি। এরূপ একটি কৃষক সমাজের বাস্তবতাকে অনুধাবন করেন বঙ্গবন্ধু। কৃষি অর্থনীতিনির্ভর এই সমাজের আমূল পরিবর্তন ও সংস্কারের লক্ষ্যকে সামনে রেখে তিনি বাঙালির জন্য স্বাধীন ভূখণ্ড ‘বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে অবতীর্ণ হন। ”

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর লড়াইয়ে প্রধান অবলম্বন ছিল বাংলার কৃষক-শ্রমিক-মুটে-মজুর-ছাত্রসহ বাংলার আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের পর বাঙালি সত্যিকার অর্থেই প্রস্তুতি রেখেছে জনযুদ্ধের। বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি হোক। কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানি সামরিক সরকার গণতান্ত্রিক পথে না হেঁটে অস্ত্রের ভাষা প্রয়োগ করতে চাইল। ২৫ মার্চ রাতে নিরস্ত্র, নিরীহ বাঙালির ওপর নির্লজ্জভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ল। হত্যা করল অগণিত মানুষকে। ’

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য আরো বলেন, ‘বাঙালির মুক্তির সংগ্রামের কঠিন-কঠোর ৯ মাসের সশস্ত্র জনযুদ্ধে গ্রামবাংলার সাধারণ মানুষ পাকিস্তানি বাহিনীকে পরাস্ত করার লক্ষ্যে গেরিলা যুদ্ধ আত্মস্থ করল। যে তরুণ-যুবক-পরিণত বয়সের মানুষ যুদ্ধ বা অস্ত্র চালাতে জানত না, সে হয়ে উঠল গেরিলা যোদ্ধা। মুক্তির আকাঙ্ক্ষায় জাগ্রত কৃষক-শ্রমিক-জনতা যে সম্মিলিত জনযুদ্ধ গড়ে তুলল তার কাছে পরাভূত হলো পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী। ’

বাংলাদেশ স্বাধীনতা ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক বিচারপতি মমতাজ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা, আলোচক ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য প্রফেসর ডা. মো. শহীদুল্লাহ সিকদার, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সাইদুর রহমান সজল প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ স্বাধীনতা ফাউন্ডেশনের সদস্যসচিব নারায়ণ সাহা মনি।

সূত্র; কালের কণ্ঠ