ফেলপসের আকাশযাত্রা চলছেই

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক :

সর্বকালের সেরা অলিম্পিয়ানে তাঁর তাও দু-একজন প্রতিদ্বন্দ্বী থাকতে পারেন। কিন্তু সফলতম অলিম্পিয়ান হিসেবে একেবারে অপ্রতিদ্বন্দ্বী মাইকেল ফেলপস। রিওতে এসেছেন ২২ পদক জয়ের রেকর্ড নিয়ে, যার মধ্যে ১৮টিই সোনার। পরশু পুলে নেমে নিজের সেই রেকর্ড উত্তরপ্রজন্মের আরেকটু ধরাছোঁয়ার বাইরে নিয়ে যান যুক্তরাষ্ট্রের এই সাঁতারু। ছেলেদের ৪*১০০ মিটার ফ্রিস্টাইল রিলেতে সোনা জিতে। তাতে অলিম্পিকে ফেলপসের মোট পদক হয় ২৩টি, এর মধ্যে সোনার পদক ১৯টি।

অলিম্পিকের পুলে প্রথম নামেন ২০০০ সালে। পদক জিততে পারেননি ১৫ বছরের ফেলপস। কিন্তু পরের তিন অলিম্পিকে সুইমিংপুলের নীল জলে রীতিমতো ঝড় তোলেন তিনি। প্রতিনিয়ত রেকর্ড ভাঙা-গড়ার খেলায় এমনভাবে মাতেন যে, জলমানব থেকে জলদানব যেন হয়ে ওঠেন। তবু এবারের অলিম্পিক সেই ফেলপসের কাছে অন্য রকম। বয়স ৩১ বছর হয়ে গেছে। এরই মধ্যে দুইবার ফিরেছেন অবসর থেকে। অনেক দিন ধরে প্রত্যাশিত ফর্মে না থাকায় এই রিলে দলে তাঁর থাকাও ছিল অনিশ্চিত। কিন্তু রিওর পুলে যখন ঝাঁপ দিলেন ফেলপস, দেখা মেলে সেই চ্যাম্পিয়নেরই। ২০০৯ সালের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের পর তাই  ৪*১০০ মিটার ফ্রিস্টাইল রিলেতে সোনা জেতে তাঁর দেশ যুক্তরাষ্ট্র।

‘যখন ব্লকে ছিলাম, মনে হচ্ছিল আমার হৃৎপণ্ডের বিস্ফোরণ হয়ে সেটি বুকের বাইরে বেরিয়ে আসবে। এতটাই উত্তেজিত ছিলাম আমি; এতটাই রোমাঞ্চিত’—সোনা জয়ের পর বলেছেন ফেলপস। ছিলেন দ্বিতীয় লেগে। সেখানে নিজের সাঁতারটুকুন শেষ করেন ৪৭.১২ সেকেন্ডে। ফ্রিস্টাইল ফেলপসের পছন্দের ইভেন্ট না। কিন্তু পরশু সেখানে যে সময় নেন, সেটি তাঁর ক্যারিয়ার সেরা। সোনা জয়ের জন্য কতটা মুখিয়ে ছিলেন, তাতেই তো বোঝা যায়। কোচ বব বোম্যান ভীষণ উচ্ছ্বসিত ফেলপসের সাঁতারে। আলাদা করে বলেছেন তিনি ৫০ মিটার পর গিয়ে শিষ্যের টার্নের কথা, ‘জলের নিচে সর্বকালের সেরা টার্নই হয়তো ছিল সেটি। অবিশ্বাস্য এক ব্যাপার। ওর কাছ থেকে যা যা চেয়েছি, ও তা-ই করেছে। এ কারণেই মাইকেলকে সুযোগটা দিতেই হতো।’ শেষ বাক্যটি ইঙ্গিত করছে ফেলপসের রিলে দলে না থাকার অনিশ্চয়তাকেই। তবে শেষ পর্যন্ত চতুষ্টয়ের মধ্যে থেকে ২০০৯ সালের পর কোনো বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় এই ইভেন্টে যুক্তরাষ্ট্রকে ঠিকই সোনা এনে দেন তিনি। সোনা জয়ের প্রতিক্রিয়ায় সেটিও উল্লেখ করেন ফেলপস, ‘আমার শেষ ফ্রিস্টাইল রিলেতে সোনা জেতা দারুণ ব্যাপার। অবশেষে আমরা এটি ফেরত আনলাম।’

গ্রেট ব্রিটেন আবার সাঁতারে সোনা জেতেনি সর্বশেষ ছয় অলিম্পিকে। ১৯৮৮ সালে আদ্রিয়ান মুরহাউস ছিলেন সর্বশেষ। পরশু ব্রিটেনের ২৮ বছরের অপেক্ষা ঘোচালেন অ্যাডাম পিটি। ১০০ মিটার ব্রেস্টস্ট্রোকে সোনা জিতেছেন ৫৭.১৩ সেকেন্ডে; নিজের গড়া বিশ্ব রেকর্ড নতুন করে লিখিয়ে। ‘এই সোনার পদকের মূল্য আমার কাছে অনেক। নিজের দেশের জন্য এটি করেছি আমি’—উচ্ছ্বসিত পিটির প্রতিক্রিয়া। এ ছাড়া পরশু মেয়েদের ৪০০ মিটার ফ্রিস্টাইলে যুক্তরাষ্ট্রের কেটি লেডেকি এবং ১০০ মিটাৎর বাটারফ্লাইতে সুইডেনের সারা সসট্রম জেতেন সোনার পদক। এএফপি

সূত্র : কালের কণ্ঠ