পুলিশ আমাকে মারধর করে ধর্ষণের ঘটনায় স্বীকারোক্তি নিয়েছে: আদালতে সাদমান

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক: পুলিশ হয়রানি ও মারধর করে ধর্ষণের ঘটনায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদায় করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বনানীর দ্য রেইন ট্রি হোটেলে দুই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ মামলায় আসামি সাদমান সাকিব। রবিবার সকালে মামলার অভিযোগ গঠন করতে আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়। এক পর্যায়ে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে সাদমান এ অভিযোগ করেন।

সাদমান সাকিব বলেন, ‘আমি যে বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিলাম, সেটা স্বেচ্ছায় বা সজ্ঞানে দেইনি। পুলিশ আমাকে হয়রানি ও মারধর করে এ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবনন্দি আদায় করেছে। তাই এই জবানবন্দি প্রত্যাহারের জন্য আদালতে লিখিত আবেদন করেছি।’

পরবর্তীতের বিচারক বলেন, প্রত্যাহার পিটিশনটি মামলার নথিতে অন্তর্ভুক্ত করা হোক।

এদিকে, আজ (৯ জুলাই) এ মামলায় আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে সাফাত আহমেদসহ পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের দিন ধার্য ছিল। কিন্তু আসামিপক্ষের প্রস্তুতি না থাকায় বিচারক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ১৩ জুলাই নতুন দিন ধার্য করেন।

রবিবার ঢাকার ২ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের বিচারক শফিউল আজম নতুন এ দিন ধার্য করেন। আসামি নাঈম আশরাফের আইনজীবীর সময়ের আবেদনের পর বিচারক নতুন এ দিন নির্ধারণ করেন।

নাইম আশরাফের আইনজীবী খায়রুল ইসলাম লিটন আবেদনে উল্লেখ করেন, এই মামলার সব কাগজপত্র এখনও হাতে পাইনি। কাগজপত্র হাতে পাওয়ার পর প্রস্তুতির জন্য সময় প্রয়োজন। এছাড়াও অপর চার আসামির আইনজীবীরাও এই আবেদনের সম্মতি জানিয়ে বলেন, অভিযোগ গঠনের জন্য প্রস্তুতি নিতে পারিনি।

সব শেষে আইনজীবীদের উদ্দেশে বিচারক করেন, ‘মামলাটি খুবই স্পর্শকাতর। তাই সময় দেওয়া যায় না। তবে শেষ বারের মতো আমি আপনাদের সময় দিলাম। এ সময় ৫ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে তাদের জেল-হাজতে পাঠানো হয়।’

প্রসঙ্গত, গত ২৮ মার্চ রাতে বনানীর রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষণের শিকার হন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী। ঘটনার প্রায় ৪০ দিন পর গত ৬ মে তারা বনানী থানায় মামলা করেন। মামলায় সাফাত আহমেদ, সাদমান সাকিফ, নাঈম আশরাফ, সাফাতের গাড়ি চালক বিল্লাল হোসেন ও বডিগার্ড রহমত আলী ওরফে আজাদকে আসামি করা হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সব আসামিকে গ্রেফতার করেছে। তারা পুলিশি হেফাজতে রয়েছে।

গত ৮ জুন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ভিক্টিম সাপোর্ট সেন্টারের পরিদর্শক ইসমত আরা এমি ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে এ পাঁচ আমামির বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। ঢাকা মহানগর হাকিম দেলওয়ার হোসেন পুলিশের এ চার্জশিট গ্রহণ করেন। মামলার পাঁচ আসামি হলেন- আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদ, তার বন্ধু সাদমান সাকিফ, নাঈম আশরাফ, সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন ও দেহরক্ষী রহমত আলী।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী-২০০৩) এর ৯-ক/৩০ ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়। চার্জশিটে ৪৭ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। যাদের মধ্যে পুলিশ, দ্য রেইন ট্রি হোটেলের কর্মচারী, ডাক্তার,  পারিপার্শ্বিক ঘটনার সঙ্গে জড়িত কয়েকজন ব্যক্তি রয়েছেন।

জানা গেছে, মামলাটি আগামী ১৯ জুন (ফিক্সড ডেট) আদালতে উপস্থাপন করা হবে। ওইদিন আদালত মামলার বিচারের জন্য নারী ও শিশু অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হবে।

 

সূত্র: বাংলাট্রিবিউন