প্রতিবন্ধী মোস্তারী সংসারে সবার কাছে বোঝা !

ভোলাহাট (চাঁপাইনবাবগঞ্জ)প্রতিনিধি:
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার অবহেলিত ছোট্ট একটি উপজেলা ভোলাহাট। আর এ উপজেলার ৩নং দলদলী ইউনিয়নের মুশরীভুজার খাসপাড়া গ্রামের গরীব-অসহায় বাবা-মায়ের প্রতিবন্ধী নারী মোস্তারী খাতুন। মোস্তারীর ডান পা’টি না দেখলে বলাই যাবে না, সে একজন এক পায়ে ভর করে চলা প্রতিবন্ধী বালিকা। জন্ম নেয়ার পর একটি পাবিকলাঙ্ক। বাবা ৫বছর ও মা ১০বছর আগেই মারা গেছেন। দুনিয়ার মায়াময় সংসারের
কাছেও বড় বোঝা।

একমাত্র মোস্তারীর খালা রোকেয়া বেগম ওরফে ভুটন স্বামী আর ছেলেমেয়ে নিয়ে অভাব-অনটনের মধ্যেও বিকোলাঙ্ক মেয়েটিকে নিয়ে অতি কষ্টের মধ্যে দিনাতিপাত করছে। এর মধ্যে তার বিয়ের বয়স হলেও না পারছে বিয়ে দিতে আর না পারছে মেরে ফেলতে বা বাড়ী থেকে তাড়িয়ে দিতে। একমাত্র খালার কাছে যেনো মোস্তারী ‘শাখের করাত’ হওয়ার উপক্রম।

প্রতিবেদকের সাথে কথা বললে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলে, আমার মা নেই, বাবাও নেই। দুনিয়াতে বেঁচে থাকার অবলম্বন আমার একমাত্র খালা ভুটন। বাবা-মা মারা যাবার পর আমার যাবতীয় ভোরণ-পোষণের দায়-দায়িত্ব খালা করে আসছে। আমার একটি পা বিকোলাঙ্ক হওয়ায় সবাই আমাকে ভিন্ন চোখে দেখে।
আমার বিয়ের বয়স হলেও বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে আমার পঙ্গু পা’টি। সকলের অজান্তে আমার চেহারা-সুরত দেখে কেউ পছন্দ করলেও পরবর্তীতে পঙ্গু পা দেখে হওয়া বিয়ে থমকে দাঁড়ায়।

এ অবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে জন্মস্থান ভোলাহাটে অবস্থান করতে করতে বেকায়দায় পড়ে পেটের আহারের তাগিদে অনেক চিন্তাভাবনা করে পাড়ি জমায় ঢাকায়। সেখানে কয়েক বছর ধরে একটি কোম্পানীতে অল্প টাকায় চাকরী করি। এ অবস্থায় নিজে বুঝতে পারি, একজন ভাল ডাক্তারের কাছে গেলে স্বাভাবিক সুস্থ্য-সবল ভাল মানুষের মত চলাফেরা এবং সকলপ্রকার কাজ কর্ম করতে পারবো। তাই চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের স্বরণাপন্ন হলে
প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ডাক্তার আমাকে বলে তোমার পা একদম ভাল হয়ে যাবে কিন্তু দুই লাখ টাকা খরচ হবে চিকিৎসায়। ডাক্তারের কথা শুনে বেকায়দায় পরি আমি ও আমার খালা। এতোগুলো টাকা কিভাবে যোগাড় করবো।

যদি কোন সুহৃদয় ব্যক্তি তার হৃদয়ের ভালবাসায় আর্থিক সহায়তার হাত সু-প্রসারিত করেন। তাই আমার বাংলার সুহৃদয়বান মানুষের কাছে আকুল মিনতি এ অবস্থায় আমাকে নিরাস না করে এ হতভাগীনি মেয়েটিকে নীজের ভেবে আপনাদের কাছে জোড় দাবী, যেনো আর দশটা মেয়ের মত পা ভাল করে সকলের সাথে চলাফেরা তথা বাংলার একজন প্রকৃত বধু বা প্রকৃত বোন-মেয়ে হতে আপনাদের সহায়তার হাত প্রসারিত করে মানুষের মত মানুষ হয়ে বাঁচতে সহায়তা করুন।

কথায় বলে ‘মানুষ মানুষের জন্য, দশের লাঠি একের বোঝা’। সুহৃদয়বান ভাইয়েরা একটু গভীরভাবে
ভাবুনতো, আমি যদি আপনাদের নীজের কেউ হতাম, তাহলে কি আপনারা একটু ভালো নজরে দেখতেন না। আপনারা কি পারতেন নিজের বোন বা মেয়েকে এ অবস্থা দেখে নীরব থাকতে? বিকোলাঙ্ক মোস্তারীর কথায় বলতে গেলে ‘মানুষ মানুষের জন্য’ আসুন না আমরা একটি টগবগে বালিকাকে তার জীবনের আরো একধাপ এগিয়ে নিতে আর্থিক সহায়তার হাতটি সুপ্রসারিত করি।

বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রকৃত মানুষের মত মানুষ হয়ে দুনিয়ার এ সংসারের কারো বোঝা না হয়ে তার নিজের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য নিজ নিজ সহায়তার হাতটি সু-প্রসারিত করি। যেনো আমরা এ মর্তে সকলের কাছে
বুক ফুলিয়ে বলতে পারি, আমরাইু পারি কোন দেশের বিনা সহায়তায় পদ্মা সেতু তৈরী করতে। আমরাই পারি অন্যান্য দেশের ন্যায় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট তৈরী করে চালু করতে।

মোস্তারী আরো বলে, তাই বাংলার আনাচে-কানাচে থাকা আমার ভাইদের প্রতি বিশেষ কড়জোরে অনুরোধ, আমাকে স্বাধীন বাংলার একজন সৎ মানুষের বউ বা বাংলার বধু হতে তথা একজন প্রকৃত মানুষের মত মানুষ হতে সহায়তা করুন। অর্থিক সাহায্যে বিকাস নম্বর-০১৭৩৮-৩৪৫১৪৭।