প্রয়োজনে শিল্পী আকবরকে বিদেশ নিয়ে যাবো : জায়েদ খান

কণ্ঠশিল্পী আকবরের অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে রয়েছেন। এ সময় তার পাশে থেকে সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর রাখছেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান। এমনটাই কালের কণ্ঠকে জানিয়েছেন গায়কের স্ত্রী কানিজ ফাতেমা সীমা। শরীরের বিভিন্ন ধরনের জটিলতা নিয়ে গত সোমবার আকবরকে রাজধানীর বঙ্গন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করা হয়।

সীমা বলেন, হানিফ সংকেত স্যার সব সময়ই খোঁজ নিচ্ছেন। এছাড়াও ডিপজল ভাই, জায়েদ খান ভাইয়ের মাধ্যমে খোঁজ খবর রাখছেন। জায়েদ খান ভাই ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলছেন, যোগাযোগ করছেন। বলা যায় উনিই এই সময় পাশে রয়েছেন।

আকবরের শারীরিক অবস্থার হালনাগাদ খবর জানতে সোমবার যোগাযোগ করা হয় জায়েদ খানের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমরা চেয়েছিলাম এই শিলীকে চিকিৎসার জন্য ভারতে নিয়ে যেতে। কিন্তু সেখানে নিয়ে গিয়ে সমাধান হবে এমনটা নিশ্চিত করছেন না চিকিৎকেরা। হাসপাতালে চিকিৎকেরা ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। ইতোমধ্যে ২৪ ঘণ্টা অতিক্রম হয়েছে। বাকি সময় পর বোঝা যাবে।

জায়েদ খান বলেন, ডিপজল ভাই পাশে রয়েছেন আকবরের। আমি নিজের মতো করে খোঁজ রাখছি নিয়মিত। ইতোমধ্যে খোঁজ নিয়েছি শিল্পীকে কোথাও নিয়ে চিকিৎসা করানো যায় কি না। করোনার এই কারণে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে জটিলতা রয়েছে যদিও, তারপরেও চেষ্টা করতে আমি প্রস্তুত। আমি সন্ধ্যায় ফের খবর নিতে যাবো। ডাক্তার সুনীল কুমার বিশ্বাসের নেতৃত্বে শিল্পী আকবরের চিকিৎসা তদারক করছেন।

ডায়াবেটিস ও কিডনিরোগসহ বিভিন্ন জটিলতায় আক্রান্ত কণ্ঠশিল্পী আকবরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় গত সোমবার। ঈদুল আজহার পর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। কোমর থেকে শরীরের নিচ পর্যন্ত অবশ হয়ে আছে। আগে থেকেই আকবর ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, এখন বেড়েছে। কিডনির সমস্যাও বেড়েছে। ইলেকট্রোলাইট নেমে গেছে। পায়ের রোগ বেড়েছে, কোনোভাবেই পা কাজ করছে না। সাড়ে তিন বছর থেকে ধাপে ধাপে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসা চলছে।

রাজধানীর মিরপুরের হারমান মেইনার স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়া আকবরের মেয়ে অথই ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমার আব্বুর অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক। ডাক্তার বলেছে যেকোনও সময় যা কিছু হয়ে যেতে পারে। সবাই আব্বুর জন‍্য বেশি বেশি দোয়া করবেন। আমরা যেন আব্বুকে তাড়াতাড়ি সুস্থ করে বাড়িতে নিয়ে যেতে পারি। আব্বু খুব কষ্ট পাচ্ছে।আল্লাহ তুমি আমার আব্বুর কষ্ট একটু কমিয়ে দাও।আব্বুকে তাড়াতাড়ি সুস্থ করে দাও। আমিন।’

যশোর শহরে রিকশা চালাতেন আকবর। খুলনার পাইকগাছায় জন্ম হলেও আকবরের বেড়ে ওঠা যশোরে। সেখানে টুকটাক গান করতেন। তবে গান নিয়ে ছোটবেলা থেকে হাতেখড়ি ছিল না। আকবরের ভরাট কণ্ঠের গানের কদর ছিল যশোর শহরে। সে কারণে স্টেজ শো হলে ডাক পেতেন। ২০০৩ সালে যশোর এম এম কলেজের একটি অনুষ্ঠানে গান গেয়েছিলেন আকবর। বাগেরহাটের একজন আকবরের গান শুনে মুগ্ধ হন। তিনি জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’তে চিঠি লেখেন আকবরকে নিয়ে। এরপর ‘ইত্যাদি’ কর্তৃপক্ষ আকবরের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ওই বছর ‘ইত্যাদিতে ‘একদিন পাখি উড়ে যাবে যে আকাশে’-কিশোর কুমারের এই গানটি গেয়ে রাতারাতি পরিচিতি পেয়ে যান আকবর।

পরিবার নিয়ে আকবর মিরপুর ১৩ নম্বরে থাকেন। তাঁর বড় মেয়ে আছিয়া আকবর অথই হারমান মেইনার স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী। ছেলে কামরুল ইসলাম ও মহরম থাকে গ্রামের বাড়ি যশোরে।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ